শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চট্টগ্রামে ছেলের সামনে প্রবাসীর স্ত্রী খুন

প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার রৌফাবাদে শিশু পুত্রের সামনে খুন হলেন প্রবাসীর স্ত্রী। শনিবার রাতে বাসায় হানা দিয়ে দুর্বৃত্তরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পারভীন আক্তার (৩২) নামে ওই গৃহবধূকে।
তিনি প্রবাসী নুরুল আলমের স্ত্রী। ৫ম শ্রেণি পড়–য়া শিশু পুত্র নূর মোহাম্মদ সাঈদ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী। নিজের চোখের সামনে মায়ের খুনের দৃশ্য দেখে হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে শিশুটি। পুলিশের কাছে খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছে সে। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন ইনকিলাবকে জানান, খুনের পর খুনীরা ওই বাসা থেকে মালামাল ও স্বর্ণালংকার লুট করলেও এটি নিছক ডাকাতি নাকি পরিকল্পিত খুন তা তদন্ত করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগির খুনের রহস্য উদঘাটন করা যাবে। বাড়ির সিসিটিভির ফুটেজ থেকে অপরিচিত ৪ যুবকের ছবি সংগ্রহ করেছে পুলিশ।
পারভীন আক্তার রৌফাবাদ পাহাড়িকা এলাকার জয়নব ভিলা নামের একটি বাড়ির তৃতীয় তলায় ছেলেকে নিয়ে থাকতেন। ছয়তলা ভবনটির মালিক ফটিকছড়ি উপজেলার ছাদেকনগর গ্রামের প্রবাসী আব্দুস শুক্কুর। পারভিন তার ছোট ভাই দুবাই প্রবাসী নূরুল আলমের স্ত্রী। থানার এসআই রামধন চন্দ্র দাশ জানান, গভীর রাতে পারভীনের ভাসুরের ছেলে মামুন তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে বায়েজিদ খানা পুলিশ পরে লাশ নিজেদের হেফাজতে নেয়। এসআই রামধন বলেন, মামুন দাবি করেছে, কয়েকজন দুর্বৃত্ত বাসায় ঢুকে ছেলেকে বাথরুমে বেঁধে রেখে পারভীনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারা বাসা থেকে সোনার গয়না নিয়ে গেছে বলেও মামুন অভিযোগ করেছে। জয়নব ভিলার তৃতীয় তলায় পারভীন এবং দ্বিতীয় তলায় তার ভাসুর থাকেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামুনকে থানায় নিয়ে গেছে বলে এসআই রামধন জানান।
নিহত পারভিনের ছেলে নূর মোহাম্মদ সাঈদ স্থানীয় হলি চাইল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। সে পুলিশের কাছে নিজ চোখে দেখা হত্যাকা-ের বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছে। সাঈদ জানায়, শনিবার রাত ৮টার দিকে গৃহশিক্ষক জনি তাকে বাসায় পড়াতে আসেন। সোয়া ৯টার দিকে শিক্ষক নিজেই দরজা খুলে বেরিয়ে যান। এরপর দরজা খোলাই ছিল। সাঈদ টেবিলে বই-খাতা গুছিয়ে রাখছিল। তিনজন যুবক এসময় দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে যায়। ঢুকে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়। এসময় একজন সাঈদের আম্মাকে বলে, ‘আপনি আমাকে চিনেন?’ বুঝতে পেরে পারভিন চিৎকার করে উঠলে তিনজন বেডরুমে গিয়ে তাকে চেপে ধরে বিছানায় ফেলে দেয়। একজন দুই পা, একজন দুই হাত এবং একজন মুখ চেপে ধরে। যে মুখ চেপে ধরেছিল সে আবার উঠে গিয়ে সাঈদকে ধরে বাথরুমে নিয়ে যায়।
এসময় সাঈদের গলা টিপে ধরে সে বলে, তোমাদের যত স্বর্ণ আছে সব দিয়ে দাও। এরপর সাঈদকে যে রুমে আলমারি আছে সেই রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। একজন স্টিলের আলমিরা ভেঙে তল্লাশি শুরু করে। এসময় পারভিন আক্তার আবারও চিৎকার দিয়ে উঠে। তখন একজন চিৎকার করে উঠে, ‘এই পিস্তল বের কর, গুলি করে লাশ ফেলে রেখে যাব। একজন পারভিনের মুখের উপর চেপে বসে। এতে পারভিনের চিৎকার বন্ধ হয়ে যায়। যাবার সময় এক দুর্বৃত্ত সাঈদকে বলে, তোর আম্মা অজ্ঞান হয়ে গেছে। মুখে পানির ঝাপটা দিলে জ্ঞান ফিরবে। তিন দুর্বৃত্ত চলে যাবার সময় দরজার বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। এরপর আশপাশের লোকজন এসে লাশ উদ্ধার করে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন