উত্তর : মানুষের ওপর জিন আছর করতে পারে। যদি প্রকৃতই জিন আছর করে, তাহলে এর তদবিরও আছে। জিন থেকে বাঁচার জন্য হাদীস শরীফে কিছু আমল আছে। এসব পালন করলে জিনের আছর থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। সকাল সন্ধ্যা দুই ক্বুল পাঠ করা, আয়াতুল কুরসী পড়া, দোয়া কালাম পড়ে ছোটো শিশুদের ফুঁ দেওয়া এসব হাদীসে বর্ণিত আছে। বিশেষ করে টয়লেটে গিয়ে প্রাকৃতিক জরুরত সারার সময় জিনের ক্ষতি থেকে বাঁচার দোয়াটি পাঠ করা কর্তব্য। এছাড়াও হালাল পশুর গোশত খেয়ে হাড়গুলো জিনদের জন্য ফেলে দেওয়া, কখনোই এসব হাড় ও কয়লাকে পেশাব পায়খানা দ্বারা নাপাক না করা, এসব জিনদের প্রতি মানুষের হক। ২৪ ঘণ্টায় মানুষ অদৃশ্য জিনের সাথে বসবাস করে। এখানে কোনো শরীয়ত বিরোধী অসদাচরণ মানুষের প্রতি জিনকে ক্ষেপিয়ে তুলে। অনেক সময় বিনা কারণেই কোনো অসৎ ও দুষ্ট জিন মানুষকে বিরক্ত করে। এখানে একটি বিষয় বুঝতে হবে, নিছক রোগীকে জিনে ধরেছে বলে মনে করি, আসলেই তাকে জিনে ধরেছে কি না? অনেক সময় শারীরিক বা মানসিক রোগীকে মানুষ অযথাই জিনে ধরা রোগী বলে মনে করে। তখন যত চিকিৎসা করা হয়, সবই ভুল করা হয়। সাধারণ রোগে তাকে ডাক্তার দেখাতে হবে, প্রকৃতই জিনে ধরলে সত্যিকার আলেম বা আমলকারী ব্যক্তিরই দোয়া ও তদবিরে তা দূর হয়ে যাবে। এসংক্রান্ত কোনো চিকিৎসকও জিন দূর করতে পারবেন। কোনো কোনো মানুষের দ্বারা জিন হাজির করা ও জিনকে বন্দী করার কথাও শোনা যায়। বিশেষ কারো পক্ষে এসব সম্ভবও হতে পারে। তবে, আমাদের সমাজে জিনের আক্রমন ও রোগীর ওপর অত্যাচার ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে অসৎ ও মিথ্যাবাদী কবিরাজরা নানা ছলচাতুরি করে। আসলে জিনের সমস্যা সমাধান করতে না পারলেও তারা রোগী ও তার অভিভাবককে বিভিন্ন রকম ভেল্কি দেখায়। বানিয়েও অনেক কল্প কাহিনী বলে। এক্ষেত্রে হাদীসে বর্ণিত সতর্কতা ও দোয়া কালাম পড়ে নিজেদের নিরাপদ রাখতে হবে। প্রকৃতই জিনের উৎপাত হলে বিশ্বস্ত আলেমের সহায়তায় তদবির করতে হবে। ভুলেও প্রতারক কবিরাজ বা ভন্ড হুজুরের কবলে পড়া যাবে না। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে জিনে ধরা রোগীর ৮০% শারীরিক ও মানসিক সমস্যার ফল। এক্ষেত্রে ডাক্তারী চিকিৎসা বেশি উপকারী।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
inqilabqna@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন