ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের ধনী ও ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের অবৈধ অর্থের পাহাড় গড়তে সাহায্য করা পানামার একটি ল’ ফার্মের গোপন নথি ফাঁসের পর বিভিন্ন দেশের সরকার এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের যেসব প্রতিষ্ঠান গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিখ্যাত পানামার ল’ ফার্ম মোস্যাক ফনসেকা তাদের অন্যতম। গত ৪০ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটি তাদের ক্ষমতাশালী মক্কেলদের কীভাবে অর্থ পাচারে সহযোগিতা করেছে এবং নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর এবং কর ফাঁকি দেওয়ার পথ দেখিয়েছে, সেসব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে ফাঁস হয়ে যাওয়া নথিতে। এ নথির ভিত্তিতে যেসব দেশ তদন্ত শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সেগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ড, ব্রাজিল, ফ্রান্স ও সুইডেন রয়েছে। দ্য অস্ট্রেলিয়ান ট্যাস্ক অফিস বলেছে, তারা নথিতে থাকা ৮শ’র বেশি ধনী নাগরিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। অস্ট্রিয়ার ফিন্যান্সিয়াল মার্কেট রেগুলেটর- এফএমএ তদন্ত শুরু করেছে। নেদারল্যান্ড কর্তৃপক্ষও সেই দেশের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। সুইডেনের ফিন্যান্সিয়াল সুপারভাইসরি অথরিটি (এফএসএ) তার দেশের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তথ্য জোগাড় করতে এরই মধ্যে লুক্সেমবার্গ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ফ্রান্স ফাঁস হওয়া নথির মূল কাগজপত্রের ভিত্তিতে নিজস্বভাবে তদন্ত পরিচালনার উদ্যোগ নিচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল কনসরটিয়াম অব ইনভেস্টিগেশন জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) এবং বিশ্বের আরও ১০০টির বেশি গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এ নথি ফাঁস করেছে। কর ফাঁকি দিয়ে গোপন সম্পদের পাহাড় গড়া ব্যক্তিদের দলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধু থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের স্বজন এবং আইসল্যান্ড, পাকিস্তান ও ইউক্রেইনের প্রেসিডেন্টরা আছেন বলে জানিয়েছেন নথি হাতে পাওয়া সাংবাদিকরা।
লুটেরাদের ওই তালিকায় যাদের নাম এসেছে তাদের অনেকেই বলছে, বিশ্বনেতাদের জটিল অর্থনৈতিক হিসাব-নিকাশের ছক কষে তার সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি পানামা নথিতে উঠে এসেছে। কিন্তু তার অর্থ এটা ভেবে নেওয়ার প্রয়োজন নেই যে, সেগুলোর সবগুলোই অবৈধ ছিল। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ওই প্রতিবেদনের প্রধান লক্ষ্য যে, প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে রাশিয়ার রাজনীতিতে বিরাজমান স্থিতিশীল পরিস্থিতি তা বেশ পরিষ্কার ভাবে বোঝা যাচ্ছে। ওই নথিতে যা পাওয়া গেছে তার কিছুই বস্তুগত নয় এবং নতুন নয়। এ বিষয়ে কোনো ধরনের তদন্তের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে পেসকভ বলেন, এই নথির পেছনে সাংবাদিকদের যে দলটি রয়েছে তাদের অনেকে যুক্তরা্েরর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সিআইএ-র সাবেক কর্মকর্তা। প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের মুখপাত্র বলেন, ডেভিড ক্যামেরনের প্রয়াত বাবার ইয়ান ক্যামেরনের অফশোর কোম্পানির আড়ালে সম্পদের তথ্য গোপন রাখার যে তথ্য উঠে এসেছে সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের সদস্য কনজারভেটিভ পার্টির কয়েকজন নেতার নামও ওই নথিতে উঠে এসেছে। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন