বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মায়ের মৃত্যুর পর আমার যন্ত্রণা ছিলো খুবই দুঃসহ : হ্যারি

আবারও আলোচনায় প্রিন্সেস ডায়না

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২৩ জুন, ২০১৭

ইনকিলাব ডেস্ক : ২০ বছর আগে ‘সড়ক দুর্ঘটনা’য় প্রাণ হারিয়েছিলেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের বিদ্রোহী বধূ প্রিন্সেস ডায়না। তবে এই ২০ বছরে বারবার তিনি শিরোনাম হয়েছেন নানান খবরের। বিশ্বজুড়ে তার সৌন্দর্য আর বিদ্রোহের লক্ষকোটি ভক্ত-অনুরাগী সেইসব খবরে চোখ রেখেছেন বিপুল উৎসাহ নিয়ে। স¤প্রতি আবারও তিনি আলোচনায় এসেছেন এক ভুয়া সংবাদের ভিত্তিতে।
ইউরনিউজওয়ার ডটকম নামের এক ওয়েবসাইটে গুজব তোলা হয়, যুক্তরাজ্যের এমআই৫ এর সাবেক সদস্য জন হপকিন্স ডায়না হত্যাকান্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন। হপকিন্সকে উদ্ধৃত করে ওই গুজবে লেখা হয়, ‘ডায়না ব্রিটিশ রাজতন্ত্র হুমকির মুখে ফেলেছিলেন। এজন্য তাকে হত্যা করার নির্দেশ পান তিনি। ডায়না অনেক রাজকীয় গোপন বিষয় জানতেন দাবি করে জন হপকিন্স বলেন, ব্রিটিশ রাজবধূর প্রচন্ড ক্ষোভ ছিলো এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করতে চাইছিলেন। আমাকে আদেশ দেওয়া হয় যে তাকে মরতে হবে এবং সেটা যেন দুর্ঘটনা মনে হয়। যুক্তরাজ্যের এমআই৫ এর সাবেক ওই সদস্যের বরাত দিয়ে বলা হয়, ‘আমি এর আগে কোনও নারীকেই হত্যা করিনি, রাজকন্যা তো অনেক পরের বিষয়। তবে আমাকে আদেশ মানতে হয়েছে। আমি রানী ও আমার দেশের জন্য এই কাজ করি।’
ব্রিটিশ ডেইলি স্ট্রারের খবরে বলা হয়েছে, ইউরনিউজওয়ার ডটকম নামের এক ওয়েবসাইটটি আদতে ভুয়া নিউজ তৈরির একটি অ্যাপ্লিকেশন সরবরাহ করে। সেই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেই এই গুজবটি ছড়ানো হয়েছে। তবে ততোক্ষণে এই গুজবটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজার হাজার ডায়না-ভক্ত নিউজটি শেয়ার করেন। এক ভক্ত টুইটারে লেখেন, ‘আমরা কি এই এমআই৫ সদস্যকে নিয়ে কথা বলতে পারি যে ডায়নাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে।’ অপর একজন লেখেন, ‘এই এজেন্ট মৃত্যুশয্যায় বিদ্রোহী রাজবধূকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এটা মারাত্মক বিষয়।’
উল্লেখ্য, ইউরনিউজওয়ার ডটকম গুজব ছড়ালেও ডায়নার মৃত্যু দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকান্ড তা নিয়ে সংশয় কাটেনি এই ২০ বছরেও। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যপ্রমাণ বলছে, সড়ক দুর্ঘটনায় বন্ধু দোদি আল-ফাহাদসহ তার মৃত্যু হয়েছিল। বিবিসি, গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের হাতে আসা কিছু তথ্যের বরাত দিয়ে একে হত্যাকান্ড বলছিলো। দোদির বাবা মোহাম্মদ ফায়েদও চেষ্টা করেছিলেন ওই দুর্ঘটনাটিকে হত্যাকান্ড বলে প্রমাণের।
মৃত্যুর কয়েক মাস আগে বিবিসির প্যানোরমা অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ রাজপরিবারের কঠোর সমালোচনা করেছিলেন ডায়ানা। তার সঙ্গে এই দুর্ঘটনার সম্পর্ক রয়েছে কিনা এমন সংশয় পোষণ করেন অনেকে।
ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ জারি করেছিলেন ওই মানবতাবাদী রাজবধূ। রাজপ্রাসাদ ছেড়েছিলেন। ছেলেদের নিয়ে বের হয়ে এসেছিলেন একা। দাঁড়িয়েছিলেন মানুষের পাশে। ১৯৯৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ল্যান্ড মাইন ও এইডস বিরোধী আন্দোলন জোরদার করতে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নোবেল বিজয়ী নেলসন মেন্ডেলাসহ কাজ শুরু করেছিলেন। ১৯৯৭ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিনেই মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি জীবনের ওপারে চলে যান।
মায়ের মৃত্যুর পর আমার যন্ত্রণা ছিলো খুবই দুঃসহ : হ্যারি
এদিকে বিবিসি জানায়, ব্রিটিশ রাজসিংহাসনের উত্তরাধিকার প্রিন্স হ্যারি বলেছেন, ‘আমি মনে করি না রাজপরিবারের কেউ রাজা বা রানি হতে চান। তবে আমরা আমাদের কর্তব্য যথাসময়ে পালন করে যাব।’
স¤প্রতি মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক অনলাইনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রিন্স হ্যারি এই অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, রাজপরিবারের সদস্যরা এই গুরুদায়িত্ব পালন করেন জনগণের বৃহত্তর কল্যাণে। রানির উত্তরাধিকারীদের না চাইলেও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিতে হয়। এসব তাঁদের ইচ্ছায় হয় না। ওই সাক্ষাৎকারে মায়ের মৃত্যুর পর কী দুঃসহ মানসিক কষ্টের মধ্য দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে, তা-ও প্রকাশ করেছেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘১২ বছরের একজন শিশুর জন্য এটা মোটেও সহজ বিষয়।’
১৯৯৭ সালে ৩১ আগস্ট প্যারিসে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান প্রিন্সেস ডায়ানা। তার মৃত্যুর ছয় দিন পর তাকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে যোগ দেন রাজপরিবারের সব সদস্য। তাদের সঙ্গে ডায়ানার বড় ছেলে ১৫ বছরের প্রিন্স উইলিয়াম, ছোট ছেলে ১২ বছরের প্রিন্স হ্যারিও লন্ডনের রাস্তা ধরে কফিনের পেছন পেছন হেঁটে যান। শেষকৃত্যের ওই দিন অন্তত ১০ লাখ মানুষ ডায়নাকে শেষশ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাতে এসেছিল। টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি স¤প্রচার করা হয়, যা দেখেছিলো বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন