স্মার্টফোন ব্র্যান্ড স্যামসাং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সাহায্যে স্মার্টফোনের ইতিহাস সমৃদ্ধ করে চলেছে। স্ক্রিন, ক্যামেরা, এআই প্রযুক্তির ব্যবহার সহ নানান বিষয়ে উদ্ভাবনের সাহায্যে মানুষের লাইফস্টাইলকে আগের চেয়েও সহজ করছে স্যামসাং। আজ আমরা জানবো স্যামসাংয়ের এমনই ১০টি উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সম্পর্কে।
অ্যামোলেড ডিসপ্লে: স্মার্টফোনে বড় স্ক্রিনের ডিসপ্লে ব্যবহারের সুযোগকে সবার জন্য সহজলভ্য করেছে অ্যামোলেড ডিসপ্লে। স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসেবে স্যামসাংই সর্বপ্রথম স্মার্টডিভাইসে অ্যামোলেড ডিসপ্লে ব্যবহার করে। বর্তমানে এই অ্যামোলেড ডিসপ্লে আরও আধুনিক করতে কাজ করে যাচ্ছে স্যামসাং।
ডিজিটাল ডিভাইসে অ্যানালগ টাচ: ২০১১ সালে স্যামসাং গ্যালাক্সি নোটের সাথে প্রথমবারের মত “এস পেন” নামক উদ্ভাবনী প্রযুক্তির কলম নিয়ে আসে ব্র্যান্ডটি। ফলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে যারা ডিজিটাল ডিভাইসেও অ্যানালগের ছোঁয়াকে ধরে রাখতে চান, তাদের জন্য ব্যাগে করে নোটবুক-কলম নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর প্রয়োজন ফুরিয়ে আসে, আর আরম্ভ হয় ফোনের স্ক্রিনেই মনের যত কথা আর চিন্তার আঁকিবুঁকি!
স্যামসাং নক্স, মোবাইলের বডিগার্ড: নিত্যদিনের সঙ্গী মোবাইলটিতে আমাদের ব্যক্তিগত, পেশাগত এবং গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্যই আমরা সংরক্ষণ করে রাখি। তাই নিরাপত্তার প্রশ্নেও আমাদের ব্যবহার করা ডিভাইসকে হতে হবে আশ্বস্তিদায়ক ও সংবেদনশীল। এই দিকটি বিবেচনায় রেখে স্যামসাং নিয়ে আসে স্মার্টফোনের জন্য এর অফিশিয়াল নিরাপত্তা বলয় “স্যামসাং নক্স”, যা ডিভাইস থেকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তথ্য পাচার হওয়া বা ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে।
পানি ও ধুলা থেকে সুরক্ষা: অতীতে যেকোনো স্মার্টফোন যত দামীই হোক না কেন, হাত ফস্কে বা অন্য অসাবধানতাবশত একবার পানিতে পড়ালেই একপ্রকার নিশ্চিতভাবে এর আয়ু ফুরিয়ে আসত। ২০১৭ সালে সর্বপ্রথম স্যামসাং নিজেদের গ্যালাক্সি এস৭ ডিভাইসে ব্যবহার করে সর্বোচ্চ মাত্রার ওয়াটারপ্রæফ ও ডাস্টপ্রæফ প্রযুক্তি “আইপি৬৮”, যার ফলে এখন আর পানি ও ধুলা নিয়ে চিন্তা করতে হচ্ছে না স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের।
স্যামসাং পে, পকেটেই ওয়ালেট: হালের দ্রæতগতির জীবনযাত্রায় অনেকেই নগদ অর্থ ও কার্ডের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনত চাইছেন। আধুনিক ব্যবহারকারীদের ইন্সট্যান্ট ট্রাঞ্জেকশনের সুবিধার্থে ২০১৫ সালে স্যামসাং তাদের স্মার্টফোনে নিয়ে আসে “স্যামসাং পে”। স্যামসাং পে এই ব্র্যান্ডটির এমনই একটি ফিচার, যার মাধ্যমে নগদ অর্থ ও কার্ডের সমস্ত প্রয়োজন মেটানো যাবে একটি ডিভাইসের মাধ্যমেই। ওয়ালেট-মুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার পথে স্যামসাংয়ের এই উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে অন্যতম ধাপ।
বিশ্বের প্রথম ডুয়েল পিক্সেল সেন্সর: স্যামসাং সবসময় ক্রেতাদের সর্বাধুনিক ক্যামেরার সুবিধা দিতে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্যামসাং নিয়ে আসে স্মার্টফোনে বিশ্বের প্রথম ডুয়েল পিক্সেল সেন্সর। ডিএসএলআর ক্যামেরার সুবিধা স্মার্টফোনে ব্যবহার করার মাধ্যমে ফটোগ্রাফিপ্রেমী মানুষের জীবনকে আরও সহজ করেছে স্যামসাং।
স্যামসাংয়ের নিজস্ব ওয়ান ইউআই: ব্যবহারকারীদের জন্য অনন্য অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করতে স্যামসাং ইউজার ইন্টারফেইস হিসেবে ২০১৮ সালে নিয়ে আসে নিজস্ব ওয়ান ইউআই। বাজারের অন্যান্য ইউজার ইন্টারফেইসের তুলনায় এটি সহজ, স্বাচ্ছন্দ্যময়, নিরাপদ এবং ব্যবহারকারীবান্ধব।
ফোল্ডেবল স্মার্টফোন যুগের সূচনা: ২০১৯ সালে গ্যালাক্সি জেড ফোল্ডের মাধ্যমে বিশ্বে প্রথমবারের মতো ফোল্ডেবল স্মার্টফোন যুগের সূচনা ঘটায় স্যামসাং। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে প্রস্তুত করা এই স্মার্টফোনে ব্যবহারকারীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে মাল্টি-অ্যাকটিভ উইন্ডোর মতো আধুনিক সব ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে।
ছবির অনাকাক্সিক্ষত অংশ মুছে দিতে এআই পাওয়ার্ড ইরেজার: ২০২১ সালে স্যামসাং প্রথম এই উদ্ভাবনী প্রযুক্তিটি নিয়ে আসে, যার মাধ্যমে যেকোনো ছবিতে থাকা অনাকাক্সিক্ষত বস্তু বা অংশ মুছে দিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ডিভাইস পরিচালনা করার ক্ষেত্রে ভয়েসের ব্যবহারও স্মার্টফোনে এআই ব্যবহারের অনন্য নিদর্শন।
টেকসই ভবিষ্যতের জন্য স্মার্টফোন: স্মার্টফোনে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়াও বিশ্বের টেকসই ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে স্যামসাং। ব্র্যান্ডটি তার স্মার্টফোনের বিভিন্ন উপাদান রিসাইকেল করার ওপর শুরু থেকেই গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এছাড়া ডিভাইসে প্লাস্টিক ও কাগজের ব্যবহার কমিয়ে আনতেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার দায়িত্বশীল ব্র্যান্ডটি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন