হাফেজ ফজলুল হক শাহ
শিলালিপির আলোকে আমেরিকায় ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা
ড. ফীল বারী তার “আমেরিকার ইতিকথা” শীর্ষক গ্রন্থে প্রচুর বৈজ্ঞানিক শক্তিশালী যুক্তি ও দৃষ্টান্ত দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, প্রাচীনকালে আমেরিকায় অন্তত দশটি স্থানে মাদরাসা ছিল। তন্মধ্যে নেভাদা, কলারোডা, নিউ মেক্সিকো, ইন্ডিয়ানা প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যের মাদরাসাসমূহ ইতিহাসখ্যাত। এসব মাদরাসাগুলোর প্রতিষ্ঠার সময়কাল প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ খৃষ্টাব্দ বলে অনুমান করা হয়। ডঃ ফীল বারী নিরলস গবেষণা চালিয়ে কিছু প্রাচীন নকশা ও দস্তাবেজে পেয়েছেন, যা থেকে প্রাচীনকালে আমেরিকায় মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রভূত ধারণা অর্জিত হয়। উদ্ধারকৃত নকশা ও দস্তাবেজে কুফী লিখন পদ্ধতিতে লেখা রয়েছে। সে সময় উত্তর আফ্রিকায় এ পদ্ধতিতে লেখা হত। বিধায় ড. ফীল বারী ধারণা করেছেন যে, যারা আমেরিকা পরিদর্শন করেছিলেন তারা ছিলেন উত্তর আফ্রিকার রেড ইন্ডিয়ানদের বিভিন্ন গোত্রের লোক। সেসব গোত্র হল ইরোকুইস, জুনজুইন, আনাসাজি, হুকুকাম ও উলমেক।
ড. ফীল বারী লিখেছেন, সাম্প্রতিককালে আমেরিকায় কিছু প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়। তন্মধ্যে আমেরিকার নেভাদায় “মুহাম্মাদ” লেখা প্রস্তর খ- পাওয়া গেছে যা এখন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সযতেœ সংরক্ষিত রয়েছে। উক্ত শিলালিপিটি উদ্ধারের সমসাময়িক কালের মধ্যে আরো বেশ কিছু প্রস্তর খ- আবিষ্কৃত হয়েছে। যেগুলোতে পরিষ্কার আরবী অক্ষরে “বিসমিল্লাহ” লেখা রয়েছে। সর্বপ্রথম টেক্সাস শহরে ১৯৩৫ খৃষ্টাব্দে কুফী পদ্ধতিতে লেখ্য যে প্রস্তর খ-টি পাওয়া যায় তাতেও শামছ (সূর্য) লেখা ছিল। এর পর আমেরিকার বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে সেগুলোর মধ্যে ১৮টি মার্কিন জাদুঘরে ও ৬টি কানাডীয় জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
ড. ফীল বারী এসব পুরাতন বর্ণমালা ও রেড ইন্ডিয়ানদের বর্তমান ব্যবহৃত বর্ণমালায় সাদৃশ্যও আবিষ্কার করেছেন। যা থেকে তাদের প্রকৃত বর্ণমালা যে এক সময় আরবী ছিল তা সহজেই দৃঢ়তার সাথে বলা যায়। “মালায়ার নাবিক ভ্রমণ স্মৃতি” লেখ্য একটি প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন আমেরিকায়র “সান-সালভাদার” নামক অঙ্গরাজ্যে কিছুদিন পূর্বে পাওয়া গেছে। এই নিদর্শনকে নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ড. ফীল বারী মন্তব্য করেন, দ্বাদশ খৃষ্টাব্দে কিংবা তারও পূর্বে আরবী ভাষী কিছু মুসলিম নাবিক ইন্দোনেশিয়া ও তার উপকূলীয় অঞ্চল ভ্রমণে খুবই আগ্রহী ছিলেন। হতে পারে তারা সেখান থেকে অব্যাহতভাবে পূর্বদিকে সামদ্রিক অভিযান চালিয়ে আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে এসে পৌঁছেছিলেন, বর্তমান সেখানে ক্যালিফোর্নিয়া ও নেভাদা অবস্থিত।
কলম্বাসের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও তার আমেরিকা আবিষ্কারের কথিত কিচ্ছা
ক্রিস্টোফার কলম্বাস ছিলেন ইতালীর এক দরিদ্র তাঁতীর ছেলে। স্থানীয় বংশের ঐতিহ্য অনুযায়ী কলম্বাস ছোট থাকতেই তাঁতশিল্পে দক্ষ ছিলেন। সুন্দর সুন্দর কাপড় বানাতে পারতেন তিনি। কাজের ফাঁকে ফাঁকে বই পড়ার প্রচুর নেশা ছিল তার। নিজের হাতের বোনা কাপড় নিয়ে তিনি মাঝে মধ্যেই পাড়ি জমাতেন কর্সিক, মেজর্কা প্রভৃতি দ্বীপে। এক দিন তিনি তার পণ্য সম্ভার নিয়ে কোন এক দ্বীপে গিয়েছিলেন। সেখানে দীর্ঘ অবস্থানের পর জনৈক ব্যক্তির সাথে তার সখ্য গড়ে উঠে। তার নিকট থেকে তিনি পড়ার জন্য একটি বই ধার করে ইতালীতে নিয়ে আসেন। বইটি পড়ার পর তার অন্তরে এই অভিপ্রায় সৃষ্টি হয় যে, আর তাঁত চালনা নয়, এবার তিনি সমুদ্র অভিযানে বের হবেন, নাবিক হয়ে জাহাজ চালাবেন। মূলত বইটি ছিল মুসলিম স্পেনের আল-হামরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত একটি অভিযাত্রা বিষয়ক গ্রন্থ।
সমুদ্র ভ্রমণ তো আর অর্থবিত্তহীনের পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য চাই প্রচুর টাকা-পয়সা। তাই তিনি তাঁত ফেলে প্রাণপনে ছুটে গেলেন রোম সম্রাটের সকাশে। ভারতের জলপথ আবিষ্কার করবেন, এ বাহানায় সাহায্যের আবেদন করলেন রাজার নিকট। কলম্বাস রাজাকে বোঝালেন পৃথিবীটা যেহেতু গোল সেহেতু ক্রমাগত পশ্চিম দিকে চলতে থাকলে অবশ্যই একদিন ভারত আবিষ্কৃত হবেই। রোম সম্রাট তার প্রস্তাবে অসম্মতি জ্ঞাপন করে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর কলম্বাস ছুটে গেলেন পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে রাজা দ্বিতীয় জনের নিকট। ব্যক্ত করলেন তার আগমনের হেতু। তিনিও তাকে রিক্ত হস্তে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর তিনি হাজির হলেন স্পেনের রাণী ইসাবেলার কাছে। জানালেন তার আগমনের অভিপ্রায়।
তখন স্পেনের মাটি থেকে মুসলমানদের অম্লান অস্তিত্ব মুছে ফেলার জন্য রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রাণী ইসাবেলা আদাজল খেয়ে লেগেছিলেন। বিস্তারিত শ্রবণে রাণী ইসাবেলা বললেন, আগে তো মুসলমানদের হাত থেকে স্পেনের কর্ডোভা উদ্ধার করি তারপর তোমার প্রস্তাব বিবেচনা করব।
কিন্তু রাণীর এতটুকু আশ্বাস কলম্বাসকে শান্ত করতে পারল না। তার যেন আর তর সয় না। শত আশা বুকে বেঁধে তিনি এবার একই আবেদন নিয়ে গেলেন লন্ডনের রাজা সপ্তম হেনরীর কাছে। হেনরী তাকে উন্মাদ বলে লন্ডন থেকে বের করে দিলেন। বিষণœ চিত্তে কলম্বাস প্রত্যাবর্তন করলেন নিজ ঠিকানায়।
চতুর্থ শতাব্দীর শেষ দশকের কথা। রাণী ইসাবেলা স্পেনে মুসলমানদের অন্যায়ভাবে গণহত্যা করে দখল করেছেন কর্ডোভা। আল হামরার লক্ষ লক্ষ কপি কিতাব অগ্নিকু-ে অথবা সাগর বক্ষে নিক্ষেপ করা হয়, যেসব গ্রন্থ মুসলিম মনীষীগণ কয়েক শতাব্দী ধরে রচনা করেছিলেন। উদ্দেশ্য মুসলমানদের গৌরবোজ্জ্বল অবদানকে অস্বীকার করা এবং মুসলমানদের জ্ঞান-বিজ্ঞানকে ধারা পৃষ্ঠ হতে মুছে দেয়া। ঘটনাক্রমে বেশ কিছু কিতাব রাণী ইসাবেলার হস্তগত হয়। তিনি একাগ্র চিত্তে একটি কিতাব অধ্যয়ন শেষে সন্ধান পান নতুন এ সম্ভাবনার। পত্র লিখে কলম্বাসকে স্পেনে ডেকে এনে দীর্ঘ আলোচনা শেষে তার সমুদ্র যাত্রার আয়োজন করে দেন। কলম্বাস আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে জাহাজ ভাসিয়ে ছুটে যান অজানার উদ্দেশে।
ক্রিস্টোফার কলম্বাস ক্রমাগত কয়েক দিন যাত্রার পর সদলবলে অবতরণ করলেন ফ্যানারী দ্বীপে। অতঃপর নির্জন দ্বীপে কাপড়ের ব্যবসা করতে গিয়ে সখ্য গড়ে উঠা জনৈক ব্যক্তির কাছ থেকে ধার নেয়া কিতাবের নির্দেশিত পথে তিনি পুনরায় যাত্রা করলেন। বস্তুত ভারতের জলপথ আবিষ্কার তো তার একটা বাহানা মাত্রা। তার ভ্রমণের আসল উদ্দেশই ছিল “আল-মারাকা” নামক সমুদ্র পাড়ের অজ্ঞাতপ্রায় দ্বীপটির অনুসন্ধান করা। ঐতিহাসিক পি কে হিট্টির মতে এই “আল-মারাকা” হতেই আমেরিকা নামের নির্ভুল ও নির্ভরযোগ্য ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
কয়েক মাস পর ক্রিস্টোফার কলম্বাস আমেরিকার সান সালভেদর অঙ্গরাজ্যে অবতরণপূর্বক বিজয়ের বেশে ফিরে এলেন স্পেনে। তখন তার মুখে রাজ্য জয়ের এক ঝলক হাসি খেলা করছিল। মনে হয় অর্ধ জাহান তিনি দখল করে ফিরেছেন। তার কথিত কৃতিত্বের জন্য তিনি অর্জন করলেন নাগরিক সংবর্ধনা এবং গ্রহণ করলেন রাজা ফার্ডিন্যান্ড ও রাণী ইসাবেলার কাছ থেকে অনেক মূল্যবান উপহার। তৎকালীন পৃথিবীর মানুষ অগ্রপশ্চাৎ অনুসন্ধান না করে জানল ক্রিস্টোফার কলম্বাস সমুদ্র মাঝে একটি নতুন দ্বীপ আবিষ্কার করেছেন। সেখানকার পরিবেশ মানববাসের উপযোগী। এভাবেই “আল-মারাকা” হল আমেরিকা, আর এ কথিত আমেরিকা আবিষ্কারক হয়ে গেলেন মাকু চালক ক্রিস্টোফার কলম্বাস।
পৃথিবী চ্যাপ্টা বলেই ইতালী, পর্তুগাল, স্পেন এবং বৃটেনের সকল সম্রাটগণই ক্রিস্টোফার কলম্বাসকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ ক্রিস্টোফার কলম্বাস বলেছিলেন, পৃথিবী গোলাকার। তাই তার ধারণা ছিল ক্রমাগত পশ্চিম দিকে চলতে থাকলে একটা কিছু মিলবেই। কিন্তু এত বড় আত্মপ্রত্যয় ও নিখুঁত থিউরী কোথায় পেয়েছিলেন তিনি? পৃথিবী যে গোল এ মতবাদটি অষ্টম শতাব্দী হতেই মুসলমানদের ছিল। ওদিকে মেজার্কা দ্বীপ হতে প্রাপ্ত বই অধ্যয়নে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের প্রত্যয় জন্মে ছিল যে, সত্যিই পৃথিবী গোলাকার। আর স্পেনে প্রাপ্ত বইটি পড়ে একই ব্যাখ্যা ও পথের সন্ধান পেয়েছিলেন রাণী ইসাবেলাও। কিন্তু তারা যে ব্যাখ্যা বা থিউরী পেয়েছিলেন এ ব্যাখ্যা কার শেখানো? মূলত এ নিখুঁত, নির্ভুল ও সত্য ব্যাখ্যাটি মুসলিম বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা কুরআন শরীফেও এ সত্যটির নানা ইশারা করেছেন। উক্ত থিওরীটির ব্যাখ্যা নিম্নে প্রদত্ত্ব হচ্ছে।
মুসলমানগণ যে থিউরীতে আমেরিকা আবিষ্কার করেছেন
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : মারাজাল বাহরাইনে ইয়াল তাকিয়ান বাইনা হুমা বারযাখুল্লা ইয়াব গিয়ান (৫৫/১৯-২০) অর্থ, “তিনি পাশাপাশি এ দরিয়া প্রবাহিত করেছেন। উভয় দরিয়ার মধ্য স্থানে রয়েছে দুর্বোধ্য অন্তরায়, যাকে অতিক্রম করে এক দরিয়ার পানি অপর দরিয়ার সাথে মিশতে পারে না।”
অন্যত্র আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ইয়াখরুজু মিন হুমাল লুলু ওয়ার মারাজান (৫৫/২১)
অর্থ, “উভয় দরিয়া হতে উৎপন্ন হয় মতি ও প্রবাল।”
আব্দুর রাজ্জাক, কাতাদা এবং ইবনুল মুনযিরের বরাত দিয়ে আল্লামা সূয়ূতী স্বরচিত “দুররে মানছুর” কিতাবে লিখেছেন, “উভয় দুটি দরিয়া হল বাহরে ফারেশ এবং বাহরে রুম।”
পারস্য উপসাগরকে বাহরে ফারেশ বলা হয়। এর ইংরেজি নাম চবৎংরধহ এঁষভ । ভৌগোলিক দৃষ্টিকোণ থেকে যা দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ায় অবস্থিত। আরব উপদ্বীপের মধ্যে অবস্থিত এ দরিয়াটি ওমান উপসাগরের একটি বর্ধিত অংশ। দুই লক্ষ তেত্রিশ হাজার বর্গকিলোমিটার এ সাগরটি ভারত মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত। দজলা (ঞরমৎরং) ও ফুরাত (ঊঁঢ়যৎধঃবং) পারস্য উপসাগরের অন্যতম প্রধান দুটি শাখা নদী। এটি মুক্তা সমৃদ্ধ ঝিনুকের ঐশ্বর্যে বিখ্যাত। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে পারস্য উপসাগর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলসীমা।
আর বাহরে রুম হল ভূমধ্যসাগর। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় গবফরঃবৎৎধহবধহ ঝবধ। এটি ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যবর্তী একটি সাগর। এর উত্তরে ইউরোপ, দক্ষিণে আফ্রিকা এবং পূর্বে এশিয়া। ভূমধ্যসাগরের আয়তন প্রায় ২৫ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। আটলান্টিক মহাসাগরের (অঃষধহঃরপ ঙপবধহ) সাথে যুক্ত এ দরিয়াটি জিব্রাল্টর প্রণালীর মাধ্যমে মরক্কো এবং স্পেনকে দ্বিখ-িত করেছে। এর একটি উপসাগরের নাম মর্মারা সাগর। যা তুরস্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেশটির এশিয়া ও ইউরোপ অংশকে ভাগ করে দিয়েছে। এ জন্য মর্মারা সাগরকেই স্তাম্বুলের একটি আন্তঃদেশীয় সাগরও বলা হয় যা কৃষ্ণসাগরের (ইষধপশ ঝবধ) সাথে এজিয়ান সাগরের (অবমবধহ ঝবধ) সংযোগ স্থাপন করে। মতি ও প্রবাল উৎপন্নের জন্য ভূমধ্যসাগর দুনিয়াজুড়ে বিখ্যাত।
আল্লামা ইবনে কাসীর তার বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে লিখেছেন, “ইবনে জারীর মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেন, বর্ণিত সাগর দুটি হল বাহরুস সামা (আকাশের সাগর) ও বাহরুল আরয (পৃথিবীর সাগর)।”
আল্লামা আলুসী “রুহুল মাআনী” কিতাবে আরব সাগর এবং নীলনদের কথা উল্লেখ করেছেন। ফাতহুল কাদীর গ্রন্থে বাহরুল মাশরিক (পূর্বাঞ্চলীয় সাগর) এবং বাহরুল মাগরীবের (পশ্চিমাঞ্চিলীয় সাগর) আলোচনা বিধৃত হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা ভূভাগে দুই প্রকার দরিয়া সৃজন করেছেন। উভয় দরিয়া একত্রে পাশাপাশি প্রবাহিত। কিন্তু উভয়ের পানি সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বতন্ত্রভাবে প্রবাহিত হয়। উভয় সাগরদ্বয় একত্রে প্রবাহিত হওয়া সত্ত্বেও উভয়ের পানি আল্লাহর কুদরতী পর্দা ভেদ করে মিশ্রিত হয় না। আর উভয় দরিয়া হতে উত্তোলিত হয় মতি ও প্রবাল। কিন্তু উল্লেখিত আয়াতসমূহের আরো অধিকতর সুন্দর ব্যাখ্যা হল- আটলান্টিক মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরের প্রতিবন্ধকতার দুর্বোধ্য প্রাচীর স্বরূপ দ-ায়মান উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা।
আটলান্টিক মহাসাগর (অঃষধহঃরপ ঙপবধহ) পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর। এর আয়তন ১০৬.৪ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার।
এটি পৃথিবীর প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকাজুড়ে অবস্থিত। এর পশ্চিমে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং পূর্বে ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশ। আর উত্তরে উত্তর মহাসাগর এবং দক্ষিণে দক্ষিণ মহাসাগর। (চলবে)
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন