বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিপর্যস্ত রোহিঙ্গা মানবতা

নাফ নদের তীরে -এক

স্টালিন সরকার/ শামসুল হক শারেক কুতুপালং থেকে | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

‘রোহিঙ্গাদের দেখতে যদি তোমরা সবে চাও/ কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এ যাও/ বাড়ি তো নয় ছাগলের খোয়াড় পলিথিনের ছানি/ একটু খানি বৃষ্টি হলে ঘরময় কাদা পানি/ একটু খানি হাওয়া এলে ঘর নড়বড় করে/ তারে তরে রোহিঙ্গারা থাকবে কতবছর ধরে?’ (আসমানী কবিতা অবলম্বনে) পল্লীকবি জসিমউদ্দিন আসমানীদের ঝড়বৃষ্টির দিনের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরেছেন। আসমানীরা ঝড়বৃষ্টিতে কষ্ট পেলেও তারা ছিলেন স্বাধীন। ইচ্ছা করলেই এখানে সেখানে যেতে পারতেন। চলাফেরায় কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। কিন্তু মিয়ানমারে গণহত্যা থেকে প্রাণ বাঁচাতে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সে স্বাধীনতা নেই। ঝড়বৃষ্টি যাই আসুন ঘরে বসে থাকতে হবে। নিদৃষ্ট যায়গার বাইরে তাদের যাওয়া নিষিদ্ধ। আদম সন্তান মানুষের শোয়ার ঘর নয়; শরণার্থীরা যেন বসবাস করেন গরু-ছাগলের ঘরে। যে ঘরে প্যাঁক-পানিতে একাকার।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও মগ বর্গীদের নির্যাতন থেকে প্রাণে বেঁচে বাংলাদেশের শরণার্থী ক্যাম্পে ভাগ্যবান রোহিঙ্গারা এসে ঘুপরি ঘরে পশুর মতো বসবাসের আশ্রয় পেলেও হাজারো সমস্যায় জর্জরিত। ভাষা বোঝে না, বাস ট্রাক দেখে পথ চলতে পারে না, পর্যাপ্ত খাবার-পানি নেই, স্যানিটেশন না থাকায় দুর্গন্ধে ক্যাম্পে দু’মিনিট টেকা যায় না। অথচ তাদের থাকতে হচ্ছে। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেয়ায় শরীরের ওপর দিয়ে গেছে ভয়ঙ্কর ধকল; তারপরও শিবিরে নিত্যনতুন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ক্যাম্পগুলোতে শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অনেকের উদ্বেগ উৎকন্ঠা দেখে জানা গেল মিয়ানমান সেনাবাহিনীর তান্ডব এখনো বন্ধ হয়নি। এক সঙ্গে দশ-বিশ- দুশ-পাঁচশ মানুষকে হত্যা করে এক যায়গায় পুতে রাখা হয়েছে। স্বাজনের সামনে স্বাজনকে হত্যা করা মগ-মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে পাস্তা ভাত। যারা এসেছেন তাদের অনেকের আপনজনকে হত্যা করা হলেও কারো কারো আপনজন বেঁচে আছেন না মারা গেছেন সে খবর কেউ জানেন না। তাই গরু-ছাগলের খোয়াড়ের মতো সাঁতসেঁতে ঘরে যায়গা পেলেও ‘মগদের হাতে পরিবারের আটক সদস্যদের জন্য উৎকন্ঠায় আছেন হাজার হাজার রোহিঙ্গা। এখনো প্রতিদিন সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। মানবিক কারণে বাংলাদেশ সরকার সবার জন্য যায়গা নির্ধারিত করলেও বড় একটি অংশেরই এখনো ঠিকানা মেলেনি। খোলা আকাশের নিচে, গাছের তলায় কিংবা কারও শিবির ভাগাভাগি করে থাকতে হচ্ছে হাজার হাজার শরণার্থীকে। বৃষ্টি এলেই যেমন তাঁবুতে জমছে হাঁটুপানি আবার প্রচন্ড খরতাপে তাবু হয়ে যাচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি।
কক্সবাজার থেকে সিএনজি মেরিন ড্রাইভ দিয়ে এগিয়ে চলছে। এক দিকে সাগরের কলোধ্বনি অন্যদিকে উচুনীচু পাহাড়। কয়েক মাইল চলার পর বাঁয়ে বাক নিলো সিএনজি। উদ্দেশ্য উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন। বাংলাদেশ টু মায়ানমার মৈত্রী সড়ক পাড় হতে না হতেই চোখে পড়লো মানুষের শ্রোত। উখিয়ায় পৌঁছেই মনে হলো জনসমুদ্র! খালি গায়ে মানুষ চলছে তো চলছেই। উখিয়ার কুতুপালং থেকে টেকনাফের নয়াপাড়া পর্যন্ত একই দৃশ্য। কক্সবাজার টেকনাফ মহাসড়কে (আরাকান সড়ক) ৩৫ কিলোমিটার মিয়ানমার থেকে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিছিল। চলমান মিছিলে লাখ লাখ মুখ। অধিকাংশের শীর্ণকায় শরীর। দুঃখ হতাশা আর ক্লান্তিতে মাখামাখি চেহারাগুলোর মধ্যে কোন মুখের সঙ্গে কথা বলবো? কার সাক্ষাতকার নেব? মুহূর্তেই আমি যেন কেমন হতাশায় ডুবে গেলাম। কথাবার্তা চলছে। অসংখ্য শিশু। পথে গাছের নীচে দাঁড়িয়ে কয়েক জন সাদা চামড়ার বিদেশী দামী আইসক্রীম খাচ্ছে। পাশেই বুক পেট সাদা ব্যান্ডেজে মোড়ানো ছোট্ট শিশুর মুখ চোখে পড়লো। আগুনে ঝলসানো ছোট্ট শিশু মোঃ আসাদ। আইসক্রিমের প্রতি লোভ। আবুল হোসেন, মোছাঃ জোহরা, নেসাবু খান এরকম হাজারও শিশু পাশে। সবাই দু’টি টাকার জন্য বিদেশীদের পিছু নিয়েছে। আমার চলার সঙ্গী হয়েছে ৩২ বছর বয়সী নুরুল আলম। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের এক কলেজে ক্যামিষ্ট্রিতে বিএসসি পাস। বৃদ্ধ পিতাকে রাখাইনের বুড়িডং-এ মৃত্যুর মুখে রেখে স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বেশ ভালোভাবেই সাংবাদিক এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে দোভাষী ভূমিকা পালন করেছেন। একের পর এক রোহমর্ষক সাক্ষাৎকার সংগ্রহ করে আনছেন।
কক্সবাজারে সঙ্গী হন টেকনাফের নূরুল কবির। মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি করেন। রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুর্দিনে কিছু সহায়তার জন্য দেশে এসেছেন। উখিয়ার দশ হাত-বিশ হাত পর পর সড়কের কিনারে কোথাও পাহাড়ের ঢালে কোথাও জঙ্গলের ভিতরে রোহিঙ্গা নারী শিশু কিশোর বসে ভিক্ষা করছে। নূরুল কবির যা পাচ্ছেন গোপনে দিচ্ছেন। কিছুদূর এগিয়ে যাওয়ার পর চোখে পড়লো মানুষের শ্রোত। এ যেন চৈত্রের রোদে মেলার পথে হাজার হাজার মানুষের যাত্রা। পার্থক্য শুধু মেলায় যারা যায় তাদের মধ্যে উদ্যোম-উচ্ছাস-আনন্দ থাকে; আর উখিয়ার পথে যাদের দেখা মেলছে তারা হতাশ, রোগাক্রান্ত বেদনাহত মলিন চেহারার। হাড্ডিসার শরীরের মানুষগুলোর কারো মুখে হাসি নেই। রাজ্যের দূচিন্তা যেন ভর করেছে সবার মধ্যে। এদের মধ্যে খালি গায়ের শিশু-কিশোর ও ময়লা বস্ত্র পরিহিত মহিলার সংখ্যাই বেশি। কুতুপালং পৌঁছার আগের চোখে পড়তে লাগলো শত শত পলিথিনের খুপড়ি লাইন ধরে তৈরি করা হয়েছে। কোথাও আবার হাজার হাজার। ওই সব খুপড়িতে বাস করেন নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতারিত রোহিঙ্গা নামের আদম সন্তানেরা। পাহাড়ের উচু নিচু ঢাল কোথাও সামান্য যায়গা খালি নেই। শত শত হাজার হাজার, লাখ লাখ খুপড়ি ঘর। ত্রিপল, পালিথিন এবং বাশ দিয়ে তৈরি ওই খুুপড়ির এক একটিতে বাস করছে ৫ থেকে ১০ জন আদম সন্তান। বৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেকের ঘরের ভিতরে কাদা। সেই কাদার ওপর ছেঁড়া মাদুর বিছিয়ে শুইয়ে রয়েছেন আয়শা বেগম। মিয়ানমারের রাখাইনের বুচিদং জেলার আয়শার পায়ে গুলি লেগেছে। ২২ বছর বয়সের আয়শা জানালো তার সঙ্গী তিনজন মহিলা পালিয়ে আসার সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। সে সন্তান সম্ভাবা হওয়ায় গুলি করে খেদিয়ে দিয়েছে। পুটিবুনিয়া শফিউল্লাহ কাটা শরণার্থী শিবির বড় পাহাড়ের ওপর। পাহাড়ের নীচ থেকে শুরু করে উপর পর্যন্ত হাজার হাজার পলিথিন আর ত্রিপলের তাবু। দূর থেকে দেখে মনে হয় কাঠাল ও আনারসের উপরিভাগ। সরেজমিনে উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, থাইংখালী, পালংখালী, টেকনাফের লেদা, শাপলাবাগ ও মুছনীর বেশ কিছু ক্যাম্প ঘুরে নানা সমস্যার চিত্র চোখে পড়লো। ছেলেবুড়ো অধিকাংশ শরণার্থীই অসুস্থ। এক বছর থেকে ১০ বছর বয়সী শিশু ছেলেমেয়েদের শতকরা ৯০ জনই খালি গায়ে ঘোরাঘুর করছেন। রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন এনজিও এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যানার সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে। এক একটা কোম্পানীর ১০ থেকে ১৫টি ব্যানার রাস্তার পাশে শোভা পাচ্ছে। এদের কয়টি ত্রাণ বিতরণ করেছে বোঝা সত্যিই দুস্কর। প্রখর রোদের তাপ সহ্য করতে না পেরে অনেকেই রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। বৃষ্টি হওয়ায় অনেক তাবুর পলিথিন ছিঁড়ে গেছে। কারো কারো ছাউনিতে হাটু পানি জমেছে। বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমা তাঁবুগুলোর মেঝে কিছুটা শুকিয়ে আসায় অনেকেই সেখানে আবার ফিরে যাচ্ছেন। তবে কিছু তাঁবু ঘুরে দেখা যায় তাঁবুর নিচে কাদাপানি জমে রয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের দুই পাশে কিছু দূর পরপর হাজার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী ত্রাণের অপেক্ষায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। রাস্তায় রাস্তায় বিভিন্ন এনজিওর ব্যানার। সরকারি-বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। কিন্তু সেবা দেয়ার চেয়ে তাদের চেষ্টা প্রচারণাই বেশি। টিভি ক্যামেরা না এলে তারা সেবা দিতে আগ্রহ দেখান না। তবে নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সেনাবাহিনী ত্রাণ দিচ্ছে। নিয়ম করে ত্রাণ বিতরণ হচেছ। তারপর অনেকেই গোপনে ত্রাণ দিচ্ছেন। ত্রাণের গাড়ি দেখা এবং যারা ত্রাণ দিতে পারেন তাদের দেখামাত্রই ছোটাছুটি করছেন জামা কাপড়হীন নারী, পুরুষ ও শিশুরা। টিউবয়েল একটি অথচ সেখানে একসঙ্গে ১০ থেকে ১৫ জন শিশু গোসল করছে। কোথাও কোথাও আশ্রয়শিবির তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায় অনেক রোহিঙ্গাকে। কুতুপালং ও বালুখালী সড়কের দুই পাশে চোখে পড়লো বিশাল বিশাল এলাকায় তাবু নির্মাণ করার চিহৃ। ঘাস মরে গেছে অথচ তাবু নেই। কয়েকজন জানানেল ওই সব এলাকায় তাবু তৈরি করে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে একজন উপজাতী প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে। তারাও এখন নতুন ঠিকানার খোঁজে পালংখালী থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিভিন্ন পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ছেন। চাল-চুলাহীন এই শরণার্থীরাই এখন চরম বিপাকে। যারা পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোরকম মাথা গোঁজার ঠিকানা খুঁজতে ব্যস্ত তারা আবার সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা থেকে এতোদিন বঞ্চিত হয়েছেন। কোন দিক সামলাবেন, তা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়তে দেখা গেছে অনেক শরণার্থী পরিবারকে। পালংখালী ক্যাম্পে ঠাই পাওয়া মোঃ সালাম, মোঃ ইয়াসিন জানান, তাদের স্থানীয় বাংলাদেশীরা সহায়তা করলেও পুরনো রোহিঙ্গারা নানা ভাবে নাজেহাল করছে। প্রথম দিকে নতুন রোহিঙ্গারা আশ্রয়ের জন্য এলে পুরনো রোহিঙ্গারা তাদের বাসায় রেখে নিজেরা মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ত্রাণ উঠিয়ে নিত। উলুুবুনিয়া রাস্তার মাথায় মনসুর আলী নামে এক রোহিঙ্গা জানালেন, শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া অনেক রোহিঙ্গা চরম বিপর্যয়কর অবস্থায় পড়ে গেছেন। নিজ দেশে অনেক রোহিঙ্গা ছিলেন অবস্থাসম্পন্ন। সমাজে বৃত্তবান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তারা সব সময় মানুষকে সহায়তা করেছেন। মানুষের বিপদে এগিয়ে এসেছেন। সবাই তাদের মান্য করতো। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা মুসলিম নিধনের জাঁতাকলে পড়ে সবকিছু হারিয়ে মুহূর্তেই তারা হয়ে গেলেন পথের ফকির। প্রাণ বাঁচিয়ে সীমান্ত পার হয়ে শিবিরে আশ্রয় নিলেও ত্রাণের জন্য ধাক্কাধাক্কি করা কিংবা কারও কাছে হাত পাতাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এ ধরনের অনেক পরিবারকে রাস্তার ধারে বিষন্নভাবে বসে থাকতে দেখা যায়। আবার অনেক শিশু-কিশোরকেও দেখা গেল তারা বোবার মতো অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছেন ত্রাণের বিতরণের দৃশ্যের দিকে। কিন্তু তারা নিজেরা ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়াচ্ছেন না। এ অবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হলে পুরোপুরি তারা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা। কারণ যারা ত্রাণের জন্য রাস্তায় লাইনে দাঁড়াতে লজ্জা পাচ্ছেন অথচ ঘরে খবার নেই তাদের তালিকা করে ত্রাণ দেয়া জরুরী। পালংখালীতে কথা হয় মিয়ানমারের বুসিদং থেকে আসা সাব্বিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বালুখালী টিভি রিলে সেন্টার থেকে আমাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। তাই পালংখালীর এই পাহাড়ে নতুন করে বসতি স্থাপন করতে হচ্ছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ঘুরে সঙ্গীদের নিয়ে বিপর্যয়কর অবস্থার মধ্যে পড়তে হলো। একদিকে প্রখর রোদ অন্যদিকে বৃষ্টি কোনোটাই এখন সহ্য করার মতো নয়। যারা ক্যাম্পে আছেন তাদের অবস্থা কেমন! থাইংখালীতে কথা হয় রাসিদং থেকে আসা মধ্যবয়সী নারী মাসুদা বেগমের সঙ্গে। তার স্বামীকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী গুলি করে মেরে ফেলেছে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে ৭ দিন হেঁটে চার মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কুতুপাংলয়ের একটি মাদ্রাসায় আশ্রয় নেন। সেখানে দুই দিন থাকার পর তাদের বেরিয়ে আসতে হয়। এখন থাইংখালীতে কিছু টাকার বিনিময়ে একটি আশ্রয়শিবিরে জায়গা পেয়েছেন। এখানে কত দিন থাকতে হবে জানেন না। ভুপেন হাজারিকার কালজয়ী গান ‘মানুষ মানুষের জন্য? জীবন জীবনের জন্য/ একটু সহানুভূতি কী/ মানুষ পেতে পারে না গো বন্ধু’। মানবিক কারণে হোক এবং মানুষ মানুষের জন্য হলেও হোক রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের পাশে প্রত্যেক বিবেকবান মানুষের দাঁড়ানো উচিত।
লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম হত্যাযজ্ঞের শিকার। পবিত্র কোরআনে একটি অন্যায়-হত্যাকে বিশ্বমানবতাকে হত্যার সমতুল্য বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই কোথাও কোনো হত্যাকান্ড ঘটতে দেখলে অন্যদের উচিত নির্যাতিত ব্যক্তির সাহায্যার্থে এগিয়ে আসা। আলাহ বলেন, ‘আর যে কারো প্রাণ রক্ষা করল; সে যেন (বিশ্বের) সব মানুষের প্রাাণ রক্ষা করল (সুরা : মায়েদা, আয়াত : ৩২)।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Mezba ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:২৫ এএম says : 0
রোহিঙ্গাদের ধর্ম যদি খ্রীষ্টান হত....?
Total Reply(0)
Yousuf Ali ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৩ পিএম says : 0
Try to stop the genocide in Myanmar, Send the U.N. peace keeping troops in Myanmar. Save the Rohinga Muslims.
Total Reply(0)
Md Yasin ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৫ পিএম says : 0
Send peace keeping forces to Myanmar to save innocent Muslim rohingya people belonging to Arakan Rakhine state in Burma now Myanmar. It is the best solution for all countries.
Total Reply(0)
Mukbul ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৫ পিএম says : 0
আল্লাহ আপনি তাদের রক্ষা ও সাহায্যে করুন, আপনি মহান
Total Reply(0)
Mithu Rahman ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩৬ পিএম says : 0
O allah save Muslim rohingay
Total Reply(0)
Md Azim Uddin ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:০০ পিএম says : 0
এই রহিঙ্গা ইস্যু আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে- কে আমাদের বন্ধু আর কে আমাদের শত্রু ।
Total Reply(0)
Arafat Rahman ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:০৬ পিএম says : 0
মিয়ানমারের মুসলিমদের লজ্জা না পুরো বিশ্বের মুসলিমজাতির লজ্জা আজ ওদের ধরেছে কাল আমাদের পালা শুধু সময়ের ব্যাপার ভারত চীন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ সব একই
Total Reply(0)
Srabonty Rahman Muna ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:০৭ পিএম says : 0
মিয়ানমারের রাখাইনে মানবিক বিপর্যয়ের জন্য সুচি সহ সেনাবাহিনীর প্রধান কসাই মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যেভাবে নারী, পুরুষ এবং শিশুদের নৃশংসভাবে নির্যাতন আর হত্যা করেছে, তা বিশ্বে আর কোনদিন হবেন, ওদের ঐ পৈশাচিক আচরণের জন্য বিশ্বের মানচিত্র থেকে ঐ নরপিশাচদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া উচিত, যাতে করে এমন নিষ্ঠুর, মর্মান্তিক দৃশ্য আর কোনদিন কাউকে দেখতে না হয়।
Total Reply(0)
Shakil Ahmed Shakib ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:০৯ পিএম says : 0
যদি oic, ভুক্ত দেশ গুলু মিলে এক দল দক্ষ সৈন বাহিনী থাকতো।তাহলে আজকে মায়ানমার, ইরাক,সিরিয়া,ফিলিস্তান, কাসমির, হাজার হাজার মুসলমানদের বিধরমিদের হাতে মরতে হতো না।
Total Reply(0)
Mukta Akter Jui ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:১৫ পিএম says : 0
বিশ্বের সব মুসলিম দেশের উচিত বাংলাদেশের মত রোহিঙ্গাদের সাহায্য করা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন