ইনকিলাব ডেস্ক : পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং এবং ফেসবুকের নির্মাতা মার্ক জুকারবার্গ মিলে একটি প্রোজেক্ট শুরু করেছেন। তারা মহাশূন্যে ক্ষুদ্র্র আকৃতির কিছু রকেট পাঠাবেন। তাদের উদ্দেশ্য দূর মহাবিশ্ব কেমন সেটা খুঁজে দেখা এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধান করা। এটা হবে মহাশূন্য গবেষণায় ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাঙ্কাক্ষী প্রজেক্ট। মহাবিশ্ব যে বড় সেই খবর আমরা জানি কিন্তু কত বড়, কি আছে দূর মহাবিশ্বে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে বিজ্ঞানীরা প্রাণান্ত চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাছাড়া খুব বেশিদূর যেতে মানুষ সক্ষম হয়নি এখনো। যদিও মহাবিশ্ব পর্যবেক্ষণ করতে ইতিমধ্যে পাঠানো হয়েছে মহাকাশ যান। এ উদ্দেশ্যে ১৯৭৭ সালে নিক্ষেপ করা হয়েছিল ভয়জার-১ ও ভয়জার-২। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি দূরত্ব পার হয়ে আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহ অন্বেষণের সুযোগ পেয়েছে একমাত্র ভয়জার-১, যদিও ভয়জার-২ এর আগে যাত্রা করেছিল কিন্তু শুধুমাত্র এই জাতীয় বড় বড় রকেট পাঠানো যেমন খরচ সাপেক্ষ, তেমনি সময় সাপেক্ষও। এতে করে মহাবিশ্ব অন্বেষণে সময় লেগে যাচ্ছে অনেক বেশি। এখন উপায় বের করাই হলো বিজ্ঞানীদের কাজ ও সময়ের ব্যাপার। হকিং এবং জুকারবার্গ দুজনেই অতি প্রতিভাবান। তারা ঠিক করেছেন বড় রকেট না পাঠিয়ে যদি ছোট রকেট পাঠানো যায় তাহলেও সমস্যা সমাধান করা যায় দ্রুত, কারণ এই সব রকেটে তো আর মানুষ যাচ্ছে না। তারা মহাশূন্যের গভীরে রোবট পাঠাবেন ন্যানো ক্র্যাফটে করে। এমন জায়গায় যে জায়গা মানুষ এখনো দেখে নাই। এই অতি উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের কারণে ন্যানো ক্র্যাফটগুলো মহাবিশ্বের গোপনীয়তা যেমন খুঁজে বের করতে পারবে, তেমনি আর কোথাও প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা এবং তার ছবি তুলতেও সক্ষম হবে। বিজ্ঞানী হকিং বলেছেন, যে বৈশিষ্ট্য মানুষকে একক ও অনন্য করেছে সেটা হচ্ছে আমরা আমাদের সীমানা ছাড়িয়ে যেতে পারি। মধ্যাকর্ষণ আমাদের মাটিতে টেনে রাখে কিন্তু আমরা প্লেনে করে ঘুরে বেড়াচ্ছি দেশান্তরে। কিন্তু কিভাবে আমরা সীমা অতিক্রম করবো। সেটা আমরা করবো আমাদের মনবল এবং মেশিন দিয়ে। তিনি বলেন, মহাবিশ্ব অন্বেষণে আমাদের সীমাবদ্ধতা হচ্ছে আমাদের ও তারাদের মাঝের দূরত্ব। কিন্তু এখন আমরা সেটা অতিক্রম করতে পারি এ যাবতকালের সবচেয়ে হালকা মহাশূন্য যান দিয়ে। আজকে মহাশূন্যে আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে গেলাম। কারণ আমরা মানুষ, আমাদের প্রকৃতি হচ্ছে উড়ে বেড়ানো।
‘দ্যা স্টারশট প্রোজেক্ট’ নামে তাদের এই যুগান্তকারী পরিকল্পনায় ক্ষুদ্র রোবট পাঠানো হবে ২৫ ট্রিলিয়ন মাইল দূরের আলফা সেঞ্চুরি স্টার সিস্টেমে। সাধারণ প্রক্রিয়ায় সেখানে যেতে সময় লাগবে ৩০ হাজার বছর কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে সেখানে রোবট চলে যাবে মাত্র ২০ বছরে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন আলফা সেঞ্চুরি তারাজগতে পৃথিবীর মত একটি গ্রহ রয়েছে যেখানে প্রাণের বসতি থাকতে পারে। রকেটগুলো প্রাণের অনুসন্ধান করবে এবং ছবি তুলতে পারবে। এই পরিকল্পনায় বিনিয়োগকারী ইউরি মিলনার বলেছেন, এই ন্যানো ক্র্যাফট রকেট আলোক রশ্মি ব্যবহার করে চলাফেরা করবে। নকশার কারণে এর গতি হবে আলোর গতির ২৫ শতাংশ। এরা ছবি তুলে সেটা পৃথিবীতে পাঠাতে পারবে। ওয়েবসাইট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন