শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সাধারণ সম্পাদক পদে দ্বিমুখী লড়াইয়ের আভাস

| প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ ৩০ জুলাই। তবে প্রায় দেড় মাস সময় হাতে থাকলেও এই ফেডারেশনে আগাম নির্বাচনী বাতাস বইছে। বাহফে’র আসন্ন নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াই হবে বেশ প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ। এই পদে ত্রিমুখীর আভাস মিললেও মুলত লড়াই হবে দ্বিমুখীই। জানা গেছে, বর্তমান কমিটির দুই সহ-সভাপতি খাজা রহমতউল্লাহ ও আবদুর রশিদ শিকদারের সঙ্গে আসন্ন নির্বাচনে সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদ এএ আদেলও প্রতিদ্ব›িদ্বতা করবেন। তবে মুল লড়াই হবে খাজা রহমতউল্লাহ ও আবদুর রশিদ শিকদারের মধ্যে। এমনটাই মনে করছেন দেশের হকিবোদ্ধারা।
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেট ও ফুটবলের পরেই হকির অবস্থান। বছর জুড়েই এ ডিসিপ্লিনের কোন না কোন খেলা টার্ফে থাকে। ফলে বাহফে’র নির্বাহী কমিটির দায়িত্বে আসার জন্য ক্রীড়া সংগঠকদের আগ্রহের কমতি নেই। অতীতের ন্যায় এবারও নির্বাচনকে সামনে রেখে এর উত্তাপে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন সংগঠকরা। সাধারণ সম্পাদক পদে খাজা রহমতউল্লাহ ও রশিদ শিকদার অনেকটা ঘোষণা দিয়েই মাঠে নেমেছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এলাকায় পোস্টারিং করে নিজ প্রচারনা শুরু করেছেন ২০০৮ সালের অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাজেদ আদেল। কিন্তু বিশ্বস্ত সুত্র মতে, ঊষা ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক রশিদ শিকদারকেই নাকি শেষ পর্যন্ত সমর্থন দিতে পারেন সাজেদ আদেল। ফলশ্রæতিতে হয়তো ত্রিমুখী নয়, দ্বিমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল সাধারন সম্পাদক পদে।
বাহফে’র অ্যাডহক কমিটি ও সর্বশেষ নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন খাজা রহমতউল্লাহ। কিন্তু পাঁচ বিদ্রোহী ক্লাবের দাবীর মুখে শেষ পর্যন্ত নিজ পদ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। সাধারণ সম্পাদকের পদ ছেড়ে জায়গা পান সহ-সভাপতির চেয়ারে। বর্তমানে এই পদে থাকলেও ভবিষ্যতে সহকর্মী রশিদ শিকদারের সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করার পক্ষেই রহমতউল্লাহ। ঢাকা আবাহনী ও জাতীয় দলের সাবেক এই তারকা খেলোয়াড় বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি সবাই মিলে একটি প্যানেল দিতে। দ্ব›েদ্ব সমস্যা বাড়ে। তাই আমরা চাই না নির্বাচনকে ঘিরে কোন দ্ব›দ্ব। আসলে নির্বাচনকে নির্বাচনের জায়গায় রাখা উচিত। খেলার মধ্যে আনলে ক্ষতি হবে হকিরই।’
রহমতউল্লাহ আরও বলেন, ‘আমার দায়িত্বকালে ৫২টি টুর্নামেন্ট করেছি। সাড়ে ১২ কোটি টাকার উপরে পৃষ্ঠপোষকতার অর্থ আমাদের কমিটির মাধ্যমে আনা হয়েছে। জেলাগুলোতে ভেন্যু হয়েছে। যুব হকি, জাতীয় হকি টার্ফে গড়িয়েছে নিয়মিত। বিভিন্ন জেলায় টুর্নামেন্ট হয়েছে। স্কুল হকিতে ৬৪ জেলাকে অন্তর্ভূক্ত করেছি। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনের (এফআইএইচ) সভাপতি লিয়েন্দ্র নেগ্রেকে তিনবার ঢাকায় এনেছি। একটি টার্ফও আদায় করেছি স্বল্পমূল্যে। এটি আমাদের কমিটির কৃতিত্ব। এশিয়ান হকি ফেডারেশনের সিইওকে ব্যক্তিগত অনুরোধের মাধ্যমেই ওয়ার্ল্ড হকি লিগ ও এশিয়া কাপ হকির আয়োজক হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি আমরা। তাই আমার ধারণা সংগঠক হিসেবে আমি পরীক্ষিত। যে জন্য আসন্ন নির্বাচনে অনেকেই আমাকে সমর্থন দেবেন।’
রহমতউল্লাহ নিজের অতীত কর্মকান্ডের ফিরিস্তি তুলে সংগঠকদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করলেও নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে নিজেকেই এগিয়ে রাখলেন আবদুর রশিদ শিকদার। তিনি বলেন, ‘পুরনো ঢাকার সংগঠক ও কাউন্সিলররা সবাই এক হয়ে প্যানেল দেবেন এবং আমার বিশ্বাস আমি তাদের সমর্থন পাবো।’
গত ১৭ বছর ধরে দেশের হকির অন্যতম জায়ান্ট ঊষা ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রশিদ। দায়িত্বগ্রহণের পরেই দলকে একটি টুর্নামেন্টে শিরোপা এনে দেন। পুরনো ঢাকার আরমানিটোলায় পাঁচতলা ভবন নির্মান করেন ক্লাবের নামে। প্রিমিয়ার লিগে ঊষা হ্যাটট্রিক শিরোপাও পায় তার মেয়াদকালেই। ২০০১ সালে বাহফে’র সদস্য, পরে কোষাধ্যক্ষ এবং বর্তমানে সহ-সভাপতি পদে আসীন রশিদ। এছাড়া এশিয়ান হকি ফেডারেশনের নির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্যও তিনি। শুধু তাই নয়, এশিয়া কাপের গেল তিন আসরে বাংলাদশে জাতীয় দলের ম্যানেজার ছিলেন এই হকি সংগঠক। রশিদ আরও বলেন, ‘এবার নানা কারণে নির্বাচন করছি আমি। খোন্দকার জামিল, সাজেদ আদেল ও শামসুল বারীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও বর্তমানে খুব বাজে সময় পার করছি আমি। গত ছয় বছরে কোন কাউন্সিলর সভা কিংবা এজিএম হয়নি। জেলা ও বিভাগের কাউন্সিলদের যাতায়াত খুব একটা নেই ফেডারেশনে। ক্লাবগুলো বিদ্রোহী হয়ে ওঠায় পাঁচটি ক্লাবকে বাইরে রেখে প্রিমিয়ার লিগ করেছেন তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক। পরে আমার উদ্যোগেই সবগুলো ক্লাব লিগ খেলতে আসে। এমনতাবস্থায় বাহফে’তে পরিবর্তন জরুরী। আর এ পরিবর্তন আনতেই আমি নির্বাচন করছি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন