প্রশ্নের বিবরণ : আমি বিয়ে শাদী করিনি। আমার কোনো বংশধর নেই। এমতাবস্থায় আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি সবটুকু বিক্রি করতে চাই। আমার সহোদরদের পূর্ণ সম্মতি আছে। ইসলাম কি বলে ? শুনেছি পৈত্রিক ভিটা বিক্রি করতে নেই। তাছাড়া চাচাত ভাইয়েরা ভিটাখানা দখলে নিয়ে নিয়েছে, কি করা উচিত? আমি নিজের বংশের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে আগ্রহী নই। জমি যদি চাচাত ভাইদের কাছে বিক্রি করি, তবে মুল্য নিয়ে ঠকার সম্ভাবনা আছে। বাইরের কারো কাছে দেয়া জায়েজ হবে?
উত্তর : আপনার বংশধর নেই। বিয়ে শাদী করেন নি। এখানে আপনার সম্পত্তি পরবর্তীতে ভাই-ভাতিজারা পাবেন। তারা যদি সম্মতি দেয় (যদিও এটি জরুরী নয়, সৌজন্য মাত্র) তাহলে পৈত্রিক সম্পত্তি সবটুকু বিক্রিতে শরীয়ত কোনো বাধা দেয় না। এতে কোনো অমঙ্গলও হয় না। তবে মানুষ সম্পূর্ণ বাস্তুহারা বা ছিন্নমূল যেন না হয়ে যায় এজন্য আমাদের সমাজে একটি রীতি চালু আছে নিজের পৈত্রিক ভিটাটুকু বিক্রি না করার। এতে মানুষ ঠিকানাবিহীন হয়ে যায়। এটি শরীয়তের বিধান না হলেও সামাজিক একটি সুন্দর রীতি। শরীয়ত একে মন্দও বলে না, ভালোও বলে না। তবে প্রচলিত ভালো রীতি শরীয়ত উৎসাহিত করে। এখন আসুন আপনার চাচাতো ভাইদের কথায়। আপনি ও আপনার আপন ভাইয়েরা আপনার জায়গায় থাকেন না। চাচাত ভাইয়েরা এজন্যই আপনার জায়গায় উঠেছে। আপনি মামলা করতে পছন্দ করেন না, এটি খুবই ভালো কথা। আপনি সম্ভব হলে কিছুটা ঠকেও জায়গাটি নিজ বংশের লোকদের দিয়ে দিন। এমন হতে পারে যে, বাজারমূল্য নির্ধারণ করুন, এরপর যা তারা দেয় তা গ্রহণ করুন, বাকীটা তাদের সওয়াবের নিয়তে ছাড় দিয়ে দিন। আত্মীয়দের প্রতি ইহসানের সওয়াব অনেক বেশি। এরপরও আপনার পূর্ণ অধিকার আাছে বাইরের লোকের কাছে বেশি মূল্যে বিক্রি করার এবং চাচাত ভাইদের উচ্ছেদ করে ক্রেতাকে জমি বুঝিয়ে দেওয়ার। এতে আপনার গুনাহ হবে না। তবে অনেক অনেক সওয়াব থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন। এখন আপনার ইচ্ছা।
উত্তর দিয়েছেন : আল্লামা মুফতি উবায়দুর রহমান খান নদভী
সূত্র : জামেউল ফাতাওয়া, ইসলামী ফিক্হ ও ফাতওয়া বিশ্বকোষ।
প্রশ্ন পাঠাতে নিচের ইমেইল ব্যবহার করুন।
inqilabqna@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন