মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘে উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ২:৩৫ পিএম

জেরুজালেম ইস্যুতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত এক খসড়া প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ও ওই শহরে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের পরিকল্পনার বিরোধিতা করে এই খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছিল। খবর আল-জাজিরা ও রয়টার্সের।
 
খবরে বলা হয়, এ প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, সেটা আগে থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল। গত ছয় বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করলো।
 
নিরাপত্তা পরিষদের খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিল মিশর। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, জেরুজালেমের মর্যাদা প্রসঙ্গে যেকোনও সিদ্ধান্তের ‘কোন আইনি ভিত্তি নেই, এ সিদ্ধান্ত অকার্যর এবং একে প্রতিহত করতে হবে’।
 
ট্রাম্পের ঘোষণার বিরোধিতা থেকে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলেও এতে সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র বা ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে জেরুজালেমের অবস্থান নিয়ে সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেগুলোর ‘তীব্র নিন্দা’ জানানো হয় এতে।
 
নিরাপত্তা পরিষদে ভোটগ্রহণ শেষে জাতিসংঘে মার্কিন স্থায়ী প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালে বলেন, ‘আজ নিরাপত্তা পরিষদে যা দেখলাম, তা স্পষ্টতই অপমান। আমরা এটা ভুলে যাবো না।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জন্য জাতিসংঘ যে ভালোর চেয়ে খারাপটাই বেশি করছে, এটা তারই আরেকটি প্রমাণ। ইহুদিদের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক মাতৃভূমি হিসেবে জেরুজালেম ছাড়া তাদের আর কোনও রাজধানী কখনোই ছিল না।
 
তবে জেরুজালেম ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপিত প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলেও মার্কিন মিত্রদেশগুলোসহ পরিষদের বাকি ১৪টি দেশই এতে সমর্থন দিয়েছে। এ থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র আরও বেশি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
 
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেওয়ার পরই এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বিভিন্ন দেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণা ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে বলেই আশঙ্কার কথা জানান বিশ্লেষকরা। 
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত রিয়াদ মনসুর বলেন, ‘আমরা সবাই যখন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ একটি পরিকল্পনার প্রত্যাশা করছিলাম, তখন দেশটি শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে আরও বেশি অপরাধ করতে এবং আমাদের ভূমিতে তাদের দখলদারি মনোভাব অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করবে।’
 
ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের একজন মুখপাত্রও যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এমন সিদ্ধান্ত ‘অগ্রহণযোগ্য এবং এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ। কারণ এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অসম্মান করেছে।’
তবে নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করার জন্য নিক্কি হ্যালেকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এক টুইটে নেতানিয়াহু বলেন, ‘রাষ্ট্রদূত হ্যালেকে ধন্যবাদ জানাই। আপনি সত্যের আলো জ্বালিয়ে অন্ধকার দূর করেছেন।
 আপনি একা হয়েও পরাজিত করেছেন অনেককে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আপনাকে ধন্যবাদ। নিক্কি হ্যালে, আপনাকে ধন্যবাদ।’
উল্লেখ্য, গত ৬ ডিসেম্বর জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিয়ে মার্কিন দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির কথাও জানান ট্রাম্প। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে।
 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
মোঃ আঃ ওয়াহাব ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৪:০৮ পিএম says : 0
মধ্যপ্রাচ্চ্য আরবলীগে বিবেদ ইহুদীবাদীরে সাধে সখ্যতা ইরানের সাথে শত্রুতা এবং বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহনই এ সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহ যুগিয়েছে এতে ওদের কুটকৌশলের বিজয় হয়েছে আর মুসলমানদের ভিতের শত্রুতার বিধ শক্ত হয়েছে যা ওরা চেয়েছিল ।মিথ্যা বার বার জয়ী হয় আর সত্য একবার জয়ী হলে মিথ্যা সমূলে ধ্বংস হয় আর এজন্য দরকার সত্যের খুটি মজবুত করা আর তা কেমনে হবে তা মুসলিক নেতৃত্বকে ঠিক করতে হবে ।
Total Reply(0)
শফীক আনসারী ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৭, ৫:১১ পিএম says : 0
মার্কিন যুক্তরাষ্টের ইহুদীদের প্রতি যদি এতই দরদ থাকে, তাহলে তাদেরকে যুক্তরাষ্টের কোন শহরে স্থায়ী ভাবে বসবাসের সুযোগ দিলেই পারে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন