বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অবাধ্য প্রার্থীতে বিপাকে আওয়ামী লীগ

প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তারেক সালমান : দল থেকে বারবার কড়া হুঁশিয়ারি দেয়া সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার পরিষদের ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী ঠেকাতে পারছে না আওয়ামী লীগ। বিদ্রোহী বা দলের ‘অবাধ্য’ এ নেতাকর্মীদের নিয়ে রীতিমত বিপাকে পড়েছে ক্ষমতাসীনরা।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে সরকারী দলের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ইতোমধ্যে দুইজনের প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, প্রতিপক্ষের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা এমনকি বাড়িঘরে হামলার ঘটনাও ঘটছে।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবাধ্য বা বিদ্রোহী প্রার্র্থীর সংখ্যাও একেবারে কম না। আগামী ২২ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য প্রথম ধাপের ৭২৬টি ইউপি নির্বাচনের মধ্যে তিন শতাধিক ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর মোকাবেলা করতে হচ্ছে সরকারী দলটিকে। দল মনোনীত ও দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অবাধ্য প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা নিয়মিত সংঘর্ষেও জড়িয়ে পড়ছে। বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থক-সহযোগীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে কেন্দ্রের বারবার হুঁশিয়ারিকে মূলতঃ আমলেই নিচ্ছে না তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এ কারণে দ্বিতীয় ও পরবর্তী ধাপের ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহীর সংখ্যা সংখ্যানুপাতে আরও বাড়ারই আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে সংঘর্ষ-সহিংসতার আশঙ্কাও দিন দিন বাড়ছে।
ইউপি নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার শুরু হতে না হতেই দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ-বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েই চলছে। সর্বশেষ সোমবার পটুয়াখালীতে বাউফলে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সরকারি দলটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার কারণে খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটছে। দেশের একাধিক নির্বাচনী এলাকায় খোঁজ নিয়ে এমনই তথ্য মিলেছে।

এদিকে, দলের পক্ষ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন বোর্ডের মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বা হলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে বারবার হুঁশিয়ারী দিয়েও থামানো যাচ্ছে না বিদ্রোহী প্রার্থীদের। আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই নির্বাচনী মাঠ গরম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যেসব ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে, সেগুলোতে উত্তেজনা বেশি।
এ বিষয়ে গতকালও (বুধবার) আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর ধানমন্ডির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাদের সমর্থনকারী, সহযোগিতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের যে কোন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গকারীদের সহযোগিতা করবে তাদের বিরুদ্ধেও অনুরূপ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, সংবাদ সম্মেলনে হুঁশিয়ারি দেয়া সত্ত্বেও পৌরসভা নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ‘দৃষ্টিগোচর’ হয় কার্যত এমন দৃশ্যমান কঠোর ব্যবস্থা না নেয়ায় ইউপি নির্বাচনে এর প্রভাব পড়ছে। তৃণমূলের বলে এমনিতেই এই নির্বাচনে সহিংসতার আশঙ্কা বেশি থাকে, তার ওপর এবার বিদ্রোহীদের কারণে এই আশঙ্কার মাত্রা বাড়ছে। অবশ্য আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীর সংখ্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দেয়া আছে। তবে আসন্ন ইউপি নির্বাচনে কয়েক স্তরে যাচাই-বাছাই করে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু তার পরও ঠেকানো যায়নি বিদ্রোহী প্রার্থী।
পৌরসভা নির্বাচনে শতাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী ছিল ক্ষমতাসীন দলটিতে। ওইসব বিদ্রোহীদের মধ্যে ২০ জন নির্বাচনে বিজয়ীও হন। অনেক জায়গায় বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে পরাজিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্থানীয় সরকার/ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ডের মনোনীত প্রার্থী। ওই নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের কথা শোনা গেলেও এরপর আর কোনো ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানা যায়নি। ফলে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহীর সংখ্যা ধারণাতীত বেড়েছে।
পৌরসভা নির্বাচনে দল মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে বড় কোনো সংঘর্ষ না হলেও ইউপি নির্বাচনে এর বিপরীত চিত্রই দেখা যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, ইউপি নির্বাচন একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের নির্বাচন বলে এখানকার কর্মীরা প্রার্থীর সরাসরি কর্মী কিংবা এলাকাবাসী-আত্মীয়-স্বজন। ফলে প্রার্থীর পক্ষে আনুগত্য ও মর্যাদার বিষয়টি এক ধরনের মরিয়া ভাবের জন্ম দেয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনায় এই চিত্রই ফুটে উঠেছে। সংঘর্ষের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে।
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন এক চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর সমর্থক শামসুল হক। পাল্টা হামলায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর তিন কর্মী আহত হন। পটুয়াখালীর বাউফলে মঙ্গলবার বিকেলে প্রার্থীদের এক সভায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারের (এসপি) সামনেই হামলায় আহত হয়েছেন উপজেলা পরিষদের  চেয়ারম্যানসহ তিনজন। এ ছাড়া বরিশাল, ভোলা, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরও অন্তত ৪০/৪২ জন। ভাঙচুর করা হয়েছে বাড়িঘর ও নির্বাচনী কার্যালয়।
পটুয়াখালীর বাউফলে গত মঙ্গলবার আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় প্রতিপক্ষের হামলায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মজিবুর রহমানসহ তিনজন আহত হন।
জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে উপজেলার ১১টি ইউপির চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থীদের নিয়ে এ সভা ডাকা হয়। ইউএনও মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের সভাপতিত্বে এতে জেলা প্রশাসক এ কে এম শামীমুল হক ছিদ্দিকী ও পুলিশ সুপার সৈয়দ মুসফিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। সভার একপর্যায়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম ফারুক উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুরকে কটাক্ষ করেন। প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর শুরু করেন ইব্রাহিম ফারুকের নেতৃত্বে কয়েকজন। মজিবুরকে রক্ষায় এগিয়ে এলে মারধরের শিকার হন দাশপাড়া ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান এনএন জাহাঙ্গীর হোসেন এবং নওমালা ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. শাহজাদা হাওলাদার। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। এর মধ্যে মজিবুরকে অচেতন অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভোলার লালমোহন উপজেলার রমাগঞ্জ ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার হোসেন শিকদার অভিযোগ করেন, তাঁর পাঁচকর্মী চৌমুহনী বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম মোস্তফার কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুর রউফের ১০ সমর্থকের ঘরবাড়িতে গত সোমবার ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। আবদুর রউফের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসাদুজ্জামানের সমর্থকেরা এতে জড়িত। তবে আসাদুজ্জামান তা অস্বীকার করেছেন।
পটুয়াখালী বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নে গত ৩ মার্চ রাত থেকে শুক্রবার ৪ মার্চ বিকেল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. কামাল হোসেন বিশ্বাস ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহাজাদা হাওলাদারের সমর্থকের মধ্যে দফায় দফায় হামলা, পাল্টা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে অর্ধশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে হামলা, মোটরসাইকল ছিনতাই, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এ সময় নারীসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়। এলাকায় এখনও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অপরদিকে দুই পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। চলছে অস্ত্রের মহড়া।
উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করেছে বিদ্রোহী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর কর্মীরা। মঙ্গলবার রাতে নুরাইনপুর বাজারে নৌকার প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বাচ্চু সাংবাদিকদের কাছে তার অফিস ভাংচুরের অভিযোগ করেন। পরে তার কর্মীরা বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে।
নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ মনোনীত সোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মালি মিজানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হন ১০ জন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় বুড়িরহাট এলাকার রশিদ মাস্টারের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে গুরুতর ৫ জনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
দেশে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। ২২ মার্চ প্রথম দফা ইউপি নির্বাচনের ভোট নেয়া হবে। ইতিমধ্যে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ দেয়া শেষ। এখন চলছে প্রচার-প্রচারণা। আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শুরু থেকেই নির্বাচনী মাঠ গরম হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যেসব ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে, সেগুলোতে উত্তেজনা বেশি।
আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে দাঙ্গা-হাঙ্গামা ঠেকাতে ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিবৃত্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে দলটি। যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। এর সমন্বয় করছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তার নেতৃত্বে সমন্বয় সেলের নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। তারা দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে বিদ্রোহী প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১১টি ইউনিয়নে রয়েছে দলটির এক বা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী। ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ১০টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পাঁচজন। পাবনার বেড়া উপজেলার নয়টি ইউপি নির্বাচনে প্রতিটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চারটি ইউপিতে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে আওয়ামী লীগের। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার এবং খুলনায় বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। এসব ইউনিয়নে ইতিমধ্যে বিদ্রোহী  প্রার্থী ও দলের মনোনীত প্রার্থীরা পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। অনেক স্থানে বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়রানির অভিযোগও এসেছে। এসব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে আওয়ামী লীগই নির্বাচনী মাঠে লড়াই করতে যাচ্ছে, যা দলীয় প্রার্থীর জন্য পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। সোমবার রাতে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলা আদাবাড়িয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আশ্রাফ ফকির।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাতে আব্দুল বারেকের বাড়িতে বৈঠক করছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সামসুল হক ফকির। বৈঠককে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জাহাঙ্গীরের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সামসুল হকের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১৬ জন আহত হন। তাদের মধ্যে আশ্রাফ ফকিরকে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঠিক একইভাবে দেশের কোথাও না কোথাও ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী এবং দল সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যে একের পর এক সহিংসতার ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।
ইতিমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থী ও দলের মনোনীত প্রার্থীরা পরস্পর সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। অনেক স্থানে বিদ্রোহী প্রার্থীদের হয়রানির অভিযোগও এসেছে। আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে আওয়ামী লীগই নির্বাচনী মাঠে লড়াই করতে যাচ্ছে, যা দলীয় প্রার্থীর জন্য পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা নেতাকর্মীদের।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, অনেক যাচাই-বাছাই করে তৃণমূলের মতামতের ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। এখানে বিদ্রোহী হওয়ার সুযোগ নেই। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে যারা প্রার্থিতা বহাল রাখবেন, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন