শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ঝিনাইগাতীতে বোরোর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে

প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে এসকে সাত্তার ঃ ঝিনাইগাতীতে চলতি মৌসুমে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার-কৃষিবিদ, কোরবান আলী জানান, চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১২ হাজার ৫শ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ১৩ হাজার ৫শ হেক্টর। বেশি আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৫শ হেক্টর। কিন্তু ঝিনাইগাতীর কৃষিতে এ মৌসুমের সবচে বড় আবাদ বোরো ধান। চরম অর্থনৈতিক দৈন্যদশা সামাল দিয়ে ধার- দেনা করে বেশির ভাগ কৃষক ইরি-বোরো আবাদ করেছে। শীত মৌসুমেই এবার রোপণকৃত জমিতে সেচ দেয়া শুরু হয়েছে।
কিন্তু শুরুতেই নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যাওয়া এবং সোমেশ্বরী নদীর উজানে ৪টি অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকিয়ে এক শ্রেণীর পানি ব্যবসায়ীদের চুটিয়ে পানি বিক্রির পাঁয়তারার ফলে তীব্র সেচ সংকট সৃষ্টি, সর্বোপরি বিদ্যুতের চড়া মূল্য, লো-ভোলটেস ও নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সেচ নির্ভর ইরি- বোরো চাষিরা। তারপরও নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগে এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে কৃষি বিভাগ আশা প্রকাশ করেছেন। এ দিকে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ যেমন বেড়েছে তেমনই বেড়েছে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক লোড-শেডিংও। তারপরও নতুন-নতুন এসব নানাবিধ কারণে চলতি মৌসুমে বোরো আবাদ এবং ফলন অনেক বাড়বে বলে কৃষি বিভাগ এবং অভিজ্ঞ কৃষকগণ আশা প্রকাশ করেছেন। তারা আরো জানান, অন্যান্য বার এই সময়ে আবাদের মাত্র ৭০-৮০ ভাগ পূরণ হয়। এবার প্রায় শত ভাগ পূরণ হওয়ার পর ও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে, সুতরাং ভাল লক্ষণ এটি। কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ভূ-গর্ভস্ত পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে গেছে এতে তীব্র সেচ সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিসার কোরবান আলী আরো জানান, উপজেলায় মোট জমির পরিমাণ ১৮ হাজার হেক্টর। কৃষকরা নদী-নালা, খাল-বিল থেকে সেচ দিয়ে আবাদ করে ৫ হাজার হেক্টর জমি। গভীর-অগভীর নলকূপের পানিতে চাষাবাদ করে ৭ হাজার হেক্টর জমি। উপজেলায় ইরি-বোরো চাষে ব্যবহারযোগ্য ৪২টি গভীর নলকূপ, ১৭৪২টি অগভীর নলকূপ, এলএলপি ৬২৫টি সাব-মার্চ গভীর ৪টি এবং অগভীর ৭০টি। অপরদিকে প্রতাবনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, দাড়িয়ারপাড়, কুনাগাও, সুরিহারা, লঙ্কেশ্বর, সালধা, জড়াকুড়া, মাদারপুর, বিলাসপুর, দুপুরিয়া, ধানশাইল, বাগেরভিটা, নামাপাড়া, বালুরচর, বাইলেগাও, পাইকুড়া, মাইটেপাড়াসহ বিভিন্ন গ্রামের কমপক্ষে ৫-৬ হাজার কৃষক একমাত্র সোমেশ্বরী নদীর পানির উপর নির্ভর করে ওই নদী থেকে সেচের মাধ্যমে ইরি-বোরো চাষাবাদ করে থাকে। কিন্তু নদীটির উজানে ফি-বছর বেআইনী বাঁধ নির্মাণ করে চুটিয়ে পানি বিক্রি করে এক শ্রেণীর পানি ব্যবসায়ীরা।
ফলে এলাকার ফসল একমাত্র বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভর করে যতটুকু হওয়ার ততটুকুই হচ্ছে। তার পরও ফলনের মাত্রা বেশি হওয়ায় কৃষকরা ইরি-বোরো আবাদও করেছে বেশি এবং অত্যন্ত আগ্রহ নিয়ে, তাছাড়া এবার নতুন নতুন এলাকা বিদ্যুতায়ীত হয়ে সেচের আওতায় এসেছে, তাই কৃষি বিভাগ অত্যন্ত আশাবাদী লক্ষ্যমাত্রা যেমন ছাড়িয়ে গেছে তেমনই ফলনও বাড়বে। এ দিকে কৃষকরা অভিযোগ করে বলেছেন যে, বিদ্যুৎ এবং ডিজেলের সরকারি ভর্তুকি ও সুবিধা পাচ্ছেন না। তাই তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন