মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

হুমায়ূন আহমেদের সিনেমার নায়িকারা

| প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : নন্দিত কথাসাহিত্যিক নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ুন আহমেদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী গতকাল পালিত হয়েছে। গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়। নুহাশ পল্লীতে কোরআনখানি, কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সকাল থেকে নুহাশ পল্লীতে ভক্তদের ভিড় বাড়তে থাকে। হিমু পরিবহনে চড়ে আসেন হলুদ পাঞ্জাবি পরা হিমু। পাশাপাশি রূপাদের পদচারণায় প্রাণ ফিরে পায় নুহাশ পল্লী। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রিয় লেখককে স্মরণ করতে আসেন অনেক ভক্ত। হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি অনেক নামী দামী অভিনেতাকে নূহাস পল্লীতে দেখা গেছে। প্রশ্ন হলো কেমন আছেন হুমায়ূন আহমেদের সিনেমার নায়িকারা?
হুমায়ূন আহমেদ প্রতিভা শুধু গল্প-উপন্যাস লেখার মধ্যেই সীমবদ্ধ ছিলেন না। তিনি ছিলেন একাধারে নির্মাতা, নাট্যকার এবং গীতিকার। দেশের ভিতরেই নাটক ও সিনেমা নির্মাণে তৈরি করেছেন আলাদা ধারা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অর্ধশতাধিক নাটক এবং ৮টি ছবি নির্মাণ করেছেন। তার নির্মিত নাটক ও ছবিতে অভিনয় করে অনেক শিল্পীই দর্শকদের কাছে তারকা পরিচিতি পেয়েছেন; খ্যাতির শীর্ষে উঠেছেন। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার পরিচালনায় অভিনয় করা বেশ কয়েকজন নায়িকা প্রিয় মানুষটিকে স্মরণ করে জানিয়েছেন নিজেদের অনুভূতির কথা।
মেহের আফরোজ শাওন ঃ হুমায়ূন আহমেদের অভিনেত্রী স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন। বিটিভিতে শিশু শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও সংসার জীবনের পাশাপাশি তার (হুমায়ূন) প্রতিটি সৃষ্টিতেও জড়িয়ে রেখেছেন এই অভিনেত্রী। হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ৮টি ছবির মধ্যে ৪টির নায়িকাই হচ্ছেন মেহের আফরোজ শাওন। ছবিগুলো হচ্ছে- ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ‘দুই দুয়ারী’, ‘চন্দ্রকথা’ ও ‘শ্যামল ছায়া’। হুমায়ূন আহমেদ তার জীবনের পুরো জায়গাটাই দখল করে আছেন। প্রয়াত এ লেখক প্রসঙ্গে শাওন বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদের জননী’ ডকুমেন্টারি নির্মাণের সময় তার (শাওন) সঙ্গে প্রথম সরাসরি পরিচয় হয়। এরপর তো তার সঙ্গে দীর্ঘ জার্নি। চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে হুমায়ূনের তুলনা তিনি নিজেই। তার উপস্থাপনা শক্তি ছিল প্রখর। সহজ একটা বিষয়কে আকর্ষণীয় করে পর্দায় দেখাতে পারতেন তিনি। আর এটাই ছিল তার বৈশিষ্ট্য। মেহের আফরোজ শাওন দুই ছেলে নিষাদ ও নিনিতকে নিয়ে কবর জিয়ারতের পর বলেন, হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি জাদুঘর নুহাশল্লীতে হবে। আগামী ১৩ নভেম্বর হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে এর একটা অংশের উদ্বোধন হবে। হুমায়ূন আহমেদের আরেকটি স্বপ্ন ছিল ক্যান্সার হাসপাতাল নির্মাণ। সেটি আমার একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। যারা এ দেশের গুণীজন আছেন, নীতিনির্ধারক আছেন, তাদের কাছে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি, সবাই মিলে উদ্যোগ নিন।
বিপাশা হায়াত ঃ হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে আলোচিত এবং প্রথম ছবি হচ্ছে ‘আগুনের পরশমণি’। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। এ ছবিতেই নায়িকা হয়ে অভিনয় করেন বিপাশা হায়াত। টিভি নাটকে অভিনয় করে পরিচিতি পেলেও সিনেমার নায়িকা হিসেবে বিপাশার এটি প্রথম ছবি। এতে রাত্রি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। দেশের গেরিলা যোদ্ধার প্রতি রাত্রির প্রেম, যুদ্ধের সময় গেরিলা যোদ্ধাদের প্রতি সাধারণ মানুষের মমতা ও সমর্থনের প্রতিফলন ফুটে উঠেছিল এ ছবিতে। প্রিয় এ চলচ্চিত্রকারকে নিয়ে বিপাশা বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ স্যারের মতো এমন মেধাবী মানুষ খুব কম দেখা যায়। সৌভাগ্যক্রমে তার প্রথম চলচ্চিত্র আমারও প্রথম চলচ্চিত্র। প্রথম চলচ্চিত্রেই তিনি আমার কা থেকে যেভাবে অভিনয় বের করে নিয়ে এসেছেন সেটি আমাকেও ভাবাতো। তার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কখনই ভোলার নয়। তার পরিচালিত প্রথম ছবিতে অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি।
তানিয়া আহমেদ ঃ হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘নয় নম্বর বিপদ সংকেত’ নামের ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৬ সালে। এতে নন্দিনী চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তানিয়া আহমেদ। লেখকের চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রসঙ্গে নায়িকা তানিয়া বলেন, হুমায়ূন আহমেদ স্যার একটি ছবি নির্মাণ করার সময় প্রতিটি চরিত্র নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি অভিনয় শিল্পীদের সঙ্গে শেয়ার করতেন। আর এ জন্য যারাই তার সঙ্গে কাজ করেছেন সবাই অনেক কিছু শিখেছেন; প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করছি যে, স্যারের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেরেছিলাম।
বিদ্যা সিনহা মিম ঃ লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত ‘আমার আছে জল’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান বিদ্যা সিনহা মিম। ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। এতে দিলশাদ চরিত্রে দেখা যায় তাকে। হুমায়ূনের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তিনি বলেন, স্যারের ছবির নায়িকা হওয়া আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। একজন নির্মাতা হিসেবে স্যারকে যতটুকু দেখেছি তাতে মুগ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো পথ নেই। তার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। তাকে সব সময় আমার কাছে গল্পের মানুষ মনে হতো। গল্পে যেমন চরিত্র পড়ি তেমনই একটা চরিত্র ছিলেন তিনি আমার কাছে। হুমায়ূন স্যার লেখক, নাট্টকার, সিনেমা পরিচালন হিসেবেই শুধু নয় মানুষ হিসেবেও অনেক দিন আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন