বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথা এলাকায় কবি নজরুল সড়কের পশ্চিম পার্শ্বের আনুমানিক শতকোটি টাকা মূল্যের ২৮ শতাংশ জায়গা রাতের আঁধারে দখলে নিয়েছে কল্যাণ প্রসাদ পোদ্দার (সভাপতি) ও অশোক কুমার আগরওয়ালা (সাধারণ সম্পাদক) এর নেতৃত্বাধীন মারোয়াড়ী ধর্মশালা কমিটি। ফলে ওই জায়গায় থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত রুপালী ব্যাংকের জোনাল অফিস, রাজনৈতিক দল জেএসডি, বগুড়া শহর যুবদলের অফিস, দৈনিক উত্তরবার্তার পরিত্যক্ত অফিস, সাপ্তাহিক নতুন খবরের অফিস , বাটারফ্লাই এলজির ১টি শোরুম, মুন ফার্মেসি নামের একটি ওষুধের দোকান এবং ৩০/ ৪০টি হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর পৃথক পৃথক গার্মেন্টস আইটেম ও জুতা স্যান্ডেলের দোকান রয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাত ৩ টায় এই দখল সম্পন্ন হয় । সকালের দিকে এই দখলের খবরে সবাই হতভম্ব হয়ে পড়েছে!
এর আগে গত ৮ অক্টোবর বগুড়া প্রেসক্লাবে ওই ধর্মশালা কমিটির উদ্যোগে একটি সংবাদ সম্মেলনে বগুড়ার প্রভাবশালী হিন্দু নেতারা ঘোষণা দেন : ‘জায়গাটির ওপর তারা একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করবেন। এজন্য তারা একটি ডেভলপার কোম্পানির সাথে চুক্তিও করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, বাণিজ্যিক ভবনের একটি অংশে ধর্মশালা ও রেস্ট হাউসও থাকবে।
তারা দাবী করেন, ১৯৮২ সালে তারা এই ধর্মশালায় তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার রায় পেয়েছেন । তবে তারা মামলার রায় , জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র , ভূমি ও পৌর কর পরিশোধের কোন ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেননি। নদী বাংলা কমপ্লেক্সে নামের ডেভলপমেন্ট কোম্পানির কোন চুক্তিপত্র ও তারা দেখাননি।
একদিন পর ওই সম্পত্তির ওপর দোকানদারদের সংগঠন হকার্স ইউনিয়নের আয়োজনে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মারোয়াড়ী ধর্মশালা কমিটির উপস্থাপিত বক্তব্য মিথ্যা ও ভুয়া বলে উল্লেখ করেন । তাদের বক্তব্যের সপক্ষে হাইকোর্ট ও জজকোর্টে চলমান একাধিক মামলার ডকুমেন্ট উপস্থাপন করেন । সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন , ধর্মশালা কমিটির যদি কাগজ পত্র থাকেই তাহলে তারা তা দেখাক, কোর্টের রায় নিয়ে এসে পুলিশ দিয়ে আমাদের উচ্ছেদ করুক, তা না করে কেন তারা মনির নামের এক সন্ত্রাসী তার ভাড়াটিয়া সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমাদের হুমকি দিচ্ছে, মারপিট করছে?
বৃহস্পতিবার বগুড়ার একটি দৈনিকে মাড়োয়ারি ধর্মশালা কমিটির পক্ষে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞাপনে হকার্স ইউনিয়নকে ভুমিদস্যু, টাউট ইত্যাদি আখ্যায়িত করে বলা হয় ওদের উচ্ছেদ করতে কোর্টের রায় , পুলিশ লাগবে কেন?
বৃহস্পতিবার ওই বিজ্ঞাপনটি ছিল কার্যত দখলেরই লিখিত ইঙ্গিত। রাতেই যথারীতি ধর্মশালার পক্ষ নিয়ে মনির বাহিনীর লোকেরা জায়গাটি ঘিরে নিলো!
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই দখল প্রক্রিয়ার নেপথ্যে রয়েছে , একটি চিহ্নিত ভূমি গ্রাসী এনজিও। তাদের ফাইন্যান্সেও দখল ও ম্যানেজ প্রক্রিয়া চলছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পরে স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করবে ওই এনজিওর কন্সট্রাকশান ফার্ম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন