শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সরকারের সমালোচনা করা মানেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা নয় -ভারতের আইন কমিশন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৮, ৮:৩০ পিএম | আপডেট : ১২:১৯ এএম, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

কেউ সরকারি নীতি নিয়ে সমালোচনামূলক ভাবনা প্রকাশ করলেই তাকে দেশদ্রোহিতার দায়ে অভিযুক্ত করা যায় না বলে মত দিয়েছে ভারতের আইন কমিশন। দেশটির অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি এস চৌহানের নেতৃত্বে আইন কমিশনের এক প্যানেল গবেষণাপত্র নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেছে, যেখানে সশস্ত্র এবং বেআইনি পদ্ধতিতে সরকারকে উৎখাত করার উদ্দেশ্য রয়েছে, কেবলমাত্র সেই ক্ষেত্রেই কঠোর দেশদ্রোহী আইন বলবৎ করা উচিত। গতকাল শুক্রবার খবরটিকে প্রথম পাতার শিরোনাম করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

মতপ্রকাশ ও বক্তব্যের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে প্যানেল বলেছে, ‘গণতন্ত্রে সবাই এক কথা বলাটা দেশপ্রেমের নিদর্শন হতে পারে না। দেশের প্রতি ভালোবাসা ব্যক্ত করার জন্য সকলেরই নিজস্ব পথ অবলম্বনের স্বাধীনতা রয়েছে। এবং সেই লক্ষ্যেই কেউ গঠনম‚লক সমালোচনা করতে পারেন। সরকারি নীতির ফাঁকফোকরগুলোকে চিহ্নিত করতে পারেন। তা করতে গিয়ে তাদের বক্তব্য কঠোর হতে পারে, যা কারো কারো কাছে অস্বস্তি বলে মনে হতে পারে। কিন্তু সে কারণে তাদের দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া ঠিক নয়। ১২৪ এ ধারা কেবলমাত্র সেখানেই প্রযোজ্য, যেখানে সরকারকে বেআইনি ও হিং¯্র উপায়ে উৎখাত করাই লক্ষ্য।’
মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ করতে গিয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে ফেললেও তাকে দেশদ্রোহী তকমা দেওয়া চলে না বলে মনে করছে প্যানেল। প্যানেল বলছে, ‘কোনও সরকারের তৎকালীন নীতির সঙ্গে দ্বিমতের পরিপ্রেক্ষিতে কেউ যদি কোনও মত ব্যক্ত করেন তাহলে তাকে দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা যায় না।’ এ ব্যাপারে উদাহরণ দিয়ে কমিশন বলেছে, গাত্রবর্ণকে সৌন্দর্যের প্রতীক ধরে নেওয়ার ব্যাপারে কেউ যদি ভারতকে ‘জাতিবিদ্বেষী’ বলেন, বা কেউ যদি বলেন, ‘এ দেশ নারীদের জন্য নয়’, তাহলে তা দেশের পক্ষে ‘বিপজ্জনক’ নয়। দেশকে বা দেশের কোনও একটি বিষয়কে খর্ব করে দেখানো হলেই তাকে দেশদ্রোহিতা বলে চিহ্নিত করা যেতে পারে না, তেমনটা উচিতও নয়।’
প্যানেলের বক্তব্য, দেশ যদি গঠনমূলক সমালোচনা গ্রহণ করতে না পারে, তাহলে স্বাধীনতা-প‚র্ব ও স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের মধ্যে প্রায় কোনও ফারাকই থাকে না। নিজের ইতিহাসকে সমালোচনা করার অধিকার এবং অন্যকে বিক্ষুব্ধ করার অধিকার, এ দুইই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে। আইন কমিশনের ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘এ ব্যাপারে সরকার, বেসরকারি সংস্থা, আইন বিশেষজ্ঞ, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, ছাত্র-ছাত্রী এবং সর্বোপরি সাধারণ নাগরিকদের নিয়ে সুস্থধারার বিতর্ক চালানো উচিত, যাতে জনমুখী একটি সংশোধনী বেরিয়ে আসতে পারে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
সুব্রত সেন ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ৩:৫৫ পিএম says : 0
এই ধরনের আইন জারি মানে দেশের গনতনএ কে গলাটিপে হত্যা করার সামিল.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন