স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে প্রায় দুই কোটিরও অধিক লোক কোনো না কোনোভাবে কিডনি রোগে আক্রান্ত। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় অকাল মৃত্যুবরণ করছে পাঁচজন। অন্যদিকে কিডনি রোগের চিকিৎসা এতই ব্যয়বহুল যে, এ দেশের শতকরা পাঁচ ভাগ লোকেরও এই ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার সাধ্য নেই। এমনই পরিস্থিতিতে আজ সারাদেশে পালিত হচ্ছে বিশ্ব কিডনি দিবেস। দিবসটির এবারে প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘শিশুদের কিডনি রোগ : শুরুতেই প্রতিরোধ’।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতি বছর মার্চ মাসের ২য় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস উদযাপন করা হয়। এই দিবসের উদ্দেশ্য ভয়াবহ কিডনি রোগ সম্পর্কে বিশ্বের মানুষকে সচেতন করা। যাতে প্রাথমিক অবস্থায় এই রোগের কারণ নির্ণয় করে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা যায়। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তিনি হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চিকিৎসকদের আরো নিবেদিত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।
দেশের কিডনি রোগের বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনী ডিজিজেস এন্ড ইউরোলজি’র পরিচালক প্রফেসর ডা. নূরুল হুদা লেলিন বলেন, কিডনি রোগে আক্রান্ত দুই কোটি লোকের বেশিরভাগই মূলতো ডায়াবেটিস, হƒদরোগ, উচ্চরক্তচাপসহ অনেক ননকমিউনিকেবল ডিজিজে আক্রান্ত। এসব রোগের কারণে তাদের কিডনি আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে এদের মৃত্যুর প্রধান কারণ কিডনি নয়, অনেকেই হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকে মারা যান। তিনি বলেন, কায়িক শ্রম আশংকাজনক ভাবে হ্রাস পাওয়ায় দেশের মানুষের ওপর অসংক্রামক রোগ ভীষণভাবে ভর করেছে। এর ফলে তারা কিডনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রফেসর লেলিন বলেন, তবে আক্রান্ত দুই কোটি লেকের অনেকেই চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এ বারের কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক শিশুর জš§গত ভাবেই কিডনি সমস্যা থাকে। অনেকে সরুনালী নিয়ে জš§গ্রহণ করে। এদের মায়ের পেটে থাকাবস্থায় বা শিশু অবস্থায় চিকিৎসা করাতে হয়। অন্যথায় এরা বেড়ে উঠলেও তাদের কিডনি প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়ে না। ফলে তাদের কিডনি ফেইলিওরের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
দিবসটি উপলক্ষে কিডনি এওয়ারনেস মনিটরিং এন্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাস্পস) ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে কর্মশালা আলোচনা সভা ইত্যাদি। জনসচেতনতামূলক এই কর্মশালা ও আলোচনা অনসভা অনুষ্ঠিত হবে আজ বিকাল ৩টায়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সন্টিটিউট বাংলাদেশ (আই.ই.বি) সম্মেলন কক্ষে।
এছাড়া সেভ লাইফ ফাউন্ডেশন ও গিফট লাইফ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ প্রচারাভিযান কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সংগঠনটি ঢাকার কিছু খ্যাতনামা স্কুলের শিক্ষার্থীর কাছে কিডনি রোগের সচেতনতা সম্পর্কিত সতর্কতা বার্তা পৌছে দিচ্ছে। এর পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেও এই কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন