আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে দেশে তৈরি হচ্ছে ফেসবুকের বিকল্প নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'যোগাযোগ'। শনিাবর এই তথ্য জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তার এই ঘোষণার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় বিশেষ স্থান করে নেয় বিষয়টি। অনেকেই উৎসাহ যুগিয়ে দেশীয় এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। ‘যোগাযোগ’ এর ভালো-মন্দ বিভিন্ন দিক নিয়ে নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে। আবার অনেকের মাঝে প্লাটফর্মটি নিয়ে নানা জল্পনাও দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে সমালোচকরা দেশীয় এই প্লাটফর্মে বাকস্বাধীনতা সংকুচীত হবে কিনা তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
শনিবার 'এন্টারপ্রেনারশিপ মাস্টারক্লাস সিরিজ ২'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী 'যোগাযোগ' নামে নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দেশের উদ্যোক্তারা তথ্য, উপাত্ত এবং যোগাযোগের জন্য নিজেদের মধ্যে একটি নিজস্ব অনলাইন মার্কেটপ্লেস ও গ্রুপ তৈরি করতে পারবে। উদ্যোক্তাদের বিদেশনির্ভর হতে হবে না।
আইসিটি বিভাগের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে জুনাইদ আহমেদ পলকের উদ্দেশ্যে মোহাম্মাদ মাহদি হাসান লিখেছেন, ‘‘খুব ভাল উদ্যোগ। আপনি আর জয় ভাই ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্যতম ২ সেনানী। অশা করব দেশীয় উদ্যোক্তাদের সবসময় ভাল একটা সাপোর্ট দিয়ে যাবেন যাতে বিশ্বে ভিন্ন টেক জায়ান্টকে একসময় টেক্কা দিতে পারে। আমাদের দেশে উদ্যোক্তা হওয়ার পথে অনেক বাঁধা। আবার কেউ ভাল কিছু চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দিলে তার পেছনে অনেকে লেগে যায় কীভাবে তাকে ধ্বংস করা যায়। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্বপ্ন দেখতে বলে তেমনি আপনি ও জয় ভাই সর্বোচ্চ খেয়াল রাখবেন যাতে কোন ষড়যন্ত্র দেশীয় কোন স্টার্টআপ বা উদ্যোক্তাকে ধ্বংস করতে না পারে।’’
প্রযুক্তিতে স্বনির্ভর হওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে মোহাম্মাদ জাকারীয়া লিখেছেন, ‘‘সারা পৃথিবীতে যেভাবে সাইবার হামলা হচ্ছে তা থেকে বাদ যাচ্ছে না আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ রত্ন শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার যেই প্রত্যয় হাতে নিয়েছেন তা বাধাগ্রস্ত করতে পারে মূল প্রযুক্ত পরিচালনা করা দেশগুলো। নতুন গ্লোবালাইজেশনের যেই যুগটা আমাদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে তাতে আমাদের অস্তিত্বকে মাথা উঁচিয়ে রাখার জন্য নিজস্ব প্রযুক্তি নিয়ে ভাবা দরকার। যেই প্রযুক্তিটি অন্যের সেটেলাইট দিয়ে পরিচালিত হবে না। আমাদের তথ্য আমাদের কাছেই থাকবে। তা না হলে আমরা হয়তো একদিন গিনিপিগের মত ব্যবহৃত হবো। মাননীয় মহোদয় এই বিষয়টিকে কি গুরুত্ব দেওয়া উচিত।’’
মিঠুন রায় লিখেছেন, ‘‘বাঙালি ব্যবহার করুক না করুক লকডাউন যেমন দেখতে বাইরে যেতে মন চায় ঠিক তেমনি কেমন বানাইলেন অ্যাপটা সেটা চেক করতেও সবাই অ্যাপসটি ইনস্টল করবে, ব্যবহার করবে কিনা সেটা অ্যাপসের কোয়ালিটির উপর নির্ভর করে। আপনারা ভাল কিছু করলে অবশ্যই পাবলিক খাবে। এতে আশা করি বিরোধীদলের কোন দোষ থাকবেনা।’’
তবে রেহান রিদয় আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘যেই দেশে ফোন আলাপ ফাঁস হয়ে যায় এবং তা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
সেদেশের মানুষ দেশীয় অ্যাপ ব্যবহার করবে না নিরাপত্তা কথা চিন্তা করে। সমালোচকদের আইডি সরকার যখন তখন ডিলেট করে দিবে।’’
শাহরিয়ার রহমান লিখেছেন, ‘‘ফেইসবুক সবার গোপনীয়তা রক্ষা করে,,,,আপনাদের যোগাযোগ গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারবে বলে তো মনে হয় না। সেক্ষেত্রে আপনাদের পদক্ষেপ নেওয়া থাকবে আশা করি। ধন্যবাদ।’’
সমালোচকদের জবাবে মোহাম্মদ রিপন লিখেছেন, ‘‘দেশের জিনিসের প্রতি সবার স্বাগত জানানো উচিত। দেশের জিনিস মানেই যে মান খারাপ,অচল,মেধাহীন এমন মনে করা দেশের পাব্লিকদের মানসিকতার উন্নয়ন প্রয়োজন। দেশে এখন মেধাবী ও পরিশ্রমি যুবক আইটি খাতে অনেক রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত ঠাট্টা না করে তাদের পরিশ্রমকে উৎসাহ দেওয়া। যতই সরকারি হক দিন শেষে এগুলো বানাচ্ছে আনাদের দেশেরি তরুনেরা। আমাদের উচিত তাদের কাজকে সম্মান করা।’’
মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক লিখেছেন, ‘‘এটা খুবই ভাল উদ্যোগ। যা দেশের কল্যাণ এ আসবে। আমরা যদি এ অ্যাপস ব্যবহার করি তাহলে দেশের অথনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। বৈদেশিক ঋনের বোঝা কিছু টা কমবে। উদ্যোক্তা দের ধন্যবাদ জানাই যেন দ্রুত এ কাজের প্রতিফলন ঘটে। বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই আইসিটি প্রতিমন্ত্রীকে।’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন