স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ইস্কাটনে জোড়া হত্যা মামলার আসামি এমপিপুত্র বখতিয়ার আলম রনি অসুস্থতার অজুহাতে কারাগারের পরিবর্তে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) কেবিনে রয়েছেন। ঢামেকে নতুন ভবনের ১০ তলার ১১০ নম্বর ভিআইপি এ কেবিনের দৈনিক ভাড়া ১২শ’ টাকা। ওই কেবিনে স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই দিন কাটছে তার।
মেডিকেল সূত্র জানায়, গ্যাসের সমস্যাজনিত কারণ দেখিয়ে গত ১৪ ফেব্রæয়ারি দুপুরে কারা কর্তৃপক্ষ রনিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। প্রথমে তাকে ৭০২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরে স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রনিকে ভিআইপি কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের ভিআইপি ওই কেবিনেই স্বজনদের সাথে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। দরজার সামনে অবস্থান রয়েছে দু’জন কারারক্ষীর। অনুমতি ছাড়া সেখানে কাউকে ঢুকতে দেয়া হয় না। জোড়া খুনের এ আসামি রনি হচ্ছেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা সংসদ সদস্য ও আওয়ামী মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খানের ছেলে। খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, রনি হাসপাতালের কোনো খাবার খাচ্ছেন না। আত্মীয়-স্বজনদের আনা খাবার খেয়েই তিনি দিন পার করছেন।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৩ এপ্রিল রাতে রাজধানীর ইস্কাটনে রনির গাড়ি যানজটে আটকে পড়ায় বিরক্ত হয়ে তিনি গুলি ছোঁড়েন। এতে দু’জন নিহত হন। ওই মামলার তদন্তের কাজও প্রায় শেষের দিকে। সিআইডির ব্যালাস্টিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, নিহতদের গায়ে পাওয়া গুলি ও রনির পিস্তল একই ক্যালিবারের। ওই ঘটনায় রনির বন্ধু কামাল মাহমুদ কামাল ওরফে টাইগার কামাল এবং জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া সাক্ষী হিসেবে আদালতে জবানবন্দী দেন। সেখানে উল্লেখ করেন, ঘটনার রাতে তারা সোনারগাঁও হোটেল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠেন। চালকের পাশের আসনে ছিলেন রনি। কামাল মাহমুদসহ তিন বন্ধু পেছনে ছিলেন। প্রথমে জাহাঙ্গীরকে মগবাজার ডাক্তার গলির সামনে নামিয়ে দেয়া হয়। রাত ২টায় নিউ ইস্কাটনে গাড়িটি যানজটে পড়ে। এতে অসহ্য হয়ে রনি পিস্তল দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। এতে রিকশাচালক আবদুল হাকিম ও অটোরিকশাচালক ইয়াকুব গুলিবিদ্ধ হন। ১৫ এপ্রিল হাকিম এবং ২৩ এপ্রিল ইয়াকুব চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহত হাকিমের মা মনোয়ারা বেগম গত ১৫ এপ্রিল রমনা থানায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে একটি ঢাকা মেট্রো ঘ-৩-৬২৩৯ প্রাডো গাড়ি থেকে গুলি ছোঁড়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে চালক ইমরানকে গ্রেফতার করে ডিবি। ইমরানের জবানবন্দীতেই জোড়া খুনের রহস্য উন্মোচিত হয়। গত ৩১ মে এলিফ্যান্ট রোডের বাসা থেকে রনিকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পিনু খানের ন্যাম ভবনের বাসার গ্যারেজ থেকে গাড়িটিও জব্দ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন