বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতীয় পাঠ্যসূচি থেকে রবীন্দ্রসহ যা বাদ দিতে চায় সংঘ...

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মির্জা গালিব না-পসন্দ সংঘের। পাঞ্জাবের বিপ্লবী কবি পাসের কবিতাও অপছন্দ। এবার আপত্তি রবীন্দ্রনাথের চিন্তাদর্শেও! পাঠ্যপুস্তকে কাঁচি চালানোর জন্য লম্বা ফর্দ দাখিল করেছে আরএসএস-এর ছত্রছায়ায় থাকা এক সংগঠন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রভাবিত সংগঠন ‘শিক্ষা সংস্কৃতি উত্থান ন্যাস’-এর বক্তব্য, দশম শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে রবীন্দ্রচিন্তার উল্লেখ করে জাতীয়তাবাদ এবং মানবতাবাদের মধ্যে বিভেদ দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি-র কাছে পাঁচ পাতার প্রস্তাব দিয়েছেন ন্যাসের প্রধান দীনানাথ বাত্রা। এনসিইআরটি-র বিভিন্ন শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক থেকে কী কী বাদ দিতে হবে, দেওয়া হয়েছে তার তালিকা। প্রস্তাবে অনেক কিছু ছেঁটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেমন:
স ১৯৮৪ সালের দিল্লি-দাঙ্গা নিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ২০০৫ সালে জাতির তরফে সংসদে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন বলে যে উল্লেখ রয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে, তা বাদ দিতে হবে। স বিজেপিকে হিন্দুত্ববাদী দল বলা হয়েছে যে অনুচ্ছেদে এবং সাভারকর ‘হিন্দুত্ববাদী’ শব্দটি চয়ন করেছিলেন বলে যে উল্লেখ রয়েছে, ছাঁটতে হবে তা। স রামের জন্মস্থানে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল বলে হিন্দুদের কারও কারও বিশ্বাস – এই উল্লেখ বাদ দিতে হবে। স গোধরার ঘটনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ট্রেনে আগুন লেগেছিল, মুসলিমরা তা লাগিয়েছিল বলে সন্দেহ। দাবি, ‘লেগেছিল’ বলার বদলে ‘লাগানো হয়েছিল’ লিখতে হবে, ‘সন্দেহ’ কথাটি বাদ দিতে হবে।
স হিন্দি পাঠ্যবই থেকে ভাইস-চ্যান্সেলর, ওয়ার্কার, পোশাক, ইলাকা, তাকত, ইমান, বদমাশ ইত্যাদি শব্দ বাদ দিতে হবে। স বাদ দিতে হবে গালিবের পদ্য: ‘হামকো মালুম হ্যায় জন্নত কি হকিকত লেকিন/দিল কো খুশ রাখনে কো গালিব ইয়ে খেয়াল আচ্ছা হ্যায়’। স বৈদিক-উত্তর যুগে মহিলাদের সাধারণত শূদ্রের তুল্য বলে দেখা হতো। তাই ছাঁটতে হবে এই উল্লেখ ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস বই থেকে।
স বর্ণাশ্রম ব্যবস্থায় জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণরা তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপন্ন করত....মহাভারতের মতো অনেক গ্রন্থ এই ধারণা মজবুত করেছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই থেকে এটি বাদ দিতে বলা হয়েছে। স মোগল শাসকদের উদার, প্রজা দরদি হিসেবে দেখানো নিয়েও আপত্তি তোলা হয়েছে। রাজধানী দিল্লিতে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চায় অগ্রনী ভূমিকা নেন বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন সেনগুপ্ত। তার কথায়, ‘বিশ্বজুড়ে ভারতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কবিগুরুই দেশে প্রথম নোবেল এনেছেন। তাছাড়া জাতীয় সংগীত রচয়িতাকে অসম্মান করে গোটা দেশকে অপমান করা হচ্ছে। এমন অপচেষ্টার আঁচ পেলেই আমরা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন