শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভারতীয় রেলে খাবারসহ যাবতীয় পরিষেবা তলানিতে

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দু-এক মাস পরেই চালু হবে বুলেট ট্রেন। এই পদক্ষেপ নেওয়ার আগে রেলের আসল ছবি তুলে ধরলেন কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। বললেন, ঐতিহ্যময় ভারতীয় রেলের খাবার নাকি মানুষের খাবার যোগ্যই নয়! শুনে নড়েচড়ে বসেছে রেলমন্ত্রক।
ট্রেনে পরিবেশিত খাবার মানুষের খাওয়ার অযোগ্য! অপরিশুদ্ধ পানি দিয়ে দিব্বি চলছে রান্না। চলন্ত ট্রেনে রান্না করা খাবার ঢেকে রাখার কোনো ব্যবস্থাই নেই। খোলা আবর্জনার পাশে রাখা হয় খাবার। আবর্জনা পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার হয় না। রান্নাঘর জুড়ে পোকামাকড়, আরশোলা ও ইঁদুরের অবাধ ছোটাছুটি। সবমিলিয়ে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর একটা পরিবেশ। রেলের খাদ্য পরিবেশন ব্যবস্থা নিয়ে এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ কোনো বিরোধী দল বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার নয়। রীতিমতো তদন্ত করার পর এইসব মারাত্মক তথ্য তুলে ধরেছে ‘কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল’ বা ক্যাগ।
প্রায়শই দিল্লি কলকাতা যাতায়াত করেন সুস্মিতা সর্বাধিকারী। ক্যাগ রিপোর্টের খবর শুনে তিনি বললেন, ‘রেলের কথা বলতে গেলে একটা চূড়ান্ত অব্যবস্থার কথা বলতে হয়। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, রান্না করা খাবার রাখা হয় শৌচাগারের পাশে। আমাকে একবার যে চিকেন দেওয়া হয়েছিল সেটা মানুষের খাবার অযোগ্য। এখন শুনছি, শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় কম্বল দেওয়া হবে না। বিনিময়ে তাপমাত্রা ২৪ ডিগ্রি করা হবে। দেশের সবচেয়ে বড় পঞ্চায়েত পার্লামেন্টে ক্যাগ যে রিপোর্ট পেশ করেছে তারপর রেলমন্ত্রী রেলের গতি বাড়ানোর আগে রেলের সাধারণ পরিষেবা গুলো ঠিক করার ওপর জোর দিন’।
সংসদে এই সম্পর্কিত বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করেছে ক্যাগ। ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণে উঠেও এসেছে যে, রেলে দূষিত খাবার ও পুনর্ব্যবহৃত খাদ্যদ্রব্য ব্যবহার করা হয়। যাত্রীদের থেকে যথেষ্ট দাম নেওয়া হলেও ব্যবহারের সময়সীমা পার হয়ে যাওয়া জিনিসও ব্যবহার করা হচ্ছে। শুধুমাত্র রান্নায় ব্যবহৃত সামগ্রীই নয়, বোতলজাত দ্রব্যে অনিয়মের বিষয়ও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিভিন্ন স্টেশনে যে জলের বোতল বিক্রি করা হয়, তাও স্বীকৃত কোম্পানির নয়। অথচ তাই কিনতে বাধ্য হন যাত্রীরা। টেলিকম আধিকারিক দেবব্রত ব্যানার্জি বলছেন, মনে রাখতে হবে ভারতীয় রেলওয়ে বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন। প্যান্ট্রিকারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ছবি এর আগেও উঠে এসেছে। এখন ক্যাগ রিপোর্টে আরও একবার বাস্তব ছবিটা ধরা পড়েছে। ট্রেনে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। কিন্তু ব্যবস্থা কি নেওয়া হয়? আসলে রেলকর্মীদের মধ্যে দায়বদ্ধতা, ন্যায়বোধ এবং সততার অভাব এর প্রধান কারণ। শুধু খাবার নয়, যাত্রী নিরাপত্তা নিয়েও ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। এ রিপোর্ট তৈরির আগে রেল ও ক্যাগের আধিকারিকরা দেশের মোট ৭৪টি স্টেশন ও ৮০টি ট্রেনে যৌথ নজরদারি চালিয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, রেলে খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করার সময় কোনো বিলও দেওয়া হয় না। নির্দিষ্ট কোনো দাম লেখা মেনু কার্ডও যাত্রীদের দেওয়া হয় না। ফলে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া পানির বোতল বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা না থাকায় রেলের খাবার খেয়ে যাত্রীদের অসুস্থ হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। রেলমন্ত্রক সূত্রে খবর, ক্যাগ-এর রিপোর্ট আসার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে রেল।
অন্যদিকে, ক্যাটারিং পদ্ধতি নিয়ে খুব একটা মাথাব্যাথা নেই রেল কর্তৃপক্ষের। তারা ব্যস্ত রেলের গতি বাড়াতে। দিল্লি-মুম্বই এবং দিল্লি-কলকাতা রুটে গতিমান এক্সপ্রেসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটার করতে ভারতীয় রেল মন্ত্রক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যাপল-এর সঙ্গে জোট বাঁধছে। এই খবর জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। তিনি বলেন, ‘গতিমান এক্সপ্রেসের গতি বাড়াতে মন্ত্রকের ১৮ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব নীতি আয়োগ অনুমোদন করেছে। সূত্র : ডয়েচে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন