সমাবর্তন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের একটি আকাক্সিক্ষত মুহূর্ত। এর মাধ্যমে দেয়া হয় তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ। সমাবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের দীর্ঘ শিক্ষা জীবনের পরিপূর্ণতা লাভ করেন। প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন থাকে সমাবর্তনের মাধ্যমে জীবনের পরম অর্জন সার্টিফিকেটটি গ্রহণ করার। কিন্তু অনেকাংশে তা আর সম্ভব হয়ে উঠে না। নানা সমস্যার কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় না। মান সম্মত উচ্চতর কৃষি শিক্ষা ব্যবস্থার নিশ্চয়তা বিধানের লক্ষে ১৯৬১ সালে যাত্রা শুরু করেছিল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)।
বিভিন্ন প্রতিকূলতা ও সমস্যার জন্য বাকৃবিতে নিয়মিত কোন সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়নি। দীর্ঘ প্রতিক্ষা আর জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী কৃষিবিদগণদের জ্ঞান, দক্ষতা ও মেধার বাস্তবসম্মত ও সৃজনশীল কর্মকা-কে অব্যাহত রেখে দেশের জন্য কৃষি উন্নয়নে শক্তিশালী বুনিয়াদ নির্মাণে সফলকাম হওয়ার প্রার্থনা করে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি বাকৃবিতে ৭ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দীর্ঘ ৫৪ বছরে মাত্র ৬ বার সমাবর্তন হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিতব্য ৭ম সমাবর্তনে সভাপতিত্ত্ব করবেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও বাকৃবি চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তার বক্তব্য রাখবেন খ্যাতনামা প্রকৌশলী, গবেষক, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। রেজিস্ট্রেশনের প্রায় এক বছর পর অনুষ্ঠিতব্য ৭ম সমাবর্তনকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবরকে আহ্বায়ক করে গঠিত হয়েছে সমাবর্তন উদ্যাপন কমিটি। গঠন করা হয়েছে ১৭টি সাব-কমিটি। ৭ম সমাবর্তনে এক হাজার নয়শত ঊনিশ জন ¯œাতক, দুই হাজার আটশত একান্ন জন ¯œাতকোত্তর ও আটত্রিশ জন কে পিএইচডি ডিগ্রির সনদ দেয়া হবে। এছাড়া ষষ্ঠ সমাবর্তনের পর থেকে যাদের সনদ প্রদান করা হয়নি এমন চার হাজার আটশত আট জন শিক্ষার্থীকে মূল সনদ প্রদান করা হবে। ইতিমধ্যে প্রায় শেষ হয়েছে ক্যাম্পাস সুসজ্জিতকরণের কাজ।
ভিসির ভাবনা : বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দেশের খ্যাতিমান পশু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মো. আলী আকবর। তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে সমাবর্তন আয়োজন করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি। দেশের কৃষি উন্নয়নে ঈপ্সিত গতি সঞ্চারের লক্ষ্যে সার্বিক নেতৃত্ব দানে সমর্থ দক্ষ কৃষিবিদ, শিক্ষক, গবেষক ও ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ তৈরি করা আমাদের অন্যতম প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামীর দিনগুলোতে এদেশের কৃষি উন্নয়ন ও গ্রামীণ দারিদ্র্য বিমোচনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েটগণ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
আশিফুল ইসলাম মারুফ ও আশরাফুল আলম
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন