অবশেষে রাজধানীর মালিবাগ-মৌচাক সমন্বিত উড়াল সড়ক যান চলাচলের জন্য ১৫ অক্টোবর খুলে দিচ্ছে সরকার। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী নির্মাণাধীন উড়াল সড়কটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্থানীয় সরকার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার উড়াল সড়কের এখন চলছে ধোয়ামোছা, রং, বিদ্যুতের খুঁটি ও বাতি লাগানোর কাজ শেষ পর্যায়ে। সমন্বিত এ উড়াল সড়কের নিচের সড়কের সংস্কার কাজও কোনো কোনো এলাকায় শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব ইনকিলাবকে জানান, রাজধানীর মালিবাগ-মৌচাক সমন্বিত উড়াল সড়ক যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে চালু করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী ও উড়াল সড়কটির প্রকল্পের পরিচালক সুশান্ত কুমার পাল ইনকিলাকে জানান, আগামী ১৫ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উড়াল সড়কটি উদ্বোধন করবেন।
জানা গেছে, মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার উডাল সড়কটিতে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার সম্ভাব্য তারিখ ঠিক করা হয়েছে আগামী ১৫ অক্টোবর। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান জানান, উড়াল সড়কের নিচের সড়ক ও ফুটপাথের সংস্কার কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। উড়াল সড়ক উদ্বোধনের আগেই নিচের সড়কের সংস্কার কাজও শেষ করা হবে। চার লেনের উড়াল সড়কটি ছয়টি মোড় অতিক্রম করেছে। এগুলো হলো- সাতরাস্তা, বিএফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর ও মালিবাগ মোড়। এর মধ্যে মগবাজার, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজারে রেললাইন অতিক্রম করেছে এই উড়াল সড়ক প্রকল্প। ওই উড়াল সড়কটি তিন ভাগে করা হয়েছে। একটি অংশ সাতরাস্তা-মগবাজার-হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল। এটা নির্মাণ করেছে নাভানা কনস্ট্রাকশন। গত বছরের মার্চ মাসে এ অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর নিউ ইস্কাটন থেকে মৌচাক পর্যন্ত উড়াল সড়কের এক দিক খুলে দেয়া হয়। এই অংশ নির্মাণ করেছে তমা কনস্ট্রাকশন। তৃতীয় ধাপে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) মোড় থেকে কারওয়ান বাজার অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় গত ১৭ মে। এই অংশও তৈরি করেছে নাভানা কনস্ট্রাকশন। এখন খুলে দেয়ার অপেক্ষায় আছে উড়ালসড়কের মৌচাক-মালিবাগ-শান্তিনগর-রাজারবাগ-মগবাজার অংশ। এটা নির্মাণ করেছে তমা কনস্ট্রাকশন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে এই সমন্বিত উড়াল সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর মধ্যে কয়েক দফায় প্রকল্পের সময় বাড়ানো হয়। প্রথমে এই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। পরে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। শেষ পর্যন্ত ব্যয় বাড়তে বাড়তে এক হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় গিয়ে ঠেকে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা দিয়েছে সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)। দেশে এখন পর্যন্ত যে কয়টি উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে, তার মধ্যে মৌচাক-মালিবাগ উড়াল সড়কটি দৈর্ঘ্যে দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে আছে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়াল সড়ক (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন