বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষাঙ্গন

পাহাড় আর সমুদ্রের মিতালীতে

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মন চায় পাখা মেলে উড়তে, নিজের বাধাধরা গ-ি থেকে বেরিয়ে প্রাকৃতিক প্রশান্তির মাঝে নিজেকে মেলে ধরতে। কিন্তু সেমিস্টার সিস্টেমে সময় বের করা বড়ই দুষ্কর। সারাদিন ক্লাস, প্র্যাকটিক্যাল, অ্যাসাইনমেন্ট, পরীক্ষা নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হয়। কিন্তু এই ব্যস্ততার মাঝেই যদি হঠাৎ করে একটা ঘোরাঘুরির ব্যবস্থা হয়ে যায় তাহলে কার না ভাল লাগে। আর তা যদি হয় সমুদ্রের দেশ, স্বপ্নের সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। ক্লাস টেস্টের প্রেসারে সবাই যেন ক্লান্ত হয়ে উঠেছে। এই ক্লান্তির অবসাদকে ধুয়ে ফেলার জন্য সমুদ্রের নীল জল যেন আমাদের ডাকছিল। আর সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিল সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বশেমুরবিপ্রবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগ এই স্টাডি ট্যুরের আয়োজন করে।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী “সবুজ ম-ল” তাদের এই ট্যুরের কাহিনী বর্ণনা করছিল এভাবেই। গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সব বর্ষের শিক্ষার্থীরা গিয়েছিলাম পর্যটন নগরী কক্সবাজার। ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্কের নিদর্শন হিসেবে চট্টগ্রামের রাঙামাটি, বান্দরবন, কক্সবাজার ও সেন্টমার্টনে ৭ দিনের ট্যুর নির্ধারিত হয়।
দীর্ঘ ৩ বছরের অপেক্ষার পর আমার বিশ্ববিদ্যালয় লাইফের প্রথম ট্যুর। ভাবতেই যেন মনের মধ্যে একটি শিহরণ খেলে যাচ্ছে। ট্যুরের বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই গ্রুপমেটদের সাথে কত প্ল্যান। সেখানে গিয়ে কি কি করব, কি নিয়ে যাব। আরও কত কি! ট্যুরের আগের রাত্রে যেন ঘুম আসছিল না। অবশেষে সেই কাক্সিক্ষত সময়ের দেখা পেলাম। এবারে রওনা দেয়ার পালা।
রাঙামাটির উদ্দেশ্যে রওনা দেই। দুপুর ২টায় রাঙামাটি কাপ্তাই লেকে পৌঁছায় আমরা। যাওয়ার সময় রাঙামাটির আঁকাবাঁকা পথ আমরা কিছুক্ষণের জন্য বিমুগ্ধ দৃষ্টিতে দুই পাশের পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম। পাহাড়ের অপূর্ব শোভা আমাদের হৃদয়কে সজীবতায় পূর্ণ করল। কোথাও রাস্তার গা-ঘেঁষে পাহাড়ের সারি আবার কোথাও দূরে সুউচ্চ পর্বতশ্রণী, এ এক অনুপম দৃশ্য তা যেন পাহাড়ি হওয়ার আহ্বান জানায়।
এরপর কাপ্তাই লেকে নৌকা ভ্রমণ শেষে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, আনন্দবিহার, বৌদ্ধমন্দির পরিদর্শন ও আদিবাসীদের জীবনযাপন প্রত্যক্ষ করি। এ যেন এক সপ্তস্বর্গ! সকালে বান্দরবান চাঁদের গাড়িতে আরোহণ করে নীলাচলে পৌঁছাই।
পাহাড়িদের পোশাক, খাবার, ভাষা, চালচলন আমাদের শিক্ষা দেয় সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ সমাজের ভিত্তিস্বরূপ। নীলাচল থেকে মেঘলা পাহাড়ে, এখানকার সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় ছিল সংরক্ষিত বনের হরিণগুলো। বান্দরবান থেকে প্রায় সন্ধ্যার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের কলাতলী এলাকায় হোটেল সী-পয়েন্ট রিসোর্টে উঠলাম।
শিক্ষক মো. মজনুর রশিদ ও মো. আনিসুর রাহমান নেতৃত্বে লাবনী পয়েন্টে গেলাম। প্রথমবারের মতো এত কাছ থেকে বিশাল সমুদ্র দেখার সুযোগ হল। এটা যেন এক অন্য রকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। রাতের চাঁদনী আলোয় সমুদ্রের তরঙ্গের খেলা যেন পাগল করে দিচ্ছিল। পরদিন সকালে সেন্টমার্টিন যাত্রা। দীর্ঘ বাস ভ্রমণের পর সেন্টমার্টিনগামী লঞ্চে আরোহণ। লঞ্চ কিছুক্ষণ চলার পর সামুদ্রিক গাংচিলের আনাগোনা বেড়ে যায়। সকালের নাস্তার অবশিষ্ট রুটি ছুঁড়ে মারলে গাংচিল সেগুলো লুফে নিচ্ছিল। এ ধরনের দৃশ্য খুব কমই দেখা যায়। সেন্টমার্টিন পৌঁছানোর পর সমুদ্রের মাঝে প্রবাল দ্বীপ ও এর নৈসর্গিক দৃশ্য এক অসাধারণ অনুভূতি।
ষ তন্ময় বিশ্বাস

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন