শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অধিকাংশ উদ্যোক্তাই ব্যাংক ঋণ পাননি -গভর্নর

প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে দেখা গেছে, গত এক দশকে আমাদের অর্থনৈতিক ইউনিটগুলো দ্বিগুণ হয়েছে। এসব ইউনিটের ৮০ শতাংশই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। এসব উদ্যোক্তার অধিকাংশই ব্যাংক ঋণ পাননি।
শনিবার ডেভেলপমেন্ট অব মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ (এমএসএমইএস) ইন বাংলাদেশ : শেয়ারিং এশিয়ান এক্সপেরিয়েন্স অ্যান্ড এমএসএমইএস ব্যাংকিং ফেয়ার’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এই উদ্যোক্তারা নিজের জমানো অর্থ ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করেছেন। আর্থিক খাতের দায়িত্ব এসব উদ্যোগগুলোকে ঋণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা করে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে সহযোগিতা করা। এক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের আরও বেশি করে সহযোগিতা করার ওপর জোর দেন তিনি।
ড. আতিউর রহমান বলেন, আমাদের বড়ই সৌভাগ্য রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, কৃষি, শিল্প ও রপ্তানিতে সর্বত্র নারীর দৃপ্ত পদচারণা দেখতে পাচ্ছি। তাই নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ব্যাংকিং খাত থেকেই সহযোগিতা দিচ্ছি। কারণ পৃথিবীর সেইসব দেশের উন্নয়ন টেকসই হয়েছে, যেখানে নারীর ক্ষমতায়ন ঘটেছে।
তিনি বলেন, আমাদের জনসংখ্যার বড় অংশই উদ্যমী ও তরুণ। এদের জন্য প্রয়োজন উদ্যমী কর্মসংযোগ, কর্মসুযোগ ও সৃজনশীল উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা। তাই কৃষি, এমএসএমইএস, নারী উদ্যোগ, সবুজ ও নানামাত্রিক অর্থায়নে ব্যাংক খাত সুযোগ করে দিয়েছে।
গভর্নর বলেন, দেশের মোট ক্রেডিট পোর্টফোলিওর ২৪ শতাংশ, মোট শ্রমশক্তির ২৫ শতাংশ, জিডিপির ৩২ শতাংশ, চাকরি-বাকরির ৪০ শতাংশ এবং শিল্প খাতে চাকরিতে ৮০ শতাংশ অবদান রাখছে এমএসএমই খাত, যার ফলে আমরা আমরা চাহিদা ও জোগান দুটি ক্ষেত্রেই ভালো অবস্থানে রয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের উচ্চমধ্যম লেনদেগুলোর জন্য এমএসএমই একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের দুটি জিনিসে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা। আমাদের দেশে দুটি ক্ষেত্রই ভালোভাবে কাজ করছে, যেটি সম্ভব হচ্ছে এমএসএমইর জন্য।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সময়োপযোগী বেশ কিছু নীতি ও পদক্ষেপ যেমন ২০০৯ সালে এসএমই বিভাগ খোলা, লক্ষ্য অনুযায়ী এবং বাজারের সুবিধা বুঝে ঋণ বিতরণ নীতি ঠিক করা, ৭২৫ হাজার মানুষকে এসএমই ঋণ দেয়াসহ অরো অনেক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বড় একটি শক্তি। এসবের ফলে ২০১০ সাল থেকে আমাদের ঋণ বিতরণ সমসময় লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের মোট এসএমই ঋণের ৪০ শতাংশ দিয়ে যাচ্ছে।
রপ্তানির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ চাহিদার নয়া ইঞ্জিন যুক্ত হওয়ার ফলে আমাদের অর্থনীতি বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে সুষম, ভারসাম্য, টেকসই ও প্রাণোদীপ্ত। এই সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে আমাদের ক্ষুদে উদ্যোক্তাদের।
সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির তেজগাঁওস্থ স্থায়ী ক্যাম্পাসে দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে যৌথভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট, সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটি, সিরডাপ ও ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট। অনুষ্ঠানে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন Ñ সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম, ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফা কামাল মুজেরী, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, সিরডাপের মহাপরিচালক ড. সিসেপ ইফেন্ডি, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক নির্মল চন্দ ভক্ত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) কনসালটেন্ট সুকোমল সিংহ চৌধুরী প্রমুখ।
দুইদিনব্যপী এই কনফারেন্সের প্রথম দিনে দেশি-বিদেশি প্রতিনিধি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ছাড়াও ব্যাংক ও উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানসমূহের কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন