সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কমিটি নিয়ে কোন্দল, পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠনে ব্যর্থতা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে বিভিন্নমুখী দ্বন্দ্ব, দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা, জেলা কমিটির অনুমতি ছাড়াই উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগ, বেলাব আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ মনিরুজ্জামান খান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সমশের জামান রিটন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকার কারণে সঠিক সময়ে বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। ্উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে স্থানীয় এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের হস্তক্ষেপে সমশের জামান রিটনকে সভাপতি ও সিনিয়র নেতা মনিরুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে সম্মেলন শেষ করা হয়। সম্মেলনে নির্দেশ দেয়া হয় এক সপ্তাহের ভেতর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে তা জেলা কমিটির নিকট জমা দেয়ার।
এক পক্ষকালের মধ্যে বেলাব উপজেলা কমিটিকে অনুমোদন দেয়া হবে। কিন্তু দীর্ঘ প্রায় দেড় বছরাধিক কালেও বেলাব উপজেলা পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠণ করা সম্ভব হয়নি।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সহ-সভাপতি, যুগ্ম সম্পাদকসহ বিভিন্ন বিভাগীয় সম্পাদক ও কার্যনির্বাহী সদস্য নিয়ে সমঝোতা না হওয়ায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সুদুরপরাহত হয়ে পড়ে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী লেঃ কর্ণেল (অব:) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু বার বার তাগিদ দিয়েও বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করাতে পারেনি। উপরন্তু বেলাব উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে ব্যাপক স্থবিরতা দেখা দেয়। সাধারণ নেতা কর্মীরা জানিয়েছে, গত দেড় বছরে বেলাব উপজেলা আওয়ামী লীগ এলাকায় কোন মিটিং মিছিল পর্যন্ত করতে পারেনি। সাম্প্রতিককালে ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বাপর সময় থেকে দলীয়ভাবে ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরো চরমাকার ধারণ করে।
একে অপরের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ ছাড়াই নিজ নিজ মনগড়া মত দলীয় প্রার্থী বাছাই করে সেই তালিকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট জমা দেয়।
এরপর একে অপরের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে মনোনয়ন বানিজ্যের অভিযোগ তোলে। এ ব্যাপারে জেলা কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে মিলিতভাবে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে সে তালিকা জেলা কমিটির নিকট প্রেরণ করার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে সমঝোতার পরিবর্তে বিরোধ আরো ব্যাপক আকার ধারণ করে। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সমশের জামান রিটন সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে। চেয়ারম্যান লিটন সাংবাদিকদেরকে জানায় যে, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান টাকার বিনিময়ে ইউপি চেয়ারম্যান মনোনয়ন দিয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন