চিকেন পকস্ বা জলবসন্ত এক ধরনের ভাইরাসজনিত রোগ। এই মারাত্মক ভাইরাস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে অন্য দেহে সংক্রমিত হতে পারে। সাধারণ চিকেন পকস্রে জীবাণু বা ভেরিসেলা জোস্টার নামের এই ভাইরাসটি শরীরে প্রবেশ করার পর ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। চিকেন পকস্রে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুরাই বেশি। তবে সব বয়সের লোকেরাই আক্রান্ত হতে পারে। অনেক সময় এই রোগ মহামারি আকার ধারণ করতে পারে।
লক্ষণ : সাধারণত চিকেন পকস্ হলে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে জ্বর, শরীর ব্যথা, শরীরে দানা ওঠা এবং দানার মধ্যে পানি জমা ও চুলাকানি হতে পারে। গুটিগুলো প্রথমে বুকে ও পিঠের বাহির হয়। পরে হাতে-পায়ে ছড়িয়ে পড়ে এবং মুখম-লে ও মাথায় বাহিরে হয়। গুটিকনাগুলো মটরের দানার ন্যায় দেখায়। জ্বরের তাপমাত্রা বুদ্ধির সাথে সাথে গুটিকনাগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে প্রকাশ পায়। এই পীড়ার প্রথমে চর্ম আক্রান্ত হয় পরে যকৃত, অন্ত্রাশয়, পীহা, ফুসফুস আক্রান্ত হয়।
চিকিৎসা : রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। লক্ষণ অনুযায়ী নি¤œলিখিত হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করা যেতে পারে।
যেমন : রাস টকস, বেলেডোনা, স্যারাসোনিয়া, ম্যালেন্ড্রিনাম, সালফার ইত্যাদি। চিকেন পকস্রে রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হচ্ছে রোগীকে আলাদা রাখা যাতে অন্যদের সংক্রমন না ঘটে। সাধারণত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত এই রোগ বেশি দেখা যায়। তাই শিশুদের প্রতি বেশি খেয়াল রাখা দরকার। অন্যান্য সংক্রামক ব্যাধির মতো চিকেন পকস্রে কার্যকর ভ্যাকসিন রয়েছে। আমাদের দেশেও এই ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।
৯ মাস বয়স থেকে ১২ বছর পর্যন্ত ১টা ডোজ এবং ১২ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ বিরতি দিয়ে পর পর ২টা ভ্যাকসিন দেয়ার প্রয়োজন পড়ে।
করণীয় : পথ্য হিসেবে তরল পুষ্টিকর অবস্থার, সাবু, বালি, দুধ গুটিকা শুকাইয়া গেলে ডিম, মাছ, ছানা প্রভৃতি। অতিরিক্ত তৈল ও চর্বি জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে।
ষ ডাঃ বিজওয়ানা হাসান
সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন