মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নিরাপত্তা সমস্যা খুব দ্রুত নিরসন হবে

ব্রিটিশ প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকে বিমানমন্ত্রীর আশাবাদ

প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সমস্যা খুব দ্রুত নিরসন হবে। এ জন্য সিভিল এভিয়েশনসহ বিমানবন্দরে কর্মরত সবাই কাজ করছেন। যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও আমাদের সাথে বৈঠক করছেন। বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদারের জন্য তাদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
এছাড়া হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ‘রেড লাইন সিকিউরিটি কোম্পানি’ এবং ‘কন্ট্রোল রিস্ক সিকিউরিটি ফার্ম’ নামে দুটি ব্রিটিশ সিকিউরিটি কোম্পানির প্রতিনিধি দলের সাথেও সিভিল এভিয়েশন বৈঠক করেছে। মঙ্গলবার রাতে দুটি কোম্পানির পাঁচ সদস্যের পৃথক দুটি টিম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) মেম্বার অপারেশন এয়ার কমোডর মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে অ্যাবসেক সেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে তাদের স্বাগত জানান। তারপর গতকাল কয়েক দফায় তাদের সাথে বৈঠক হয়েছে এবং তারা সরাসরি বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সিভিল এভিয়েশনের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রেড লাইন যুক্তরাজ্যের একটি শীর্ষ এভিয়েশন সিকিউরিট কোম্পানি। স্ক্যানিং মেশিন, এক্সপ্লোসিভ ডিটেকটর ট্রেস (ইডিটি) মেশিনসহ বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তায় এই কোম্পানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কাজ করছে। তাদেরকে শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা দেখভাল করার দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিন অপারেটরদের প্রশিক্ষণসহ নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি প্রজেক্টে কাজ করছে রেড লাইন। গত মাসে বেবিচকের ৩০ জন স্ক্যানিং মেশিন অপারেটরকে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য রেড লাইনের একজন বিশেষজ্ঞ ঢাকায় আসেন বলেও জানা গেছে। যুক্তরাজ্যের এই দুটি কোম্পানি ছাড়াও আরো দুটি কোম্পানি ঢাকা আসবে।
সিভিল এভিয়েশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনার পর তারা বিমানমন্ত্রী ও স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বিদেশী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করলে নিরাপত্তাসহ সার্বিক মান বাড়বে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। নিরাপত্ত সংক্রান্ত সকল সংকট আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিরসন হবে। এমনটি আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের এভিয়েশন বিষয়ক কোম্পানির সাথে চুক্তি হবে এ সপ্তাহেই। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত কোম্পানি ছয় মাসের জন্য কাজ করলেও প্রয়োজনে সময় আরো বাড়বে।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রাথমিক বাছাইয়ে এগিয়ে আছে যুক্তরাজ্যের রেড লাইন সিকিউরিটি নামের প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু তারা কিভাবে কাজ করবে, কতদিন থাকবে এসব প্রশ্নও উঠেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় প্রয়োজনের তুলনায় শাহজালাল বিমানবন্দরে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জনবল আছে অর্ধেকের মতো। যেমন সিকিউরিটি সুপারভাইজার, অপারেটরসহ বিভিন্ন পর্যায়ে ১০৫৮ জনবলের মধ্যে আছে মাত্র ৫৮৬ জন। বাকিদের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। হাতে গোনা দুএকটি নতুন ছাড়া শাহজালালের বেশিরভাগ যন্ত্রপাতিই বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে অচল। তাই নতুন যন্ত্রপাতি কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কেনা হবে বিভিন্ন ধরনের স্ক্যান মেশিন, বিস্ফোরক শনাক্তকারীসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি।
এদিকে শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা রেডলাইনের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল বিমানবন্দর পরিদর্শন করেছেন। বিমানবন্দরে মন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন ওই প্রতিনিধি দল। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সে দেশের যে চারটি প্রতিষ্ঠানের নাম প্রস্তাব করেছে, রেডলাইন তাদের অন্যতম। তবে ওই তালিকার বাইরে থাকা কন্ট্রোল রিস্ক নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধিও ঢাকায় রয়েচেন।
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত চার প্রতিষ্ঠানের একটি গ্রুপ ফোর এসের বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম চৌধুরী গতকাল বলেছেন, দুবাই, হিথ্রোসহ বিশ্বের ১২০টি বিমানবন্দরে নিরাপত্তার কাজে গ্রুপ ফোরের অভিজ্ঞতা আছে। শাহজালাল আর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে এখনো সরকারের পক্ষ থেকে গ্রুপ ফোর এসের বাংলাদেশ কিংবা যুক্তরাজ্য দপ্তরের সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
নিরাপত্তার ‘আন্তর্জাতিক মানদ-ে ঘাটতি থাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে যুক্তরাজ্য ৮ মার্চ সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ৩১ মার্চ দুই দেশের সম্মত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নিরাপত্তা জোরদারের কাজ শুরু না হলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের যুক্তরাজ্যগামী সরাসরি ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে বলে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লেখা চিঠিতে বলেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন