শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সামরিক ঘাঁটি ব্যবহারে শিগগিরই চূড়ান্ত হচ্ছে ভারত-মার্কিন চুক্তি

প্রকাশের সময় : ১৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দুই দেশের সামরিক বাহিনীর প্রয়োজনে একে অপরের ভূমি, আকাশপথ এবং নৌপথ ব্যবহার করতে শিগগিরই চূড়ান্ত হচ্ছে ভারত-মার্কিন সামরিক চুক্তি। এর ফলে ভারতের সামরিক ঘাঁটি ব্যবহার করতে পারে মার্কিন সেনাবাহিনী। গত মঙ্গলবার ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী অ্যাশটন কার্টার এ তথ্য জানিয়েছেন। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানান, ভারতের সঙ্গে সামরিক সরঞ্জাম বিনিময়ে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। মার্কিন সৈন্যরা সরকারের আমন্ত্রণে ভারতে আসতে পারবে। একে অপরের ভূমি, আকাশপথ এবং নৌপথ ব্যবহার করতে পারবে। আর এই শর্ত মানতে কোনো দেশ বাধ্য নয়। তবে দুই দেশের এই চুক্তির বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিশ্বের শীর্ষ অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ভারত চায় মার্কিন প্রযুক্তির ভেতরে প্রবেশ করতে। এর ফলে তারাও দেশে ওই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে পারবে যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেইক ইন ইন্ডিয়া’ গঠনে সহায়তা করবে। খবরে বলা হয়, এ ব্যাপারে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি না হলেও সপ্তাহ কয়েকের মধ্যে তা হতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। দুনিয়াজুড়ে বিভিন্ন দেশে মার্কিনিরা তাদের স্বার্থে সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করেছে। ভারতের মাটিতে সামরিক সুবিধা লাভের পেছনে কাজ করছে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের সরব উপস্থিতি এবং তাতে মার্কিনিদের সামরিক আধিপত্য ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা। ভারতের মাটি ব্যবহারের সুবিধা পেলে তাদের জন্য চীনের ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। ওদিকে ভারতেরও স্বার্থ রয়েছে এতে। বিশেষ করে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ও পুরনো শত্রু চীনকে সংযত রাখার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই সামরিক ভাগাভাগি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে তাদের বিশ্বাস। বিশ্বে তার প্রভাব বিস্তারে চীনও আস্তে আস্তে এগিয়ে চলেছে। চীনকে ঠেকানোর মতলবে এই অঞ্চলে এক দীর্ঘমেয়াদি বৃহৎ পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও সায় রয়েছে এই পরিকল্পনায়। অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক থেকে চীনের অগ্রগতি যুক্তরাষ্ট্রের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আর পড়শি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের চোখেও চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে চীন। সুতরাং চীন ঠেকানোর এই মার্কিন নীতিতে ভারতও সহমত। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপে সঙ্গী হতে সম্মত হয়েছে ভারত। একজন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারত মহাসাগরে চীন তাদের প্রভাব বিস্তারে উন্মুখ হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত তাদের এই আগ্রাসী পদক্ষেপকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। শ্রীলংকা ও মালদ্বীপে গভীর সমুদ্রবন্দর গড়ে তোলার ব্যাপারে অর্থায়ন করছে চীন। ভারত মহাসাগরে চীনের সম্প্রসারণবাদী পদক্ষেপও ভালো চোখে দেখছে না ভারত। ওদিকে ভারতের প্রধান শত্রু হিসেবে পরিচিত পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের রয়েছে ঘনিষ্ঠ মিত্রতা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী কার্টার বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটন ও নয়াদিল্লি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত চুক্তি করতে তৈরি হচ্ছে। এছাড়া দুটি দেশ শিগগিরই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তথ্য আদান-প্রদান বিষয়ক সমঝোতায়ও পৌঁছাবে। কার্টার বলেন, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বিমানবাহী রণপোতের ডিজাইন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে সহযোগিতার ব্যাপারেও একমত হয়েছে। এই সহযোগিতা চুক্তির আড়ালে ভারতের উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জামের আধুনিকায়ন বিষয়ক প্রযুক্তি লাভ করে তা কাজে লাগানো। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি, এএফপি, পিটিআই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন