শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএনপির আন্দোলন নয় জঙ্গিবাদ মোকাবেলাই প্রধান চ্যালেঞ্জ -ওবায়দুল কাদের

প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১৫ এএম, ৬ মার্চ, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন নয়, জঙ্গিবাদ মোকাবেলাই সরকারের প্রধান চ্যালেঞ্জ। গতকাল শনিবার দুপুরে ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ সফল করতে মতবিনিময় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকার পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এ মতবিনিময় সভা হয়। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ নয়। আমাদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ। সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ মোকাবেলার জন্য ৭ মার্চ আমরা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের শপথ নেবো। তিনি বলেন, এত সাফল্যের পরও সরকারকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চলছে। বাকস্বাধীনতার অধিকারের সুযোগ নিয়ে দেশ-বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চলছে। আর এসব অপপ্রচার জঙ্গিবাদকে আরো উসকে দিচ্ছে।
বিএনপিকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে দৃশ্যত আওয়ামী লীগের সেরকম কোনো প্রতিপক্ষ নেই। যাদের প্রতিপক্ষ হওয়ার কথা ছিল, তারা এখন নানারকম ভয়-ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে। ভয় এখন ভাইরাসের মতো তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। তারা এখন নালিশের দলে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে নালিশের রাজনীতিতে আশ্রয় নিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমান নিজেই বলেছিলেন, আমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করছি বাংলাদেশের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে। ওটা মরহুম এম এ হান্নানও ঘোষণা দিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমানের ঘোষণা ওই সময় তাৎপর্য ছিল, এটা আমরা অস্বীকার করব না। তবে তিনি ছিলেন স্বাধীনতার ঘোষণার পাঠক। তিনি ঘোষণার পাঠক ছিলেন, ঘোষক ছিলেন না। এই দাবি তিনি করতে পারেন না। তিনি বোধহয় কোনো দিন করেননি। তার মৃত্যুর পর তার দল হয়তো দাবি করছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সেই ঘোষণা হয় ২৫ মার্চে। এখানে তো বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন করা যাবে না। আমরা ’৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি। সরকার গঠনের অধিকার কেবল আমাদের। এ কথাও বলে রাখি, নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে এবং নির্বাচিত দলের নেতা হিসেবে স্বাধীনতার ঘোষণা করা নিরঙ্কুশ অধিকার কেবল বঙ্গবন্ধুর ছিল।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে তৎকালীন দৈনিক বাংলা ও বিচিত্রায় নিবন্ধ লিখেছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই নিবন্ধে তিনি (জিয়াউর রহমান) বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে আমরা গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে গিয়েছিলাম। দুর্ভাগ্য আজকে জিয়াউর রহমানের দল ৭ মার্চ পালন করে না।
তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ এত দিন বিশ্বের সেরা ভাষণের মধ্যে ছিল না। দেরিতে হলেও বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি এখন বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এতে জাতি হিসেবে আমরা আনন্দিত, গর্বিত।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সব ভাষণ নেতৃত্ব দেয় না, কর্তৃত্ব করে না। আমার মনে হয়, বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণটি কর্তৃত্ব করেছিল, নেতৃত্ব দিয়েছিল। একটা জাতিকে স্বাধীনতা সংগ্রামে চূড়ান্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়েছিল। উজ্জীবিত করেছিল।
‘ওয়ান-ইলেভেনের কুশীলবদের সঙ্গে আঁতাত করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছিল’ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কেঁচো খুঁড়তে গেলে বিষধর সাপ বেরিয়ে আসবে। তাদের ঘরের শত্রু বিভীষণ কে? এটা তাদের বের করতে হবে। ওয়ান-ইলেভেন সম্পর্কে আমাদের আরো গবেষণা করতে হবে। সেদিন গ্রেফতার তো অনেকেই হয়েছিল। প্রথম গ্রেফতার হওয়ার কথা ছিল, সরকারি দলের নেতাদের। কিন্তু সেখানে প্রথমেই গ্রেফতার করা হয়েছে আমাদের নেত্রীকে। তাকে (শেখ হাসিনা) কিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটা জাতি দেখেছে। ভোরবেলা পোশাক পরিবর্তন পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। তার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে ওই সময় কি দুর্ব্যবহার করা হয়েছে, কোর্টে কিভাবে তাকে টানা-হেঁচড়া করা হয়েছেÑ সেই ইতিহাস কি এ দেশের মানুষ ভুলে গেছে? কাজেই আমাদের অনেক কষ্ট আছে। কিন্তু দেশের স্বার্থে অনেককেই ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায় আমি বলতে পারিÑ ক্ষমা করে দিয়েছি, কিন্তু ভুলে যাইনি।
আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল পেছানো হবে কি না, সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলনের প্রস্তুতি চলছে। পেছানোর বিষয়ে পরবর্তী কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সম্পাদকম-লীর সদস্য দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, অসীম কুমার উকিল, কেন্দ্রীয় সদস্য এনামুল হক শামীম, সুজিত রায় নন্দী, প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন