উত্তেজনা আরো বাড়লো : একমাসে প্রাণ গেলো ৬৬ জনের
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হেফাজতে থাকা অবস্থায় ৩০ বছর বয়সী এক শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। শাবির আহমেদ মুঙ্গা নামের ওই শিক্ষকসহ বেশ কয়েকজনকে গত বুধবার কাশ্মীরের পুলওয়ামার খ্রিউ গ্রামে সেনা ও পুলিশের এক অভিযানের সময় আটক করা হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার শাবিরের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর হয়েছে। এই ঘটনায় ভারত অধিকৃত অস্থিতিশীল কাশ্মীরে উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রীনগরের এসএমএইচএস হাসপাতালের চিকিৎসক নাজির চৌধুরী ফরাসি বার্তা সংস্থাকে বলেন, ২৪ জন গ্রামবাসী আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শাবিরের প্রাণহানির মধ্যদিয়ে কাশ্মীর উপত্যকায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দমননীতিকে কেন্দ্র করে নিহতের সংখ্যা ৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শাবির মুঙ্গা নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করলেও পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে আলাদা আলাদা দাবি করা হয়েছে। সেনা মুখপাত্র কর্নেল নিতিন এন জোশি দাবি করেছেন, শাবিরের মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে। আর পুলিশ বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনী আর বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শাবির নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, পাথর নিক্ষেপকারী বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে উত্তরাঞ্চলীয় বান্দিপুর ও কুপওয়ারা এলাকায় সরকারি বাহিনী বুলেট, পেলেট ও টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। আর প্রতিশোধমূলক হামলার আতঙ্কে নিজেদের নাম প্রকাশ না করে গ্রামবাসী বলেছেন, বুধবার খ্রিউ গ্রামে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে শাবিরসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে তাদেরকে আহত অবস্থায় সেনা হেফাজতে রাখা হলে সেখানে শাবিরের মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য গত ৮ জুলাই কাশ্মীরের অনন্তনাগের কোকেরনাগ এলাকায় সেনা ও পুলিশের বিশেষ বাহিনীর যৌথ অভিযানে হিজবুল কমান্ডার বুরহান ওয়ানিসহ তিন হিজবুল মুজাহিদ নিহত হওয়ার পর কাশ্মীরজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ কাশ্মীরিদের দাবি, বুরহানকে ভুয়া এনকাউন্টারে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে পুলওয়ামা ও শ্রীনগরের কিছু অঞ্চলে কারফিউ জারি করা হয়। পরবর্তীতে বিক্ষোভের মাত্রা বেড়ে গেলে কাশ্মীরের দশটি জেলা, এমনকি দূরবর্তী গ্রামেও কারফিউ জারি করা হয়। সেই থেকে আজও পর্যন্ত কাশ্মীরে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। কাশ্মীরে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াইকারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। আল জাজিরা, এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন