বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ষোড়শ সংশোধনী রিটের রায় ৫ মে

প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বৈধ কি না Ñ সেই প্রশ্নে আগামী ৫ মে রায়ের দিন নির্ধারণ করেছেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের নয়, আইনজীবীর করা একটি রিট আবেদনে দেয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বিশেষ বেঞ্চ রায়ের এই দিন ঠিক করে দেন।
গতকাল সপ্তদশ দিনের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও রিট আবেদনকারীর পক্ষে মনজিল মোরসেদ উপস্থিত ছিলেন।
গত ৫ নভেম্বর অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট ইমরান কাওসার, অ্যাডভোকেট মাসুম আলীম, অ্যাডভোকেট এখলাসউদ্দিন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট মো. সারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম বাবুল, অ্যাডভোকেট শাহীন আরা লাইলি ও অ্যাডভোকেট রিপন বাড়ৈ এ রিট আবেদনটি করেন।
সামরিক ফরমানের মাধ্যমে সংবিধানে যেসব পরিবর্তন আনা হয়েছিল সেগুলো বাতিল করে ’৭২-এর সংবিধানে ফিরে যাওয়াই ছিল পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য Ñ বলেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এই সংশোধনী কার্যকর করতে যে আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন তা এখনো হয়নি। তাই আইন হওয়ার আগেই এ বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে মামলা করার এখনও সময় হয়নি। রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে তিনি দু’ধরনের যুক্তি তুলে ধরেছেন শুনানিতে, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান সাংবাদিকদের। তিনি বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে একদিকে যেমন সংবিধানকে সামরিক ফরমানের মাধ্যমে করা সংশোধনী থেকে কলঙ্কমুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে এই সংশোধনী কার্যকর করতে যে আইন প্রণয়ন করতে হবে, তা এখনো সংসদে বিবেচনাধীন রয়েছে। সেই আইন পাস হওয়ার আগেই এ সংক্রান্ত রিট দায়েরের কোনো কারণ নেই।  
মাহবুবে আলম বলেন, ‘শুনানিতে আমরা বলেছি, ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণীত হয়েছিল জনগণের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে, যার ভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ও এপ্রিলের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। অথচ সেই সংবিধানে পরিবর্তন আনা হয়েছিল সামরিক ফরমানের মাধ্যমে, যা সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছিল। সেই কলঙ্ক থেকে সংবিধানকে মুক্ত করার জন্যই পঞ্চদশ ও ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়েছে বলে আমরা উল্লেখ করেছি।
অপরদিকে এই সংশোধনী কার্যকর এখনো হয়নি, কারণ এই সংশোধনীর মাধ্যমে কোনো বিচারপতিকে অপসারণ করতে হলে সংসদে সেটি দুই রেজুলেশন আকারে (দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের ভোটে) পাস হতে হবে। পরে রাষ্ট্রপতি সেই রেজুলেশনের ভিত্তিতে বিচারপতিকে অপসারণে পদক্ষেপ নেবেন। আর সংসদে রেজুলেশন পাস করবে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে। সেই তদন্ত কমিটি গঠন সংক্রান্ত বিলটি আইনে পরিণত করতে এখন সংসদের বিবেচনাধীন আছে।
তিনি বলেন, ‘সেই আইন পাস হলেই কেবল তখন বোঝা যাবে এতে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু আছে কি না। তখন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু আইনে থাকলে মামলার কারণের উদ্ভব ঘটবে। তাই এই আইন পাস হওয়ার আগে মামলা দায়েরের কোনো কারণ নেই। তাই এই আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।’
উচ্চ আদালতের বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। বিলটি পাসের পর একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়। ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ৫ নভেম্বর হাইকোর্টে এই রিট আবেদন করা হয়। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ওই সংশোধনী কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলের ওপর গতবছর ২১ মে শুনানি শুরু হয়। ওইদিন আদালত মতামত দিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে জ্যেষ্ঠ পাঁচ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করেন।
ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও আজমালুল হোসেন কিউসি এই শুনানিতে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন