বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.)

মাওলানা মুহাম্মদ রেজাউল করিম | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
এমন এক নাজুক সন্ধিক্ষণে ইসলামের মূলস্রোত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শলোকে পুরোজাতিকে শিক্ষিত করে গড়ে তোলার মহা প্রয়াসে আল্লামা সৈয়্যদ আহমদ শাহ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি (রহ.) নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া। তাঁরই ধারাবাহিকতায় আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (রহ.) এর নামে চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রায় শতাধিক মাদরাসা, মসজিদ ও খানকা শরীফ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সকল মাদরাসায় প্রায় লক্ষাধিক ছাত্র ও ছাত্রী বর্তমানে অধ্যয়নরত; যা ইসলামি শিক্ষা বিস্তারে এক বিরাট মাইলফলক।
ইসলামি সংস্কৃতির উন্নয়ন: (ক) সফল সংগঠক : সংস্কৃতি মানুষের আচার-আচরন, জীবন প্রনালী পরিশুদ্ধ ও নির্মল করে। তাই আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) তাঁর মুরিদ ও ভক্তদের সাংগঠনিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলামি সংস্কৃতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য নির্দেশের প্রেক্ষিতে গঠিত হয় গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ। মূলত এটি একটি সমাজ সংস্কার মূলক অরাজনৈতিক সংগঠন। বর্তমানে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্থান ও সুদূর মধ্যপ্রাচ্যে এর লক্ষ লক্ষ কর্মী-সমর্থকের হাতে বিভিন্ন স্থানে পরিচালিত হচ্ছে সুন্নিয়ত প্রচার, বাতিলের প্রতিরোধ এবং কাদিরিয়া ত্বরীকা প্রতিষ্ঠার শান্তিপূর্ণ কর্মকান্ড যা ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশে ভুমিকা রেখে চলেছে।
(খ) আদর্শ প্রকাশনা: প্রকাশনা কোন জাতি বা গোষ্ঠীর জাতীয় চেতনা, কৃষ্টি, আদর্শ, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ধরে রাখার উৎকৃষ্ট বাহন। একটি আদর্শকে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে প্রকাশনার বিকল্প নেই। আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (র.)উপলব্ধি করলেন যে,ত্বরীকতের কার্যক্রম, ইসলামী ভাবধারায় জনকল্যাণ সংস্থা, সংগঠন ও ইসলামী শিক্ষা, সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এগুলোর প্রচারের জন্য কিতাব, পুস্তক-পত্রিকা, সাময়িকী ইত্যাদির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তাই তিনি হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ সিরিকোটি (র.)’র ইন্তি-কালের পর মা’আরিফে লাদুন্নিয়ার প্রস্রবণ, উলুমে ইলাহিয়ার ধারক হযরত আবদুর রহমান চৌহরভী (রা.) রচিত ত্রিশ পারা সম্বলিত দুরূদ শরীফের গ্রন্থ “মজমু‘আয়ে সালাওয়াতির রাসূল” (স.)’র দ্বিতীয় ও তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এছাড়া ইসলামী সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতে এক অনন্য অবদান, আহলে সুন্নাত‘র আকিদা ও আমলভিত্তিক মাসিক মুখপত্র “তরজুমান-ই আহলে সুন্নাত” তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৭৮সন হতে নিয়মিত প্রকাশিত হয়ে আসছে। শুরু থেকে মাসিক তরজুমান সত্য প্রচার, ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃত বিস্তার এবং ভ্রান্তিরোধে এক দুরন্ত ভুমিকা পালন করে আসছে। খোদোদ্রোহী ও নবীদ্রোহী বাতিল অপশক্তির বিরুদ্ধে এ পত্রিকা এক প্রচন্ড বিদ্রোহ ও সত্যপথের এক উজ্জ্বল পাঞ্জেরী। ১৯৮৬ সাল হতে তাঁরই তত্ত¡াবধানে মজলিস-ই গাউছিয়া পাকিস্তান কর্তৃক “আনোয়ার-ই মোস্তফা (স.)” নামক একটি ইসলামী ম্যাগাজিন নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। কাদেরিয়া সিলসিলার ওয়াযিফা ও দো‘য়া সম্বলিত প্রামাণ্য সংকলন আওরাদুল ক্বাদেরিয়াতির রাহমানিয়া নামে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়। এছাড়া তাঁরই নির্দেশে আন্জুমান-ই রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া’র উদ্যোগে প্রকাশিত হয়। ১) আমলে শরীয়ত, ২) নযরে শরীয়ত, ৩) ছহীহ নামায শিক্ষা, ৪) শাজরা শরীফসহ অগণিত সাময়ীকী। যা ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতি উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রেখে চলেছে।
জশ্নে জুলূসে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (স.)’র শোভাযাত্রা ঃ ইসলামি সংস্কৃতি বিকাশে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রহ.) বহুবিধ পদক্ষেপের মধ্যে পবিত্র ঈদ-ই মিলাদুন্নবী (স.) উদ্যাপন ও জশনে জুলুস অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার। তিনি আল্লাহর প্রিয় রাসূল (স.)’র এ ধরাধমে আবির্ভাবকে কেন্দ্র করে ইসলামী শরী‘য়াত মোতাবেক পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে জশনে জুলুসের শোভাযাত্রা উদযাপনের মাধ্যমে রাসূল প্রেমিকদের জন্য এক অনন্য ইসলামী সংস্কৃতি প্রবর্তন করেছেন, যা উপমহাদেশে ইসলামী সংস্কৃতিতে এক নতুন অভ্যুদয় ও মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
১৯৭৪ সালে তিনি আঞ্জুমান-ই-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের পাকিস্তান থেকে পত্র মারফত প্রিয় রাসূল (স.)’র শুভাগমণের দিনে এ জুলূস বের করার নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে হযরত সৈয়্যদ আহমদ শাহ সিরিকোটি (রহ.)’র সুযোগ্য খলীফা আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ সওদাগর আল কাদেরী (রহ.)’র নেতৃত্বে চট্টগ্রাম শহরে এক বিশাল জুলুস বের হয়। চট্টগ্রাম বলুয়ার দিঘীর পাড়স্থ খানকাহ-ই কাদিরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া হতে আরম্ভ হয়ে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামেয়ার ময়দানে এসে মিলিত হয়। পরবর্তীতে তাঁরই নেতৃত্বে আঞ্জুমানের ব্যবস্থাপনায় ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রামে এবং ৯ রবিউল আউয়াল রাজধানী ঢাকায় প্রতি বৎসর ঐতিহাসিক এ জুলূস পালিত হয়। বর্তমানে তাঁরই সুযোগ্য সন্তান ও খলীফা রাহনুমায়ে শরী‘য়াত ও ত্বরীকত আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহির শাহ’র নেতৃত্বে ঢাকা ও চট্টগ্রামে এ জলূস ধর্মীয় ভাবাবেগে পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর প্রায় ৩০ লক্ষাধিক নবী প্রেমিক মুসলমান এতে অংশগ্রহণ করেন, যা ইসলামি সংস্কৃতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।
বিভিন্ন খতম শরীফ : ত্বরীকত পন্থীদের রূহানী শক্তি অর্জন, আমলের পরিশুদ্ধি ও এবাদতের স্বাদ বৃদ্ধির নিমিত্তে সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান, আমল ও যিকির আযকারের মাহফিলের প্রবর্তন করেন। যা ইসলামি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে নব উদ্দীপনা সৃষ্টি করে চলেছে। আযানের পূর্বে সালাত ও সালাম, খতমে গাউসিয়া শরীফ, খতমে গেয়ারভী শরীফ, খতমে বারভী শরীফ, সাপ্তাহিক খতম শরীফ ও বার্ষিক ওরশে কুল ইসলামি সংস্কৃতির উল্লেখযোগ্য সংযোজন হিসাবে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।
ওফাত: শরীয়ত ও ত্বরীকতের এ মহান দিকপাল অলিই কামিল আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্ (র.) ৭ই জুন ১৯৯৩ইং, ১৫ই যিলহজ্জ ১৪১৩ হিজরী সোমবার লক্ষ লক্ষ মুরীদান ও ভক্তদের শোক সাগরে ভাসিয়ে পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের হরিপুর জেলার সিরিকোট গ্রামের নিজ বাসভবনে ইন্তিকাল করেন। ইন্তিকালের সময় তাঁর বয়স ছিল ৭৭ বছর। জানাযার নামাযের ইমামতি করেন তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধান খলীফা রাহনুমায়ে শরীয়ত ও ত্বরীক্বত হযরতুলহাজ্ব আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ (ম.জি.আ)। তাঁকে তাঁর শ্রদ্ধেয় পিতা পেশোয়া-ই আহলে সুন্নাত আল্লামা হাফেয ক্বারী সৈয়্যদ আহমদ শাহ সিরিকোটি (র.)’র পার্শ্বে সমাহিত করা হয়। আল্লাহ পাক তাঁকে জান্নাতে সু উচ্চ মকাম দান করুন- এবং আমাদেরকে তাঁরই পদাংক অনুসরণের তৌফিক দিন আমিন।

 

আল-কুরআনে নৃবিজ্ঞানের তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ
মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
সেজন্য তারা জনসংখ্যার অভাব সভ্যতাকে টিকাতে পারছেনা বলে প্রতিবছর বিশ্বের অন্যান এলাকা থেকে তাদের দেশে অভিবাসী নিচ্ছে। সভ্যতাকে অনাগতকাল টিকিয়ে রাখার জন্য বৈবাহিক-নৈতিক জীবনের কোন বিকল্প নেই। মানুষ পশুর মতো প্রবৃত্তি চরিত্রার্থ করতে চাইলে সভ্যতা ও সংস্কৃতি টিকবে না। সেজন্যই কুরআনের সূরা মারয়ামে বলা হয়েছে: অতঃপর তাদের পরে এলা (অপদার্থ) পরবর্তীরা। তারা নামায নষ্ট করল এবং কৃপ্রবৃত্তির অনুবর্তী হল। সুতরাং তারা অচিরেই পথভ্রষ্টতা প্রত্যক্ষ করবে। কিন্তু তারা ব্যতীত, যারা তওবা করেছেন, বিশ্বাস, স্থাপন করেছেন। তারাই তো জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের ওপর কোনোরূপ যুলম করা হবে না।
ইতিহাসের সাক্ষ্য এমন যে, সভ্যতার ভিত্ যত মজবুত হোক না কেন, এর অনুসারী জনসংখ্যা যত বেশি হোক, তাতে যখন অনৈতিকতা প্রবেশ করে তার ধ্বংস অনিবার্য। এ ইঙ্গিত প্রদান করছে নিম্নোক্ত বাণী: তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না? করলে দেখতো তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কী হয়েছিল। পৃথিবীতে তারা ছিল এদের অপেক্ষা শক্তি ও কীর্তিতে প্রবলতর। অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিলেন তাদের অপরাধের করণে এবং আল্লাহর শাস্তি থেকে তাদের রক্ষার কেউ ছিল না। কুরআনের উপর্যুক্ত বাক্যসমূহে আল্লাহ তাআলা মুসা আ. হারুন আ., ইসমাইল আ. এবং ইব্রাহীম আ. প্রমুখ নবীদের কথা বলেছেন; যারা ছিলেন সত্যসন্ধানী এবং কৃপ্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সর্তককারী। উপর্যুক্ত আয়াতে কৃপ্রবৃত্তিপ্রবন অসংস্কৃত মানুষদেরকে তিরস্কার করা হয়েছে এবং সাংস্কৃতিক শুদ্ধতায় বিশ্বাসী নৈতিক স্বভাবের মানুষ ও প্রভুগতপ্রাণ মানুষদেরকে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে।
নৃবিজ্ঞান মানুষের দৈহিক বৈষিষ্ঠ্য ও সাংস্কৃতিক বিবর্তনশীলতা নিয়ে অগ্রসর হয়। আদিম সমাজের তথ্য সংগ্রহ করে তা নিয়ে নৃবিজ্ঞান গবেষণা করে; কিন্তু সমাজবিজ্ঞান আধুনিক শহুরে জীবন ও গ্রামীণসমাজ সম্পর্কে ব্যাখ্যা উপস্থাপন করে। সেজন্য নৃবিজ্ঞানের পরিধির সূ²তা সমাজবিজ্ঞান থেকেও গভীরতর। নৃবিজ্ঞান জৈব-সামাজিক বিজ্ঞান এজন্য যে, জীববিজ্ঞান, প্রাণীবিজ্ঞানসমেত এই বিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞানকে সংশ্লিষ্ট করে। সমাজবিজ্ঞানে জীববিজ্ঞান, জীবাশ্মুবিজ্ঞান, প্রাণীবিজ্ঞান পঠন-পাঠন না করলেও হয়। সমাজের উৎপত্তি, বিকাশ ও বিবর্তন সম্পর্কে জানার জন্যে সমাজবিজ্ঞানীকে নৃবিজ্ঞানের মুখোমুখি হতে হয়। প্রতœতত্ত¡ ও ভাষাবিজ্ঞান নৃবিজ্ঞানের অবশ্যপাঠ্য বিষয়: কিন্তু সমাজবিজ্ঞানে এই দুটো বিষয়ের পঠনের বাধ্যবাধকতা নেই। জীববিজ্ঞানের শাখাসমূহ হলো উদ্ভিদবিদ্যা (ইড়ঃধহু) ও প্রাণীবিদ্যা (তড়ড়ষড়মু)। জীববিজ্ঞান জীবের উৎপত্তি, বিকাশ ও বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করে। তবে প্রাণীর উৎপত্তি ও মানুষের বিবর্তন প্রক্রিয়ার হারানো সূত্র জানার জন্য জীববিজ্ঞানকে নৃবিজ্ঞানের দ্বারস্থ হতে হয়। এ হিসেবে এ দুটো বিজ্ঞান পারস্পরিকভাবে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা আলা মানুষের জীববিজ্ঞানিক উৎস সম্পর্কে সূরা আলোকে উল্লেখ করেছেন; পাঠ করুন আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট বাধা রক্ত থেকে।
নৃবিজ্ঞান সামাজিক সংগঠনের কেন্দ্রিকতার ব্যক্তির আচরণকে পর্যবেক্ষণ করে; অন্যদিকে মনোবিজ্ঞান ব্যক্তির ব্যক্তিক মানসিক বিকাশ বিবর্তনকে প্রত্যক্ষণ করে। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের মৌল বৈশিষ্ঠ্যের ধরণ ও প্রকৃতি সামাজিক পরিবেশের উপর নির্ভর করে। সে সামাজিক পরিবেশের প্রভাব ব্যাক্তির মনে কীভাবে কার্যকর হয় তা নিয়ে মনোবিজ্ঞান কাজ করে। নৃবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞান পরস্পর সংশ্লিষ্ট একারণেই যে, নৃবিজ্ঞানে শরীরবিদ্যা ও জীববিদ্যা সম্পর্কে পঠন জরুরি; ব্যক্তির মানস গঠনকে পর্যবেক্ষণের জন্যে শরীরবিদ্যার দ্বারস্থ হবার প্রয়োজন পড়ে। কুরআন শরীফের সূরা ইউসুফে জুলেখা যে নবী ইউসুফ আ. এর প্রতি অনুরক্ত হন, তা তার যুগপৎ মনস্তাত্তি¡ক ও শারীরিক আকর্ষণের কারণেই। এই প্রসঙ্গে কুরআন ভাষ্য উদ্ধৃতিযোগ্য: আর সে যে মহিলার ঘরে ছিল ঐ মহিলা তাকে ফুসলাতে লাগল এবং দরজাসমূহ বন্ধ করে দিল। সে মহিলা বলল: শুন! তোমাকে বলছি, এদিকে আস! সে বলল: আল্লাহ রক্ষা করুন, তোমার স্বামী আমার অভিভাবক। তিনি আমাকে সযতেœ থাকতে দিয়েছেন। নিশ্চয় সীমালঙ্গনকারীগণ সফল হয় না। ইউসুফ আ. এর আচরণ ও তার সাংস্কৃতিক শুদ্ধতার চেতনা এবং কুপ্রবৃত্তির সাথে পরনারী জুলেখার সঙ্গে সংযুক্ত না হবার কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি এখানে উচ্চারিত হয়েছে। এখানে সাংস্কৃতিক-নৈতিকতার অভিব্যাক্তি ঘটেছে।
(চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন