বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট

| প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সিগারেটের নিম্নস্তর প্রথা বাতিলের দাবি
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : প্রস্তাবিত বাজেটে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে সিগারেটের করকাঠামোর নি¤œস্তর প্রথা বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট। গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটেতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এই দাবি জানান। এতে জোটভুক্ত সংগঠন মাদকদ্রব্য ও নেশা বিরোধী কাউন্সিল (মানবিক), নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, অরুনোদয়ের তরুণ দল, স্বচ্ছ ফাউন্ডেশন, স্বপ্নের সিড়ি সমাজকল্যাণ সংস্থা, জনস্বার্থ ফাউন্ডেশন, গ্রীণ মাইন্ড সোসাইটি, এলআরবি ফাউন্ডেশন, ওয়াইএসএসই, সেরিদ, স্বদেশ মৃত্তিকা মানব উন্নয়ন সংস্থা, ইয়ুথ সান, অর্পণ ফাউন্ডেশন, ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্ধ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে মূলবক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের কার্যকরী সদস্য ও নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাইদ রানা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তামাকের কারণে অনাকাঙ্খিত মৃত্যুরোধ কল্পে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। অর্থমন্ত্রী গত অর্থবছরে সিগারেটের জটিল করস্তর প্রথা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে এনে আন্তর্জাতিক বিশ্বের ন্যায় একটি সহজ করকাঠামো তৈরীর প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি এ বছর আগামী ৩ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বিড়ি উৎপাদন বন্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় এবং অর্থমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতির কোন প্রতিফলন না ঘটায় প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণায় তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সংগঠনসমুহ দারুণভাবে হতাশ হয়েছে।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের বোর্ড অব ট্রাস্টি রফিকুল ইসলাম মিলন বলেন, অর্থমন্ত্রী তামাক কোম্পানীর কাছে নতিস্বীকার করে সুকৌশলে দরিদ্র মানুষের সর্বাধিক ব্যবহারিত (সিগারেটের বাজারের ৬০শতাংশ) সস্তা দামের সিগারেটের স্তরকে দুটি স্তরে বিভক্ত করেছেন। যা দরিদ্র ও মদ্যবিত্ত শ্রেনীর জনসাধারণ বেশী সেবন করে। এটা সম্পূর্ণ জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন বিরোধী। অর্থমন্ত্রী এ দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য উন্নয়নের কথা বিবেচনা না করে তিনি তামাক কোম্পানীর কুটকৌশলের খপ্পরে পড়ে নি¤œস্তর সিগারেটকে দেশী ও বিদেশী প্রকারভেদ করে আলাদা দুটি স্তর প্রচলন করেছেন। যা সম্পূর্ণ জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন বিরোধী ও তামাক নিয়ন্ত্রণ পলিসি পরিপন্থি।
এছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটে বহুজাতিক কোম্পানীসমুহের উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের করের হার না বাড়ানোর মাধ্যমে প্রকারান্তে বহুজাতিক কোম্পানীকেই সুবিধা প্রদান করা হয়েছে যা উদ্বেগজনক। অপরদিকে দেশীয় কোম্পানীর নি¤œস্তর সিগারেট ১০ শলাকার প্যাকেটের মূল্য ২৭ টাকা এবং সম্পূরক শুল্ক ৫২ শতাংশ করায় দেশীয় সিগারেট কোম্পানীকে সস্তায় সিগারেট বিক্রির বাজার বিস্তৃতির সুযোগ প্রদান করে দিয়েছে প্রস্তাবিত বাজেট। বাজেটে শুভঙ্করের ফাঁকির ন্যায় সুকৌশলে দেশী ও বিদেশী সিগারেট কোম্পানীকে (মৃত্যুর ফেরিওয়ালাদের) পরোক্ষভাবে সহায়তা করা হয়েছে। এর ফলে সস্তা সিগারেটের প্রকৃতমূল্য কমে যাওয়ায় এর ব্যবহার পূর্বের চেয়ে অধিক বেড়ে যাবে এবং মৃত্যুর সংখ্যাও পূর্বের চেয়ে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থেকে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে প্রস্তাবিত বাজেটে ৪ দফা সুপারিশ প্রদান করা হয়। এতে সিগারেটের নি¤œ স্তর প্রথা বাতিল করে তিনস্তর প্রথা প্রবর্তন, বিশাল জনগোষ্ঠীকে জর্দ্দা গুল ব্যবহারের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষার লক্ষ্যে ধোয়াবিহীন তামাকের (জর্দ্দা ও গুল) উপরে করবৃদ্ধি এবং ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা ও ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকার বিড়ির প্যাকেটের সর্বনি¤œ মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জনস্বার্থ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডিএম সাকলায়েন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন, ইয়ুথ স্কুল ফর সোস্যাল এন্টারপ্রেনারস এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ মো. ইউসুফ হোসেন, স্বচ্ছ ফাউন্ডেশনের সভাপতি সুমন শেখ প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
S. Anwar ৪ জুন, ২০১৭, ৯:৫১ পিএম says : 0
সরকার তামাক খাতকে রোজগারের ভালো একটা উপায় হিসেবে বেছে নিয়েছে। এভাবে প্রতি বছর বছর তামাকজাত পন্যের দাম বাড়িয়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণীর ধুমপায়ীদের গলায় একটু একটু করে ছুরি না চালিয়ে তামাকজাত সকল পন্যের উৎপাদন সমূলে বন্ধ করে দিলেইতো একবারে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন