উত্তর : এক্ষেত্রে আমাদের ইমাম আবু হানিফা রহ. এর মত হলো, উনি আর নতুন বিবাহিত জীবনের চিন্তা না করে ফেলুক। কারণ, নিখোজ লোকটি যদি মারা গিয়ে না থাকেন, তাহলে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্তই ফিরে আসার সম্ভাবনা থেকে যায়। কাজেই সে মহিলা তার জন্য এতদিনই অপেক্ষা করবে, হোক সে অপেক্ষা ১০০ বছর। যার স্বামী মারা গেছে সে তো একটা সময়কাল পার হলেই নতুন বিবাহে আবদ্ধ হতে পাবে। ইসলামে বিধবার বিবাহে উৎসাহিতও করেছে। কিন্তু নিখোজ বিষয়টা জটিল, যদি ওই মহিলা নতুন বিবাহে আবদ্ধ হওয়ার পর তার প্রথম স্বামী ফিরে আসে, তখন সমাধান কি হবে। প্রথম স্বামী যদি তালাক না দিয়ে থাকে, ৬০ বছর পর এসেও স্ত্রী দাবী করতে পারবে। তবে, সর্বশেষ বিভিন্ন ইমামদের মতামত ও মাজহাবের ওপর ভিত্তি করে একটা সিদ্ধান্তে আসা গেছে যে, কারও মতে ০৪ বছর, কারও মতে ০৭ বছর মানে এনাফ টাইম অপেক্ষা করার পর নতুন কাউকে বিবাহ করতে পারবে। বর্তমান পৃথিবীতে নিখোজ হওয়াটা আরও কঠিন হয়ে গেছে। যদি কোথাও আটকা পরে যায়, খবর দেওয়া এখন খুব একটা কঠিন না। মোবাইল করা যেতে পারে, ইমেইল করতে পারে, আইনের আশ্রয় নিয়ে বাড়ীতে খবর পাঠাতে পারে, যে কোনো মাধ্যমেই খবর পৌঁছানো যেতে পারে। আর এজন্য ০৪ বছর, কারও কারও মতে ০৭ বছর অনেকটা সময়। সবার কেস তো আর একরকম হবে না। যেখানে যেমন কেস হবে, সেখানকার বিজ্ঞ মুফতির মাধ্যমে কেস স্টাডি করে ফায়সালা করতে হবে। তিনি ফতোয়া দিবেন, ০৪ বছর বা ০৭ বছর অপেক্ষা করার কথা তো বলাই হলো। এই সময় অপেক্ষা করে নতুন করে অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যাবে। এরপর যদি আগের স্বামী ফিরে আসে, বিচারক তাকে বলে দিবে, তুমি বিনা কারণে এতদিন স্ত্রীর থেকে দূরে থাকায়, কোর্ট তোমার বিবাহ বিচ্ছেদ করে দিয়েছে। এখানে একটা কথা আছে, কেউ কারাঘারে বন্দি হয়ে গেছে বা ক্রীতদাস হয়ে গেছে, ওই লোকটির তো কোনো দোষ নাই, আবার সে খবর পাঠাতেও পারবে না। মুক্তি পাওয়ার পর বা কোনোভাবে সে যদি দেশে ফিরে তার কি হবে, এই যুক্তির আলোকে ইমাম আবু হানিফা রহ. সারাজীবন অপেক্ষা করার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী ০৪ বছর বা ০৭ বছরের মাসআলা নেওয়ার সুযোগ আছে।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
inqilabqna@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন