তারেক সালমান : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এদেশের যা কিছু অর্জন তা আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে আবারো ভোট দিয়ে ক্ষমতায় রাখতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের অগ্রগতি এনে দিয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এদেশের যা কিছু অর্জন আওয়ামী লীগই এনে দিয়েছে। এই সংগঠনই বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার পথ দেখাচ্ছে। এটা কেবল আওয়ামী লীগই পারে। জাতি যেন তা মনে রাখে। আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক।
গতকাল শুক্রবার সকালে আওয়ামী লীগের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিজস্ব ১০তলা নতুন ভবনের ভিত্তিফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। পবিত্র লাইলাতুল কদর ও জুমাতুল বিদার জন্য এবার সংক্ষিপ্ত কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দলের ৬৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করেছে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটি।
গতকাল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ফুল দেয়ার পর সভানেত্রী হিসেবে দলীয় নেতাদের নিয়ে জাতির জনকের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি হচ্ছে। এ উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবার সরকার গঠন করতে হবে। এ সময় দেশবাসীর প্রতি আওয়ামী লীগকে আবারো দেশসেবা করতে সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দলীয় নেতাকর্মীদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে গড়ে ওঠারও আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মানুষের সেবা করুন। কী পেলাম, কী পেলাম না, সেটি বড় কথা নয়। দেশকে, মানুষকে কী দিতে পারলাম, সেটিই বড় কথা। দেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, যারা তখন লিখেছিল বঙ্গবন্ধু সফল বিপ্লবী, দক্ষ সংগঠক, কিন্তু ভালো শাসক নন, তারা হয়ত স্বাধীনতাবিরোধী ছিল। না হয় স্বাধীনতা বিরোধীদের দোসর হিসেবে কাজ করেছিল।
তিনি বলেন, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। কিন্তু আমি জানি, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি, তাদের পদলেহনকারী ও দালালদের অভাব নেই। তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে, তারা ষড়যন্ত্র করবেই।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থেকে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার আহŸান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ দেশকে স্বাধীন করেছে। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু একটি স্বাধীন দেশের জন্য যা যা করা দরকার করে গিয়েছিলেন। তিনি যদি আর পাঁচটি বছর বেঁচে থাকতে পারতেন, তাহলে তখনই বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হতো।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়ন এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করার সক্ষমতা একমাত্র আওয়ামী লীগের রয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশবাসীর খাদ্য, মাথা গোঁজার ঠাঁই, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা এবং গ্রামীণ জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। পাশাপাশি ধনী-গরিবের বৈষম্যও কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগকে একে অপরের পরিপূরক আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এ দলটির নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা এই মর্যাদাকে ধরে রেখে দেশকে আরো সমৃদ্ধশালী এবং উন্নত করে গড়ে তুলতে চাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, কর্নেল (অব.) ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, মৃণাল কান্তি দাস, আফজাল হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন