শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

‘তাবলীগ জামাতের নেতৃত্বে মাওলানা সাদ সাহেব সম্পূর্ণ বর্জনীয় নিষিদ্ধ’

আল্লামা আহমদ শফীর উপস্থিতিতে ওযাহাতি জোড়ের সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৫:৫৪ পিএম

তাবলিগ জামাতের চলমান সংকট থেকে উত্তোরণ এবং মাওলানা সাদের কতিপয় ভ্রান্ত উক্তি স্পষ্ট করার জন্য শনিবার সকাল থেকে হাটাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমাদ শফি দা.বা. এবং লাখো উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগ সাথীদের উপস্থিতিতে মোহাম্মদপুর তাজমহল রোড সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত ওযাহাতি জোড়ে গৃহীত সিদ্ধান্তে এ কথা বলা হয়।

জামিয়া রাহমানিয়ার মুহতামিম মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় ওযাহাতি জোড়ে প্রধান অতিথি ছিলেন হাটহাজারি মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা আহমদ শফি দা. বা.। উদ্বোধন করেন মালিবাগ মাদরাসার প্রিন্সিপাল শাইখুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী দা.বা.। সিদ্ধান্তের পূর্বে ওযাহাতি জোড়ে আরো বক্তব্য রাখেন আল্লামা আনওয়ার শাহ (কিশোরগঞ্জ), আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি ওয়াক্কাস, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মুফতি রুহুল আমিন (গওহরডাঙ্গা), মাওলানা সাজিদুর রহমান (বি-বাড়িয়া), মাওলানা তৈয়ব (জিরি মাদরাসা), মুফতি আব্দুল মালেক, মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী (ময়মনসিংহ), মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপর), মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা আব্দুল আউয়াল (নারায়ণগঞ্জ), মাওলানা রফিকুর রহমান (খুলনা), মাওলানা ঈসমাইল নূরপূরী (নরসিংদী), মাওলানা আবু তাহের নদভী (পটিয়া), মাওলানা আনোয়ার হোসাইন (যাত্রাবাড়ি মাদরাসা)সহ অর্ধশতাধিক উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের সাথী। জোড় উপলক্ষ্যে শুক্রবার রাত থেকে সারা দেশ থেকে উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের সাথীরা মোহাম্মদপুর ও আশপাশ এলাকায় আসতে শুরু করেন। গতকাল শনিবার সকাল আট টার পূর্বেই ঈদগাহ ময়দান পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় ঈদগাহ মাঠের আশেপাশে বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেয় ও মাইকে বয়ান শুনেন।

বক্তাগণ বলেন, শতাব্দিব্যাপী দীর্ঘ সময়ে তাবলীগী কাজে কখনোই কোনো বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হয়নি। কিন্তু‘ মাওলানা সাদ সাহেবের ওপর জিম্মাদারি আসলে তিনি উম্মতের বৃহত্তর স্বার্থের বিপরীতে ক্ষুদ্র চিন্তা-ভাবনার দ্বারা তাড়িত হয়ে এমন কিছু কথা ও কাজ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিলেন যার কারণে তাবলিগের মূল দৃষ্টিভঙ্গিই আজ ধূলিস্যাত হতে বসেছে। পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সাথীদের চিন্তার মাঝে মারাত্মক বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মাওলানা সাদের বিভ্রান্তি কর বক্তব্য স্পষ্ট করণে এ জোড়ের প্রয়োজন ছিল। কারণ মাওলানা সাদ তার বিভিন্ন বয়ানে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা-বিশ্বাসের পরিপন্থী বহু বিষয় এনেছেন। যেগুলোর মধ্যে দ্বীনের অপব্যাখ্যা, মনগড়া তাফসির, ভুল মাসআলা বর্ণনা, নবীগণের শানে বেআদবিপূর্ণ উক্তি, দ্বীনের অন্যান্য শাখাসমূহকে হেয়প্রতিপন্ন করা বা বাতিল সাব্যস্ত করার মতো গুরুতর বিষয়াদি অন্তভর্‚ক্ত রয়েছে।
ওজাহাতি জোড়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত সমূহের মধ্যে রয়েছে, তাবলীগ জামাতের উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়ার কারণে মাওলানা সাদকে অনুসরণ করা সম্পূর্ণভাবে বর্জনীয় ও নিষিদ্ধ। তার কোনোরূপ সিদ্ধান্ত ফায়সালা বা নির্দেশ কাকরাইল তথা বাংলাদেশে বাস্তবায়িত করা যাবে না। অনুরূপভাবে নেযামুদ্দিন থেকে আগত কোনো জামাতকে বাংলাদেশের কোনো জেলায়/থানায়/ইউনিয়নে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। তাবলিগের কাজ মাওলানা ইলিয়াছ রহ, মাওলানা ইউসূফ রহ. ও মাওলানা এনামুল হাসান রহ.দ্বয়ের পদ্ধতিতে এবং উলামায়ে কেরামের তত্ত¡াবধানে পরিচালিত হবে। নতুন কোনো পদ্ধতি চালু করা যাবে না। কাকরাইল, টঙ্গী ময়দান এবং জেলা মারকাযসহ সকল মারকায এই নীতিতেই পরিচালিত হবে। ২০১৮-এর টঙ্গী ইজতেমায় সরকারের সাথে পরামর্শক্রমে আগামী ২০১৯-এর টঙ্গী ইজতেমার জন্য নির্ধারিত তারিখ প্রথম পর্ব ১৮, ১৯, ২০ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় পর্ব ২৫, ২৬, ২৭ জানুয়ারি এর সাথে আজকের জোড়ে ঐক্যমত পোষণ করা হয়। সারা দেশের জেলায় জেলায় ওলামায়ে কেরাম ও তাবলিগি সাথিদের সমন্বয়ে ওযাহাতি জোড় আয়োজন করা। মাওলানা সাদের কতিপয় ভ্রান্ত উক্তিÑহযরত মূসা আ. কেবল চল্লিশ রাত দাওয়াতের আমল করেননি। (এ কথা আমি বুঝে শুনেই বলছি।) চল্লিশ রাত তিনি ইবাদতে মশগুল ছিলেন। ইত্যবসরে বনি ইসরাইলের ৫ লক্ষ ৮৮ হাজার ব্যক্তির সকলেই গোবৎস উপাসনায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। আমার মতে ক্যামেরাযুক্ত মোবাইল পকেটে রেখে নামাজ পড়লে তা শুদ্ধ হবে না। তোমরা উলামায়ে কেরামের নিকট হতে যত খুশি ফতোয়া নিতে পার। ক্যামেরাযুক্ত মোবাইলে কুরআন পড়া ও শুনা কুরআনের অপমান বৈ কিছুই না। এতে গুনাহ-ই হবে। কোনো সওয়াব হবে না। পরিণামে আল্লাহ তাআলা কুরআনের ওপর আমল করা থেকে মাহরূম করে দিবেন।
তাই এহেন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যেন বিভ্রান্তির শিকার হয়ে তাদের ঈমান-আমল নষ্টের দিকে পা না বাড়ায় সে জন্যেই আজকের এই ওযাহাতি জোড়ের আয়োজন। জোড়ের পক্ষ থেকে উল্লেখিত সিদ্ধান্তাবলী গৃহীত হয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
২৮ জুলাই, ২০১৮, ৭:১৫ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারেন
Total Reply(0)
ফয়সাল ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৮:১৭ পিএম says : 0
মুসলমানদের একজন আমির থাকা দরকার।আর তিনি হবেন মাওলানা সাদ।কিন্তু উনি তো কুফরি বা শিরক করেননি।তাই উনার নেতৃত্বে তাবলীগের দাওয়াত চালানো উচিত।কওমী মাদ্রাসার আলেমগন পরামর্শ ও বাকী কাজগুলো সমাধান করুন
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২৮ জুলাই, ২০১৮, ৯:০৯ পিএম says : 0
মোবাইল বন্ধ না করিয়া যাহারা মসজিদে ঢুকে তাহারা মসজিদের সাথে চরম বেয়াদবি করে। ওদের মসজিদে না যাওয়াই ভালো। কারণ ওরা চরম বেয়াদব। ওদের মসজিদের আদব আর নামাজ সম্ভন্দে জ্ঞান নাই।ওরা যেমন তেমন ভাবে মসজিদের মধ্যে চলাফেরা করে।যাহা ঈমানদারদের জন্য কস্টের কারণ হয়।
Total Reply(0)
২৮ জুলাই, ২০১৮, ১০:৫৬ পিএম says : 0
য়ারা তবলীগে সময় লাগাই নাই তারা তবলীগের কোন কাজে কথা বলার অধিকার নাই। মাওলানা সাদ সাহেবই আমির ।
Total Reply(0)
মাহবুব ২৮ জুলাই, ২০১৮, ১১:২৮ পিএম says : 0
এখানে আপনি আপনার মন্তব্য করতে পারে তাবলীগ জাময়াত আল্লাহ তা'য়ালার রহমত কিন্তু এক ব্যক্তিকে নিয়ে বিরোধের যে রুপ পরিলক্ষিত ,তা দেখে সমর্থক হিসাবে কষ্ট পাচ্ছি ।রিরোধী সম্মানিত আলেম মহল থেকে ক্ষুদ্র প্রতিনিধি দল দ্বারা বিষয়টি সমাধান হলে ,বর্তমান যে অপপ্রচার, ভক্তির ও ভালবাসার যে ফাটল সৃষ্টি হল তা কমানো যেত বলে মনে হয় ।মতপার্থক্য মাত্রাহীনতা লাভ করলে, কখনো,কোন বিষয়ের সুষম সমাধানের চেয়ে জিদ,খাটিত্ব মনে করার অহংকার এবং স্বীয় মতকে যৌক্তিকায়ন,জায়েজ,নির্ভুল করার প্রয়োজনে পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ব্যখ্যার ব্যাপারে গ্রুপ কেন্দ্রীয়তা লাভ করে ।আল্লাহ অতি উত্তম অবগত ।আমি অজ্ঞ অধম হিসাবে ভুল লিখলে তাঁর ও সবার নিকট ক্ষমা চাই ।এ সব শুনে সবার জন্যই কষ্ট পাই ।
Total Reply(0)
MD ২৯ জুলাই, ২০১৮, ৯:১১ পিএম says : 0
হিফাজতে ইসলামের আমির শফী সাহেব নিজেই একজন আমির,তিনি নিজ সংগঠনে শুরা চালু করতে পারেন। এখানে তো কাকরাইওলের একজন শুরাও উপস্থিত ছিলেন না তাহলে ফায়সালা দিল কে?যিনি ফায়সালা দিলেন তিনি কিন্তু তাবলীগের আমির নন হিফাজতে ইসলামীর আমির।তাহলে কি তাবলীগ এখন থেকে হিফাওজতে ইসলাম দ্বারা পরিচালিত হবে?
Total Reply(0)
মো: ফারুক হোসেন। ১২ আগস্ট, ২০১৮, ১:৫৯ পিএম says : 0
একজন ব্যিক্তর জন্য এধরনের সমস্যার সৃষ্টি।তাই আমি মনে করি প্রত্যেক দেশর মারকাজ থেকে প্রতিনিধি একত্রিত হয়ে নতুন করে বিশ্ব শুরা গঠন করে এধরণের সমস্যার সমাধান করে আমাদের মত সাধারন সাথিদের বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করার জন্য অনুরুধ করা হলো।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন