বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গণমাধ্যম নীতিমালার আলোকেই চলবে অনলাইন নিউজ পোর্টাল

নীতিমালার খসড়া মন্ত্রীসভায় অনুমোদন

| প্রকাশের সময় : ২০ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পত্রিকার অনলাইন চালাতে অনুমোদন লাগবে না
স্টাফ রিপোর্টার : প্রচলিত গণমাধ্যম নীতিমালার আলোকেই অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো চলবে। বেতার ও টেলিভিশনের নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ স¤প্রচার কমিশন অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর নিয়ন্ত্রণ করবে এবং নিবন্ধন দেবে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রীসভার বৈঠকে এসব বিধান রেখে করা ‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা- ২০১৭’ এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, গণমাধ্যম নীতিমালার আলোকেই অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা করা হয়েছে। অনলাইন মিডিয়াটা যেন সুনিয়ন্ত্রিতভাবে কাজ করে নীতিমালায় সেই গাইডলাইন দেয়া হচ্ছে, উদ্দেশ্যও বলা আছে। তিনি জানান, অনলাইন সংবাদমাধ্যম পরিচালনার জন্য স¤প্রচার কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। এই কমিশন গঠিত হবে জাতীয় স¤প্রচার আইনের অধীনে, যা প্রণয়নের কাজ চলছে। জাতীয় স¤প্রচার কমিশন অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জন্য গাইডলাইন তৈরি করবে। বিজ্ঞাপনের হার ও ফি সে অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। আর কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয় অনলাইন সংবাদমাধ্যমের দেখভাল করবে। শফিউল আলম বলেন, স¤প্রচার আইন পাস হলে কমিশন চলে আসবে। এই কমিশনের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে। মুদ্রিত পত্রিকা বা টেলিভিশনের অনলাইন সংস্করণ চালাতে নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৯৩ সালের প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী যারা নিবন্ধন নিয়েছে, তাদের নতুন করে আর নিবন্ধন নিতে হবে না। তবে পত্রিকা ও টেলিভিশনের অনলাইন সংস্করণ চালাতে হলে কমিশনকে তা অবহিত করতে হবে। অনলাইন গণমাধ্যমের সংজ্ঞার বিষয়ে শফিউল আলম বলেন, বাংলাদেশের ভূ-খÐ থেকে বাংলা, ইংরেজি বা অন্য কোনো ভাষায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে রেডিও, টেলিভিশন বা সংবাদপত্রের প্রচারের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত স্থির ও চলমান চিত্র, ধ্বনি লেখা ও মাল্টিমিডিয়ার অন্য কোনো রূপে উপস্থাপিত তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ বা স¤প্রচারকারী বাংলাদেশি নাগরিক বা বাংলাদেশি নিবন্ধিত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে ‘অনলাইন গণমাধ্যম’ বোঝাবে। বিজ্ঞাপনের বিষয়ে কমিশন কোড অব গাইডলাইনস তৈরি করবে। জাতীয় স¤প্রচার নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটা করা হবে।
তিনি বলেন, যেসব অনলাইন চলছে সেগুলো যদি প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস অ্যাক্ট অনুযায়ী নিবন্ধন নিয়ে থাকে তা বহাল থাকবে। যারা এই নিবন্ধন নেয়নি তাদের নতুন করে নিবন্ধন নিতে হবে। কোনো অনলাইন গণমাধ্যম রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করলে কীভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে- এমন প্রশ্নে মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, অনলাইন নীতিমালায় এ বিষয়ে সরাসরি কিছু বলা নেই। এ সংক্রান্ত অন্যান্য আইন এখানে প্রযোজ্য হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ, তথ্য, ছবিসহ যে কোনো বিষয়ে কারো আপত্তি থাকলে, কারো অধিকার ক্ষুণœ হয় তাহলে কমিশনের কাছে আবেদন করা যাবে। কমিশন ৩০ দিনের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করবে। নিষ্পত্তিতে নির্দেশনা ও জরিমানার ব্যবস্থাও থাকবে। নিষ্পত্তির বিষয়গুলো স¤প্রচার কমিশন আইনের বিধিমালায় উল্লেখ থাকবে। তিনি বলেন, কমিশন গঠন না হওয়া পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী এসব অনলাইন কাজ করবে। তথ্য মন্ত্রণালয় অনলাইন গণমাধ্যমের একটি তালিকা তৈরি করেছে। তাতে বিদ্যমান অনলাইনের সংখ্যা ১৮০০। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় স¤প্রচার আইন নামে পৃথক একটি আইন তৈরির কাজ চলছে। এই আইনে কমিশনের কাজ ও গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা থাকবে। নীতিমালায় থাকছে  অনলাইন গণমাধ্যমের খসড়া নীতিমালার তথ্য-উপাত্ত প্রচার, প্রকাশ ও স¤প্রচার সংক্রান্ত বিষয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়েছে। সব ধর্মের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই সংবাদ পরিবেশনের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার প্রসঙ্গে জানানো হয়েছে, আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা যাবে। তবে  কৌতুক বা পরিহাস করার জন্য আঞ্চলিকতা রাখা যাবে না। পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ধারাকে তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতিকেও তুলে ধরতে হবে সংবাদে। অনলাইন গণমাধ্যমে প্রচারিত, প্রকাশিত বা স¤প্রচারে কোনো প্রকার অসঙ্গতিপূর্ণ, বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য তথ্য বা উপাত্ত দেওয়া যাবে না। সব তথ্য-উপাত্তে উভয় পক্ষের যুক্তি যথাযথ ভাবে উপস্থাপনের সুযোগ থাকতে হবে। সরকার অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান, তথ্য-উপাত্ত স্বেচ্ছাপ্রণোদিতভাবে প্রচার বা প্রকাশ করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে সরকার প্রধানের ভাষণ, জরুরি আবহাওয়া বার্তা, স্বাস্থ্য বার্তা, গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা, সরকারের জারিকৃত প্রেসনোট, সরকার অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রভাষাকে যোগ্য মর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে তথ্য পাঠ, প্রচার, প্রকাশ ও স¤প্রচারের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই বাংলা প্রমিত বানান বা উচ্চারণের মান শিথিল করা যাবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন