শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আরাকান স্বাধীন করাই রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের একমাত্র পথ -ইসলামী নেতৃবৃন্দ

মজলিসের কেন্দ্রীয় ত্রাণ কমিটি গঠন ও বিতরণ অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মায়ানমারে সামরিক জান্তা ও দানবি অং সং সূচির বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতিবাদের পাশাপাশি রোহিঙ্গা মজলুমদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত মায়ানমারের বিরুদ্ধে জিহাদ চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুত নিতে হবে বিশ্ব মুসলিমকে। একই সাথে মায়ানমারকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিতে তাদের সকল পণ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে এক্ষুনি নিষিদ্ধ করতে হবে মুসলিম দেশসমূহকে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নির্বাহী কমিটির সভায় এবং অন্যান্য সংগঠনের বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা যোবায়ের আহমদ আনসারী বলেছেন, বিশ্বব্যাপী মানবতাবাদিরা মায়ানমারের বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতিবাদ করছে। এ প্রতিবাদের পাশাপাশি মুসলিম বিশ্বকে মায়ানমারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে এবং রোহিঙ্গা মজলুমদের অধিকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের পাশে গিয়ে তাদের অবস্থা দেখেছেন এবং তাদের আশ্রয়, নিরাপত্তা ও সহযোগিতার ঘোষণা দেয়ায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এসংকটের সমাধান আরাকানের রাখাইনকে স্বাধীন করে রোহিঙ্গাদের বুঝিয়ে দেয়া আর এজন্য আর্ন্তজাতিকভাবে উদ্যোগ নিতে হবে। মায়ানমার বিশ্ব সমপ্রদায়ের কথা কর্ণপাত না করলে তাদের সকল পণ্য বর্জণ করতে হবে এবং মায়ানমারের সঙ্গে সকল ধরণের সম্পর্ক চিন্ন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, সৌদি আরবের নেতৃতে সামরিক্ব জোট হয়েছে। মায়ানমার ইসুতে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। বিশ্ব মুসলিম জানতে চায় তাহলে, এজোট কেন গঠিত হয়েছে? তিনি বলেন কোনো শর্ত আরোপ না করে যে কেউ রোহিঙ্গাদের সাহায্য এগিয়ে আসলে তাদের প্রশাসনিকভাবে সহযোগিতা করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব।
তিনি গতকাল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সভাপিতর বক্তব্যে এসব কথা বলেন। দলের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমীর মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা বদিউজ্জামান, মাওলানা আব্দুল আজিজ, অফিস ও বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, সহ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূইয়া, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, মাওলানা আব্দুন নূর, ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা এনামুল হক মূসা ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান।
সভায় রোহিঙ্গা মজলুমদের সাহাযার্থে সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরীকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় ত্রান কমিটি গঠন করা হয়।
কসরে হাদী খানকার শায়খ
কসরে হাদী খানকার শায়খ সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদী বলেছেন, বার্মার জান্তা ও সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের নেত্রী অং সান সুচি অবিলম্বে রোহিঙ্গা মুসলিম বিতাড়ন বন্ধ করে এদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গা মুসলমানদের ফেরত নিয়ে স্থায়ী আবাসভূমিতে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। অন্যথায় বাংলাদেশে বসবাসরত ৬ লাখ বৌদ্ধের বাড়ী-ঘর রোহিঙ্গা মুসলমানদের বরাদ্দ দিয়ে এদেশের বৌদ্ধদের মায়ানমার ফেরৎ পাঠানো হবে। সৈয়দ হাদী বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানদের জাতিগত নির্মূলে বর্বরতা ধৈর্য্যরে সীমা অতিক্রম করেছে। রোহিঙ্গাদের ফেরৎ না নিলে বাংলাদেশ এবং সকল মুসলিমদেশে বৌদ্ধদের নিরাপত্তা বিঘিœত হতে পারে। তিনি বলেন, আরাকানে খনিজ সম্পদের লোভে এবং চীনের গ্যাস পাইপ লাইনের কাজের জন্য রোহিঙ্গাদের বসবাসের বাড়ী-ঘর থেকে উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এসব সম্পদ লোভীদের মনে রাখতে হবে, মুসলমানদের আবাসভূমির মূল্যবান খনিজ সম্পদ আল­াহ তা’য়ালা মুসলমানদের জন্য বরাদ্দ করেছেন। এর ব্যতিক্রম হলে পরিণতি হবে অত্যান্ত ভয়াবহ। যার নমূনা মধ্যপ্রাচ্যে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে।
রোহিঙ্গা শিশুদেরকে ফুটন্ত ফুলের সহায়তা
ফুটন্ত ফুলের আসরের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত সমন্বয় কমিটি ত্রান তহবিলে ত্রিশ হাজার টাকা অনুদান বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব আল্লামা এম.এ মতিনের হাতে আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ফুটন্ত ফুলের আসরের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মাদ নুরুল হক চিশতীর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক অর্থ ইমরান হুসাইন তুষার, ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছাত্রনেতা সৈয়্যদ মুহাম্মাদ খোবাইব, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছাত্রনেতা ফরিদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আসর পরিচালক মুহাম্মাদ আলী আকবর, সাইফুল ইসলাম নিজামী, স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্য মুহাম্মাদ আবু সাঈদ। এ সময় নির্বাহী পরিচালক বলেন, মানবিক কারনে ইতিপূর্বে উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাটির তিস্তায় ও কুড়িগ্রামের উলিপুর ৩০০ পরিবারকে ত্রাণ সামগ্রী, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ৪৭ পরিবারকে নগদ ১০০০ টাকা করে প্রদানসহ জামালপুরের বকসীগঞ্জের ২নং বগারচর ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ১৫০ পরিবারের মাঝে কুরবানীর গরুর গোশত বিতরণ করা হয়েছে।
পুরো কার্যক্রমের বিভিন্ন সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় সহ-দফতর সচিব মাওলানা আব্দুল হাকিম, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রিদওয়ান আশরাফী, ঢাকার শ্যামলী বাইতুস সালাম মসজিদের খতীব মাওলানা ফরহাদ বুলবুলী, সেচ্ছাসেবক প্রধান ছাত্রনেতা মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহ সিদ্দিকী, মুখলেছুর রহমান, জাকারিয়া হাসান, মাওলানা মুহাম্মদ ইকবাল হোসাইন নকশেবন্দী মোজাদ্দেদী প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন