যশোর ব্যুরো : যশোর জেলা বিএনপি নেতৃবৃন্দ স্থানীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, যশোরে ‘গায়ের জোরের’ নির্বাচন হচ্ছে। যশোরের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার পদগুলো ‘নদীর চর দখলের মতো’ দখলের চেষ্টা করছেন ক্ষমতাসীনরা। ইতোমধ্যে যশোর সদরের তিনটি ইউনিয়নে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে জোর করে ভয়ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হয়েছে।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আগামী ২২ মার্চ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে এবং ৩১ মার্চ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই উপজেলাতেই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগে থেকেই বিএনপির প্রার্থীদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।
সর্বশেষ সদরের আরবপুর ইউনিয়নের বিএনপি প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম, দেয়াড়া ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী এনামুল হক চঞ্চল ও নরেন্দ্রপুরে বিএনপির প্রার্থী আবদুস সালামকে হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করা হয়েছে। এখন এই তিনটি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রত্যাহারের সময় থাকলেও রাতেও প্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মনোনয়ন প্রত্যাহার করিয়ে নিতে বাধ্য করেছে প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনের বিএনপি নেতৃবৃন্দ আরো দাবি করেন, সদর ও মনিরামপুরের সব ক’টি ইউনিয়নের বিএনপির প্রার্থী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ভয় দেখানো হচ্ছে। অনেকে ভোট চাইতে বাইরে বের হতে পারছেন না। প্রার্থী এবং কর্মীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার টি এস আইয়ুব, জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামছুল হক, সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সদর উপজেলা সভাপতি নুর উন নবী, নগর সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুনীর আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, বিএনপি নেতা গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
এদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য হওয়ায় ৩ ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। তারা হলেনÑ আরবপুর ইউনিয়নে শাহারুল ইসলাম, দেয়াড়ায় আনিসুর রহমান ও নরেন্দ্রপুরে মোদাচ্ছের আলী।
আরবপুর ও দেয়াড়া ইউনিয়নের রিটার্নিং অফিসার এস এম খালেদ সাইফুল্লাহ জানান, আরবপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২ জন বৈধ প্রার্থী ছিল। এর মধ্যে বিএনপি মনোনীত সিরাজুল ইসলাম ১৩ মার্চ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একক প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগ মনোনীত শাহারুল ইসলামকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। অপর দিকে দেয়াড়া ইউনিয়নেও ২ জন বৈধ প্রার্থীর মধ্যে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক চঞ্চল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একক প্রার্থী থাকায় আনিসুর রহমানকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
এছাড়া নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার এ টি এম মাসুদ হোসেন জানান, নরেন্দ্রপুরে তিনজন বৈধ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে বিএনপির আবদুস সালাম বিশ্বাস ও স্বতন্ত্র এস এম আমিনুর রহমান মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। একক প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের মোদাচ্ছের আলীকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন