বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিবি রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় বিএনপির উদ্বেগ

অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবি

প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ বলেছেন, জাতির সর্বশেষ সঞ্চয়টুকুর উপরও অবৈধ সরকার থাবা দিয়েছে। নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
রিজভী আহম্মেদ বলেন, এটি ইতিহাসের সবচেয়ে ন্যক্কারজনক জালিয়াতির ঘটনা। সরকারের লোক জড়িত ছাড়া এত বড় জালিয়াতির ঘটনা কোনোভাবেই সম্ভব নয় বলে দেশবাসী বিশ্বাস করে। আশ্চর্য হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা এখন উড়ছে ফিলিপাইনের জুয়ার আসরে। এ সংক্রান্ত খবর আজকের জাতীয় দৈনিকেও ফলাও করে প্রচার হয়েছে। দেশের  অর্থনীতিকে রাবিশে পরিণত করার জন্য অর্থমন্ত্রী ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর দায়ী। ৮০০ কোটি টাকা হ্যাক হয়ে যাওয়ার পর এখনো তারা দায়িত্ব পালন করছে কোন অধিকারে? বিএনপি অবিলম্বে অর্থমন্ত্রী ও গভর্নরের পদত্যাগ দাবি করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবিও জানান রিজভী।
বিগত সময়ে পুঁজিবাজার, ডেসটিনি, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, রূপালী ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকার ‘লুণ্ঠন’ এর ঘটনা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ওই সব জালিয়াতিতে সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও শাসকদলের নেতৃবৃন্দসহ লাঘব-বোয়ালদের নাম উঠে আসলেও তাদের বিচার না হওয়ায় লুটপাটের ঘটনা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আগের লুটপাটের চমচম ও বাতাসাতে তাদের পেট ভরেনি, তাই তারা জাতির সর্বশেষ সঞ্চয়টুকুর উপরও থাবা বিস্তার করেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের লুট হওয়া ৮০০ কোটি টাকা তারই জলন্ত প্রমাণ। সমস্ত ব্যাংক আজ ফোকলা হয়ে পড়েছে।
ব্যাংক ডাকাতি ও ব্যাংকের এটিএম কার্ড নকল করে অর্থ লুট করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেভাবে ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটের নানা ঘটনা ঘটছে, তাতে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে সাহস পাচ্ছে না। দেশে আর্থিক খাত ভেঙ্গে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ ধ্বংস হতে আর সময় লাগবে না। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে অর্থ জালিয়াতির বিভিন্ন ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ লোপাটের ঘটনা সম্পর্কে রিজভী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ নেতৃবৃন্দ যারা গত তিন বছরে সরকারি কাজের বাইরে ঠুনকো অজুহাতে সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, হংকং, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, দুবাই ভ্রমণ করেছেন, তাদের পাসপোর্ট যাচাই কররে অনুসন্ধান করলেই এই আন্তর্জাতিক জালিয়াত চক্রের রাঘব বোয়ালদের সংশ্রব বেরিয়ে আসবে। সরকারের লোক দেখানো তদন্ত ও কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যর্থতার কারণেই ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় দেশের আর্থিক খাতে ধস নামবে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা।
নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশের কার্গো বিমান মালামাল পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপে দেশের গামেন্টস শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন রিজভী আহম্মেদ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন