প্রশ্নের বিবরণ : আমার বাবা বিদেশ থাকেন (যদিও বর্তমানে জেলে আছেন)। আমি একজন কুরআনের হাফেজ। আলহামদুলিল্লাহ আমরা এমন কোনো প্রকার পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় নাই যে, আমার মায়ের কাজ করতে হবে। আমি অনেক ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি-যে এই উপার্জন আমাদের কোন প্রয়োজন নেই।
তা সত্ত্বেও আমার মা একটি এনজিও তে চাকরিরত আছেন। মায়ের যুক্তি হল- ১) আমার কোনোরকম পর্দার সমস্যা হচ্ছে না। ২) কোনো ধরা-বাধা ডিউটি করতে হয়না। ৩) সকালে গিয়ে হাজিরায় সাইন করে চলে আসলে হয়। ৪) এই টাকা দিয়া গরিব আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতা করা যায়। আমি দেখি আমার মা প্রতিদিন সকাল ৮টার সময় গিয়ে সাইনিং করে চলে আসে, সময়ে মাঝে মধ্যে ২০/৩০ মি. ফিল্ডে কাজ করে চলে আসে। আমার প্রশ্ন হল মায়ের উপার্জনের টাকা হালাল কি না?
উত্তর : প্রয়োজনে নারীদের উপার্জন করতে শরীয়ত নিষেধ করে না। এখন এই প্রয়োজন কী বা কতটুকু তা নির্ধারণের ভার সংশ্লিষ্ট মানুষটির উপর। আপনার মা যদি এই চাকুরীটি এবং এর নির্দিষ্ট ডিউটিকে জায়েজ মনে করেন, চাকুরীদাতাও তার এতটুকু সার্ভিসেই সন্তুষ্ট থাকে, পর্দাও লঙ্ঘিত না হয়, তাহলে তো তার এ কাজটি নাজায়েজ নয়। এর থেকে প্রাপ্ত ইনকামও হারাম নয়। অবশ্য নিজেদের প্রয়োজন না থাকলে অন্য মানুষকে সাহায্য করার জন্য একজন নারীর উপার্জন করা শরীয়তে কাম্য নয়। যেহেতু বিষয়টি আপনার মাননীয়া আম্মার, তাই এ বিষয়ে উনার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারেন আপনার আব্বা। তার নির্দেশ ও মতামত পালন করাই আপনার আম্মার কর্তব্য। আপনি মায়ের উপর জোর খাটাতে পারেন না। অবশ্য শরীয়তের দিক নির্দেশনা আপনি মায়ের সামনে বিনয়ের সাথে পেশ করতে পারেন, এর বেশী কিছু নয়। এখানে আপনার চিন্তা-ভাবনা ও আপনার মায়ের চিন্তা-ভাবনার সমন্বয় প্রয়োজন। শুধু জায়েজ নাজায়েজ মাসআলা বলেই এই বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে না। আপনারা নিজেরা আলোচনার মাধ্যমে মাসআলার প্রায়োগিক রূপরেখা বের করুন।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
inqilabqna@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন