ইনকিলাব ডেস্ক : ইকুয়েডরের উপকূলীয় অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। আড়াই হাজার মানুষকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। স্থানীয় সময় গত শনিবার সন্ধ্যায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ধসে পড়েছে বহু ভবন, সেতু, সড়ক ব্যবস্থা দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পের উপকেন্দ্রের কাছে পর্যটন শহর পেদারনালেস সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রশান্ত মহাসগারের তীরে পামগাছ ঘেরা ছিমছাম শহরটি পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। বহু মানুষকে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাতে হচ্ছে, বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির সঙ্কট। ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে এখনো মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
ইটালি সফর সংক্ষিপ্ত করে দ্রুত দেশে ফিরে এসে প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেরা উদ্ধারকাজে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন, সবকিছু আবার নতুন করে গড়ে তোলা যাবে, কিন্ত প্রাণহানির ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব নয়। ভয়াবহ সেই ভূমিকম্পের পরপরই একুয়েডর সরকার দেশের ছয়টি প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করে। উদ্ধারকাজে নামানো হয় পুলিশ ও সেনা সদস্যদের।
শনিবারের ওই ভূমিকম্পের পর থেকে পেদারনালেস এলাকায় দেড়শ’র বেশি পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। স্বজন হারানোর বেদনার পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে কাজ করছে আতঙ্ক। এরমধ্যে গত রোববার সন্ধ্যায় বৃষ্টি নামলে তাদের ভোগান্তি বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ১৬ মাস বয়সী যমজ শিশুর মা আনা ফারিয়াস (২৩) বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা ভাগ্যবান, আমরা তখন রাস্তায় ছিলাম। আমার পুরো বাড়ি ধসে পড়েছে। রাত আামদের বাইরেই কাটাতে হচ্ছে।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান মিল্টন জারাত বলেন, পেদারনালেসের ৬০ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। যথাসাধ্য করার চেষ্টা করা হলেও আসলে খুব বেশি কিছু করার সামর্থ্য নগর কর্তৃপক্ষের নেই।
পানি, খাবার আর কম্বলের অভাবের মধ্যে লুটপাট শুরুর খবরও পাওয়া গেছে বলে শহরের মেয়র গাব্রিয়েল আলশিভার বিবিসিকে জানিয়েছেন। দুর্গত এলাকায় ইতোমধ্যে জরুরি ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে শুরু করেছে। খাবার ও জরুরি সামগ্রীর প্রথম চালানগুলো এসেছে প্রতিবেশী দেশ ভেনেজুয়েলা ও মেক্সিকো থেকে।
প্রশান্ত মহাসাগরে ‘রিং অব ফায়ার’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় একুয়েডরের অবস্থান। ১৯৭৯ সালের পর সেখানে এটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পের ঘটনা। বিবিসি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন