আসাম সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি এফিডেভিট দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়াদের দাবি এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির আগে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) পুনর্যাচাইয়ের জন্য আদেশ চেয়ে ওই এফিডেভিট করা হচ্ছে। অনেক অবৈধ অভিবাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেছে – এ ধরণের উদ্বেগের কারণে এই আবেদন করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকার আরও জানিয়েছে যে যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তাদের বিস্তারিত তথ্য তাদের কাছে নেই। তালিকায় ২.৮৯ কোটি মানুষ জায়গা পেয়েছে আর বাদ পড়েছে ৪০,০৭,৭০৭ জন।
এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির আগে এই এফিডেভিটে এনআরসি কর্তৃপক্ষের জন্য সুয়োমোটো আদেশ জারিরও আবেদন করা হবে যাতে রাজ্যের ‘মূল আদিবাসী’ এবং অন্যান্য রাজ্য থেকে আগতদের মধ্যে যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তারা কোন ধরণের হয়রানি ছাড়াই তালিকাভুক্ত হতে পারেন।
স্বরাষ্ট্র ও রাজনৈতিক বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এলএস চাংসান বলেছেন, “যাদের বাদ পড়ার কথা, তাদের অনেকে মনে হচ্ছে তালিকায় এসে গেছে। আমরা আদালতকে বলবো যাতে বাদ পড়াদের দাবি ও শুনানির প্রক্রিয়া শুরুর আগে তালিকা পুনরায় যাচাইয়ের আদেশ দেয়া হয়।”
জেলাভিত্তিক বিস্তারিত তথ্য যাচাইয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল প্রত্যেক জেলার অন্তত ১০% তালিকাভুক্ত ব্যক্তির পরিচয় পুনরায় যাচাই করা প্রয়োজন। এনআরসির রাজ্য সমন্বয়ক প্রতিক হাজেলাকে আদালত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই পুনর্যাচাইয়ের রিপোর্ট জমা দিতে বলে। আদালত বাদ পড়াদের দাবি ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরও (এসওপি) ঠিক করে দেবে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, আদালতে হাজেলার সাম্প্রতিক উপস্থাপিত রিপোর্টের কারণে রাজ্য সরকার পুরোপুরি বিব্রত অবস্থার মধ্যে পড়ে গেছে। তিনি দাবি করেছেন যে, ১৫টির মধ্যে মাত্র ১০টি ডকুমেন্ট নতুন করে দাখিল করা যাবে।
চাংসান উল্লেখ করেছেন যে, রাজ্য সরকার ও এনআরসি সেক্রেটারিয়েটের সাথে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় সরকারের যে প্রস্তাবিত এসওপি নীতিমালা তৈরি করেছে, সেখানে পুণরায় তালিকাভুক্তির দাবির জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টই আবার জমা দিতে হবে। চাংসান বলেন, “যারা বাদ পড়েছেন তারা যাতে ১৫টি ডকুমেন্টের সবগুলিই নতুন করে জমা দেন, সেই আদেশ দিতে আদালতের কাছে আবেদন জানাবো আমরা।”
রাজ্য সরকার আদালতের কাছে আরও আবেদন জানাবে, যাতে তালিকা থেকে বাদ পড়াদের বিস্তারিত তথ্য তাদের কাছে দেয়া হয়। এনআরসি তৈরির প্রক্রিয়াটি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হচ্ছে এবং এর তথ্য রাজ্য সরকারের সাথে বিনিময় করা হবে না।
এদিকে, এনআরসি সেক্রেটারিয়েট এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে, এমন প্রমাণও মিলেছে। বিদেশী ঘোষিত, সন্দেহভাজন ভোটার এবং ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে যাদের মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, তাদের একটা ডাটাবেজ তৈরি করতে চায় রাজ্য সরকার। সূত্র: এনডিটিভি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন