বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

উইকেট বুঝতে পারেননি মুশফিক

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে প্রথম টেস্টে হার অনেক কিছুই চোখে আঙ্গুল দিয়ে শিখিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। এক্ষেত্রে ঘুরেফিরে সবার আগে আসবে টস জিতে ব্যাট না নেয়ার বিষয়টা। যা ম্যাচ শেষে কাল অকপটে স্বীকার করলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
তবে মুশফিক এর ব্যাখ্যা দিলেন এভাবে, ‘সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন উইকেট হবে অনুমান করা কঠিন। যতই ফ্ল্যাট উইকেট হোক, যদি সুবিধা নিতে চান, সেটা প্রথম দুই ঘণ্টায় নিতে হবে। বলতে পারেন না টস জিতে ব্যাটিং নিয়েই ৫০০ রান করতে পারতাম। ঠিকভাবে খেলতে পারলে তৃতীয় দিনে অনেক ভালো রান করতে পারতাম (প্রথম ইনিংসে)। হ্যাঁ, বলতে পারতাম, ফ্ল্যাট উইকেটে ব্যাটিং (শুরুতেই) করতে পারতাম। তবে ফ্ল্যাট উইকেটে আমাদের বোলাররা বোলিং করতে পারবে, এটা কখনোই বিশ্বাস করি না।’
শুধু টসই নয়, মনস্তাত্বিক যুদ্ধেও প্রোটিয়াদের কাছে হারতে হয়েছে। ৪৯০ রানে ফাফ ডু প্লেসিসের ইনিংস ঘোষণা তোর তারই একটা অংশ। ডু প্লে সি ভালো করেই জানতেন এখন ইনিংস ঘোষণা করলে ওপেনিংয়ে নামতে পারবে না তামিম ইকবাল। বাংলাদেশও তো তখন প্রস্তুত ছিল না ব্যাটিংয়ে নামার জন্যে। নইলে টানা ৫ সেশন উইকেটকিপিং করার পর ইমরুলের সাথে ওপেনিংয়ে নামতে হয় লিটন দাশকে।
তবে এগুলো নিয়ে খুব বেশি কথা বলতে দেখা গেল না টাইগার অধিনায়ককে। ঢালাওভাবে তিনি ব্যার্থতার দ্বায় চাপাচ্ছেন দলের খেলোয়াড়দের উপর। বিশেষ করে ইঙ্গিতটা বোলারদের দিকে, ‘ফ্ল্যাট উইকেটে আপনি উইকেট না পান, ঠিক জায়গায় বোলিং তো করতে পারেন। সে জন্যই তো জাতীয় দলে খেলছেন। কিন্তু আপনি এমন নয়। তাহলে আমিও তো ছয়টা বলের মধ্যে দুইটা লাইনে ফেলতে পারতাম। প্রথম ইনিংসে বোলাররা আমাকে অনেক হতাশ করেছে।
তবে দ্বিতীয় ইনিংসের বাজে ব্যাটিংয়ের কথাও অকপটে স্বীকার করেন তিনি, ‘আমাদের ব্যাটিংয়ের ব্যাখ্যার কথা যদি বলেন, অবশ্য হতাশাজনক। সত্যি বলতে কি, অধিনায়ক হিসেবে আমি নিজেই ভুলে গেছি বাংলাদেশ শেষ কবে এমন ব্যাটিং করেছে। একশ রানের নিচে শেষ কবে অলআউট হয়েছি নিজেও মনে করতে পারছি না। খুবই খারাপ লাগছে।’
প্রতিপক্ষ ভালো খেললে পরাজয় মেনে নিতে আপত্তি নেই মুশফিকের। তাই বলে দলের এমন অসহায় আত্মসমর্পণ মেনে নিতে পারছেন না তিনি, ‘হারারও অনেক ধরন আছে। অবশ্যই ম্যাচ বাঁচানো খুব কঠিন হত। কিন্তু অন্তত দুইটা সেশন খেলার মতো সামর্থ্য তো আমাদের আছে। সেদিক থেকে বলব, অধিনায়ক হিসেবে, ব্যাটসম্যান হিসেবে খুব হতাশ। খুবই খারাপ লাগছে। এভাবে হারতে হবে কখনও ভাবিনি। এই হারের জন্য আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি।’
দুই-তিন বছর ভালো খেলে বাংলাদেশ দল যে সম্মান, শ্রদ্ধা অর্জন করেছে খেলায় অনেক উন্নতি করতে না পারলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সব খোয়ানোর শঙ্কা দেখছেন মুশফিকুর রহিম। প্রাপ্তির খাতায় লজ্জা ছাড়া আর কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন না তিনি। ৪২৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় সেনওয়েস পার্কে পঞ্চম ও শেষ দিন ৯০ রানে অলআউট হয়ে ৩৩৩ রানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। অতিথিদের দ্বিতীয় ইনিংস টিকে মাত্র ৩২.৪ ওভার। হাতের ৭ উইকেট নিয়ে শেষ দিনে সাড়ে ১৭ ওভার। দলের এমন পারফরম্যান্সে হতাশ মুশিফিক, ‘আমাদের আরেকটা সুযোগ আছে পরের টেস্টে। অবশ্যই অনেক বড় কিছু করে দেখাতে হবে নয়তো এরকম লজ্জা ছাড়া আমরা কিছুই নিয়ে যেতে পারব না। চেষ্টা থাকবে ঘুরে দাঁড়িয়ে যেন আমাদের সেরাটা দিতে পারি। গত দুই-তিন বছর ধরে আমরা যে সম্মান অর্জন করেছি সেটা যেন বজায় রাখতে পারি। সেটা যেন না হারাই সেই চেষ্টাই থাকবে।’
চোটের জন্য শেষ দিনে মাঠে ছিলেন না প্রতিপক্ষের সেরা বোলার মরনে মর্কেল। উইকেটে বোলারদের জন্য খুব বেশি কিছু ছিল না। এরপরও ৭ উইকেট নিয়ে দিন কাটিয়ে দিতে না পারার কোনো কারণ দেখেন না মুশফিক, ‘সত্যি বলতে কি, জেতাটা অসম্ভবই ছিল। বিশেষ করে দুই দলের প্রথম ইনিংস শেষে আমরা যে জায়গায় ছিলাম। কিন্তু ড্র করা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না।’ মুশফিক যোগ করেন, ‘উইকেট এমন কোনো আনপ্লেবল কিছু হয়নি বলে নিজেদের ওপর আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল। ভাবিনি একটা সেশনের মধ্যে ৭ উইকেট পড়ে যাবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
আশরাফুল সিদ্দিকী ৩ অক্টোবর, ২০১৭, ১১:৩৩ এএম says : 0
তা বুজবে কেন ? পুরষ্কারের টাকা তো ঠিকই গুনে গুনে আর ছেড়া টেকা দেখে বুজে নেয়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন