বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

প্রাপ্তি তামীমের সেঞ্চুরি

| প্রকাশের সময় : ২৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানকে জয়ের জন্য ৩৪২ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। ওপেনার তামীম ইকবালের সেঞ্চুরিতে (১০২) ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪১ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।
গতকাল বার্মিংহামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলীয় ২৭ ও ব্যক্তিগত ১৯ রানে ওপেনার সৌম্য সরকারকে হারায় টাইগাররা। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েসের সাথে ১২২ বালে ১৪২ রানের বড় জুটি গড়েন তামীম। ইমরুল ৮টি বাউন্ডারিতে ৬২ বলে ৬১ রান করে ফিরলেও সেঞ্চুরি তুলে নেন তামীম। তিন অংকে পাঁ দিয়ে যদিও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি তিনি। ১০২ রানে থামেন ড্যাশিং এই ওপেনার। তার ৯৩ বলের ইনিংসে দৃষ্টিনন্দন ৯টি চার ও ৪টি ছক্কা ছিলো।
দলীয় ২১৯ রানে তামীমের বিদায়ের পর দলকে ৯ উইকেটে ৩৪১ রানে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশের মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা।
পরের ওভারেই ইমাদ ওয়াসিমকে পরপর দু বলে মিড উইকেটের দুপাশ দিয়ে ছক্কা মেরেছেন মুশফিক। তবে রানের সেই গতি পরে আর থাকেনি, বড় ইনিংসও আসেনি কারও কাছ থেকে। ৩৭ বলে ৪৬ রান করে মুশফিক আউট হয়েছেন উড়িয়ে মারতে গিয়ে। কাভার থেকে ডিপ পয়েন্টে ছুটে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন শোয়েব মালিক। মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন দৃষ্টিনন্দন কিছু শট। ছোট সীমানা সেভাবে কাজে লাগাতে পারেননি সাকিব আল হাসান। দুজনই আউট হয়েছেন হাসান আলির এক ওভারে। শেষ দিকে মিরাজ-মাশরাফি পারেননি ঝড় তুলতে। রান যা একটু করেছেন মোসাদ্দেক, তবু শেষ করে আসতে পারেননি কাজ, ১৫ বলে ২৬।
বাংলাদেশ রান অনেক করলেও একটা জায়গায় কৃতিত্ব দাবি করতে পারে পাকিস্তানের বোলাররা। ছোট সীমানা কাজে লাগানোর মত বল কমই দিয়েছে তারা। ওই পাশ দিয়ে ছক্কা হয়েছে তাই মাত্র চারটি। পাকিস্তানের জুনায়েদ খান ৪টি এবং হাসান আলী ও শাদাব খান ২টি করে উইকেট নেন।
বড় স্কোরের আত্মতুষ্টি নিয়ে যখন ফিল্ডিংয়ে, তখন কেউই কি ভেবেছিল এমন ম্যাচও হারবে বাংলাদেশ? তবে এমন ব্যাটিং অনুশীলনের পর, বাকি কাজটুকু যাদের সারতে হতো সেই বোলারারই যেন ম্যাচটা তুলে দিলেন পাকিস্তানের হাতে। মূলত ফাহিম আশরাফ নামে এখনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক না হওয়া এক অলরাউন্ডারের কাছে হারতে হলো মাশরাফিদের। ৩০ বলে ৬৪ রান করে ফাহিম আশরাফ এবং হাসান আলি ১৫ বলে ২৭ রান করে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানকে জয় উপহার দেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। বল করতে আসেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ফাহিম আশরাফ প্রথম দুই বল থেকেই তুলে নিলেন ৯ রান। প্রথম বলে মারলেন ছক্কা। দ্বিতীয় বলে তিন। তৃতীয় বলে হাসান আলি মাশরাফিকে বাউন্ডারি মেরে ফিনিশিংয়ের কাজটি করে দেন। এর আগে অবশ্য শেহজাদ (৪৪), হাফিজ (৪৯), মালিক (৭২), ইমাদ ওয়াসিমদের (৪৫) অভিজ্ঞতায়ভরা ইনিংসগুলো সহায়ক ভুমিকা রেখেছিলো তাকে সাহস যোগাতে।
এই মাঠে খেলা নিয়ে শুরু থেকেই ‘নাখোশ’ ছিলেন মাশরাফিরা। যদিও আয়ারল্যান্ডে সবুজ ‘মখমলের’ উইকেটে খেলে আসার পর আর কোনো উইকেটেই আপত্তি থাকার কথা নয় বাংলাদেশ দলের। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের উইকেটে তবু যার পর নাই বিস্মিত টাইগাররা। তবে উইকেটের ধরণে নয়, উইকেটের অবস্থানে। এজবাস্টন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের পশ্চিম পাশের সবচেয়ে কোণার উইকেটে খেলা। যেটি মূলত প্র্যাকটিস উইকেট। ওপাশ থেকে ৩০ গজের বৃত্ত শেষ হলেই মাঠ প্রায় শেষ। ওই প্রান্তের সীমানা ৩৫ গজেরও কম!
ম্যাচের আগের তিন অনুশীলনে গিয়ে ওই উইকেটে খেলা জেনে শুরুতে বিশ্বাসও করতে চায়নি বাংলাদেশ দল। পরে নিজেদের আপত্তির কথাও জানানো হয়েছে দল থেকে। তবে সেই আপত্তিতে কান দেওয়ার লোক ছিল না। জানা গেছে, কোচ চন্ডিকা হাথুরসিংহেও যথেষ্ট বিরক্ত উইকেট দেখে। আইসিসির কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলেছেন আগের দিন, লাভ কিছু হয়নি।
মজার ব্যাপার হলো, যে উইকেটে খেলা হচ্ছে, পশ্চিম পাশে সেই উইকেটের পরও উইকেট আছে আরও দুটি! এজবাস্টনে উইকেট আছে ২২-২৩টি। তবে দুই পাশের কোণার উইকেটগুলো মূল প্র্যাকটিসের জন্যই ব্যবহার করা হয়। সেরকম একটি উইকেটেই খেলিয়ে দেওয়া হয়েছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অফিসিয়াল প্রস্ততি ম্যাচ!

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৩৪১/৯ (তামীম ১০২, সৌম্য ১৯, ইমরুল ৬১, মুশফিক ৪৬, সাকিব ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২৯, মোসাদ্দেক ২৬, মিরাজ ১৩*, মাশরাফি ১, সানজামুল ০*; জুনাইদ, হাসান ২/৫৮ শাদাব ২/৫৫)।
পাকিস্তান : ৪৯.৩ ওভারে ৩৪২/৮ (শেহজাদ ৪৪, হাফিজ ৪৯, মালিক ৭২, ইমাদ ৪৫, ফাহিম ৬৪*, হাসান ২৭*; মাশরাফি ১/৬৮, তাসকিন ১/৮০, শফিউল ১/৪৬, সাকিব ১/৪১, মোসাদ্দেক ১/২৯, মিরাজ ২/৩০)।
ফল : পাকিস্তান ২ উইকেট জয়ী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন