যশোর পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান বিপিএম, পিপিএম (বার) ঘোষিত মাদক নির্মূলে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম সফলতার পথে। তার দৃঢ় অঙ্গীকার ছিল যশোর জেলাকে মাদকমুক্ত করা। সীমান্তবর্তী জেলাটি ভারতীয় ফেনসিডিলের ব্যবসা চলতো রমরমা। ছিল ট্রানজিট পয়েন্ট। সূর্য ডোবার সাথে সাথেই জেলার বেনাপোল, চুড়ামনকাঠি ও চৌগাছাসহ বিভিন্ন স্পটে বসতো ভারতীয় ফেনসিডিলের বাজার। মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে রাজধানী ঢাকায় অভিনবপন্থায় চালান করতো ফেনসিডিল। এখন সেই দৃশ্য অনেকটাই নেই। অব্যাহত ক্র্যাশপ্রোগ্রামে চিহ্নিত ৬ মাদক স¤্রাটের আস্তানা গুড়িয়ে সেখানে রোপন করা হয়েছে ফলের চারা। যশোরের ইতিহাসে এটিই প্রথম। পুলিশী অভিযানের পাশাপাশি জেলাব্যাপী চলছে গণসচেতনতা সৃষ্টি, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ-ছাত্র কাউন্সিল। তাছাড়া সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক করে অভিজ্ঞদের মতামত ও পরামর্শ গ্রহণ করেছেন এসপি। সমাজ দেহকে ক্ষতবিক্ষত করা মাদক সন্ত্রাস শূন্যের কৌঠায় আনতে লাগাতার যুদ্ধ করছেন যশোরের পুলিশ সুপার মোঃ আনিসুর রহমান। তিনি যশোরে যোগদানের পর থেকেই একের পর এক প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছেন। অভিযানের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে ইতোমধ্যে সফলও হয়েছেন। সেজন্য যশোরের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের কাছে এসপি আনিস হয়েছেন প্রশংসিত।
পুলিশ অফিস সুত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২১মে পর্যন্ত ১শ’দিনের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম সফল হওয়ায় আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আরো ১শ’১দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়। যেটি অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত মাদক বিক্রেতা আটক হয়েছে দেড় হাজার। মাদক মামলা হয়েছে সহ¯্রাধিক। এ সময়ে ৬জন মাদক সম্রাট বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ২৬ কোটি টাকার মাদক। মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করেছে প্রায় ৯শ’। চলছে ‘এসড্রাইভ’ ও ‘ডোর টু ডোর’ প্রোগ্রাম। ১৪জন চিহ্নিত মাদক সম্রাটের ছবিসম্বলিত পোস্টার বিলি করা হয়েছে। তাদের ধরিয়ে দিতে ঘোষণা করা হয়েছে পুরস্কার। চয়ে যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে তা হলো, স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে যশোরের ইতিহাসে দৃষ্টান্তস্থাপন করেছেন এসপি। তার উদ্যোগে জেলা পুলিশের ২সহ¯্রাধিক সদস্য একদিনের বেতন দিয়েছেন ১০ লক্ষাধিক টাকা। তিনি জানান, যুবসমাজ ধ্বংসকারী মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করে বহুলাংশে সফল হয়েছি। এসপি আনিসুর রহমান যশোরের মাটি থেকে মাদক নির্মূল করে ইতিহাস সৃষ্টি করতে চান। মাদকের পাশাপাশি সন্ত্রাস ও জঙ্গি এবং অপরাধ দমনে পুলিশ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে দিনরাত কাজ করছেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন পুলিশ সদস্য মাদকসহ যে কোন ধরণের অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকলে তাকেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে ১৭জন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সামনে কোরবানির ঈদ জেলার কোথাও যাতে কোন বিশৃঙ্খলা না ঘটে তার জন্য পুলিশকে পালাক্রমে ডিউটির ব্যবস্থা করেছেন গুরুত্বপুর্ণ স্থানে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন