ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের উদ্বেগের কোনো পরোয়া না করে জাতিসংঘে জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রস্তাব চীন আটকে দেয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ভারত। চীনের এই আচরণকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুর্বোধ্য আখ্যা দিয়েছে। নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে কঠোর সমালোচনা করা হয়েছে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কমিটিরও।
পাকিস্তানভিত্তিক জিহাদি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদকে ২০০১ সালেই নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। মুম্বাই হামলার পর মাসুদ আজহারকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য ভারত জাতিসংঘের দ্বারস্থ হয়। তখনও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল চীন। এবারও তাই হলো। পাঠানকোটে বিমান বাহিনীর ঘাঁটিতে হামলার পিছনে জইশের সংশ্লিষ্ট থাকার প্রমাণ পাওয়ার পরই, মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য জোর দাবি তোলে ভারত। জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কমিটিতে বিষয়টিতে তা পেশ করাও হয়েছিল। গত শুক্রবার চীন ভেটো প্রয়োগ করে মাসুদ আজহারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার ভারতীয় প্রস্তাব আটকে দেয়।
কূটনৈতিক মহল বলছে, পাকিস্তানের কথায়ই এ পদক্ষেপ নিয়েছে চীন। পাকিস্তান জাতিসংঘের সন্ত্রাস সংক্রান্ত কমিটির সদস্য নয়। চীন সেখানে রয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশের অন্যতম হওয়ায়, চীনের ভেটো প্রয়োগের ক্ষমতাও রয়েছে। সেই ভেটো প্রয়োগ করেই শুক্রবার ভারতের প্রস্তাব বিনা বাধায় পাশ হওয়াকে আটকে দিয়েছে চীন।
ভারত এর তীব্র নিন্দা করেছে। চীনের সম্পর্কে মন্তব্যের প্রশ্নে সতর্কই থাকেন ভারতীয় কূটনীতিকরা। কিন্তু অনেকটা নজিরবিহীনভাবেই এদিন চীনের কড়া সমালোচনা করেছে ভারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিবৃতিতে মাসুদ আজহার সম্পর্কে চীনের অবস্থানকে, ‘দুর্বোধ্য’ আখ্যা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, শুধুমাত্র পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা উল্লেখ করে মাসুদ আজহারের মতো সন্ত্রাসীকে নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া যেভাবে চীন আটকে দিলো, তা কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যাচ্ছে না। ভারতের পক্ষ থেকে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট কমিটির কঠোর সমালোচনা করে বলা হয়েছে, জাতিসংঘ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বৈষম্যমূলক নীতি নিয়ে চলছে। সন্ত্রাসকে নির্মূল করতে আন্তর্জাতিক মহলকে যে পরিমাণ দৃঢ়তা দেখাতে হবে, জাতিসংঘের কমিটির সেই দৃঢ়তা নেই বলেও ভারত মন্তব্য করে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, ভারতের সমালোচনার আসল লক্ষ্য চীনই। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই আসলে চীনের জন্যই দুর্বল হচ্ছে, ভারতের বার্তায় এমন কথাই বোঝানো হয়েছে। কূটনৈতিক পরিভাষায় ভারতীয় মন্ত্রণালয়ের এই বিবৃতি বেশ কঠোর। ভারতের অগ্রগতিতে আতঙ্কিত হয়েই চীন পাকিস্তানে লালিত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে রক্ষা করতে চাইছে বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। কিন্তু নয়াদিল্লি এবার যে রকম কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, তাতে বেইজিং বুঝে গেছে, সন্ত্রাসের প্রশ্নে ভারত আর আপোসের রাস্তায় হাঁটবে না। পিটিআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন