ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আন্তর্জাতিক কর ব্যবস্থায় সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বৈশ্বিকভাবে কর ফাঁকির ইস্যুটি বর্তমানে বড় ধরনের সংকট তৈরিতে সহায়ক হয়ে উঠেছে। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হোয়াইট হাউজের ব্রিফিং রুমে হাজির হয়ে এ আহ্বান জানান তিনি। সম্প্রতি পানামা পেপার্স নামে ফাঁস হওয়া নথিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধানদের কর ফাঁকির তথ্য সামনে আসার পর এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন ওবামা। অর্থনৈতিক ইস্যুতে পানামাভিত্তিক আইনি পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার এক কোটি ১৫ লাখেরও বেশি নথি ফাঁস হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধনী ও ক্ষমতাবান ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপ্রধান পর্যন্ত কিভাবে কর ফাঁকি দিয়ে সম্পদ গোপন করেন এবং কিভাবে অর্থ পাচার করেন তা উন্মোচিত হয়েছে নথিগুলো ফাঁস হওয়ার পর।
মোস্যাক ফনসেকা নামক আইনি প্রতিষ্ঠানটি নির্দিষ্ট ফি নেয়ার মাধ্যমে মক্কেলদের বেনামে বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। এর মাধ্যমে তারা সম্পদ গোপন এবং কর ফাঁকি দিয়ে ওই অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ পান। বিশ্বনেতাদের কর ফাঁকির তথ্যে প্রতিক্রিয়ায় গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের ওবামা বলেন, এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই যে বৈশ্বিকভাবে কর ফাঁকির ইস্যুটি বড় ধরনের সংকটে পরিণত হয়েছে। এ নথি ফাঁসের ঘটনাটিকে গুরুত্বপূর্ণ দলিল বলে উল্লেখ করে ওবামা বলেন, রাষ্ট্রপ্রধান ও নামিদামি প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব পড়ছে। তিনি বলেন, এর মানে হলো আমরা স্কুল, কলেজ নির্মাণে বেশি বিনিয়োগ করছি না, রাস্তাঘাট, সেতু ও অবকাঠামোর পুনর্নির্মাণে কাজ করছি না। ব্রিফিংয়ে ওবামা করপোরেট বিপর্যয় বন্ধে তার প্রশাসনের নতুন নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, এর মধ্য দিয়ে কর ঠেকাতে বিদেশে কোম্পানির সদর দফতর সরিয়ে নেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হবে। এ ধরনের প্রবণতাকে করফাঁকির সবচেয়ে প্রতারণাপূর্ণ উপায় বলে উল্লেখ করেন তিনি। কেবল তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্র নিজেই করফাঁকির একটি জনপ্রিয় ভেন্যুতে পরিণত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। এদিকে ওবামা প্রশাসনের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কথা জানার পরও সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া, রাশিয়া ও ইরানের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ফনসেকা কাজ করেছে বলে যে খবর রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০০৯ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর কর ফাঁকি দেয়ার মেকি কোম্পানিগুলোর (অফশোর ট্যাক্স হ্যাভেন) বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। সে সময় বকেয়া থাকা ২শ’ বিলিয়নেরও বেশি কর ফেরত পায় যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও গত ৮ বছরে কর ফাঁকির ক্ষেত্রে সামান্যই পরিবর্তন হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন