শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

তুষার কাটছে, জেগে উঠছে মার্কিন জনজীবন

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ভয়াবহ তুষারঝড়ের বিপর্যস্ততা কাটিয়ে ৩১ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে নিউ ইয়র্ক, ওয়াশিংটনসহ যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের জনজীবন। দুই দিনের তুষারপাত বন্ধ হয়েছে গত শনিবার রাতে। গত রোববার রোদেলা ভোরে ঘর থেকে বেরিয়ে বাড়ির সামনে এবং গাড়ির উপর থেকে ২৬ থেকে ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত বরফ সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিউ ইয়র্কের বাসিন্দারা। আগেরদিন দুপুরে শহরে যান চলাচলের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল সকালে তা প্রত্যাহার হয়েছে। তবে ওয়াশিংটন ডিসিতে এখনও মেট্রো চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই অঞ্চলে বিমান চলাচল এখনও ব্যাহত হচ্ছে।
পূর্ব উপকূলের অন্তত পাঁচটি স্টেটে তিন ফুট বা তার চেয়ে বেশি তুষারপাত হয়েছে। তুষার সরাতে গিয়ে কমপক্ষে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের পাঁচজনই নিউ ইয়র্কের বলে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে। এর বাইরে তুষারঝড়ের কারণে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন ঘটনায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঝড়ের কবলে পড়ে ২০টি রাজ্যের সাড়ে আট কোটি মানুষ। ১১টি রাজ্যে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। বিভিন্ন রাজ্যের দুই লাখ মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। তুষারঝড়ের কারণে এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সাত হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। তুষারপাতের অবসান হলেও গতকাল সোমবারের অন্তত ৬১৫টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। সবচেয়ে বেশি তুষারপাত রেকর্ড করা হয়েছে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার শেফার্ডসটাউনে, ৪০ দশমিক ৫ ইঞ্চি। ২৪ ঘণ্টায় নিউ ইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে ৩০ দশমিক ৫ ইঞ্চি এবং সেন্ট্রাল পার্কে ২৬ দশমিক ৮ ইঞ্চি তুষারপাত হয়েছে। ১৮৬৯ সালের পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তুষারপাত।
এর আগে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেন্ট্রাল পার্কে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বেশি ২৬ দশমিক ৯ ইঞ্চি তুষারপাত রেকর্ড করা হয়। তবে এক দিন হিসেবে গত শনিবার ওই পার্কে রেকর্ড ২৬ দশমিক ৬ ইঞ্চি তুষারপাত হয়েছে। তুষারপাতের কারণে ৮০ লাখ অধিবাসীর এই শহর গত শনিবার দিনভর দৃশ্যত ভূতুড়ে মনে হয়েছে। এদিন নিউ ইয়র্কের রাস্তা-ঘাট ছিল জনমানবশূন্য। গত শনিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত রেস্তোরাঁগুলোতে কর্মচারী ছাড়া কাউকে দেখিনি। মুদি দোকানে তালা ঝুলেছে দিনভর।
এরমধ্যেও তুষারপাত উপভোগ করতে অনেকে রাস্তা ও পার্কে বেরিয়েছেন, গত শনিবার রাতে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে তুষার-বল নিয়ে খেলা করেছেন একদল লোক। তুষার সরাতে নিউ ইয়র্ক সিটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতাধিক গাড়ি রাস্তায় নামানো হয়েছে। সড়ক ও মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী করার পরই আবাসিক এলাকার রাস্তা পরিষ্কার করবে এসব গাড়ি।
তুষারঝড়ের কারণে নিউ ইয়র্কের পাশাপাশি টেনেসি, জর্জিয়া, কেন্টাকি, নর্থ ক্যারোলাইনা, নিউ জার্সি, ভার্জিনিয়া, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, ম্যারিল্যান্ড, পেনসিলভেনিয়া ও ওয়াশিংটন ডিসিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি ও নিউ ইয়র্ক সবচেয়ে বেশি দুর্যোগে পড়ে। ফিলাডেলফিয়া সিটি এবং আশপাশের এলাকাও তুষারে ঢেকে গেছে। আটলান্টিক সিটিতে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে বাংলাদেশিদের ঘর-বাড়িও। একদিকে বরফ আরেকদিকে বরফের শীতল পানির মধ্যে লোকজনের হাঁটাচলাও বন্ধ হয়ে গেছে বলে সেখানকার কয়েকজন বাসিন্দা সকালে জানিয়েছেন। কেন্টাকি, পেনসিলভেনিয়া ও ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় মহাসড়ক তুষারে ঢেকে থাকায় চালকদের কয়েক ঘণ্টা করে আটকে থাকতে হয়। রয়টার্স, বিবিসি, ওয়েবসাইট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন